--মোঃ আল আমিন
ট্রমা বলতে শরীরে সৃষ্ট কোনো আঘাত ও মানসিকভাবে বিপর্যয় অবস্থাকে বোঝায়। সড়ক দুর্ঘটনা, আগুন লাগা, পুড়ে যাওয়া, গাছ বা উঁচু ভবন থেকে পড়ে আঘাত পাওয়া, এসব নানাবিধ কারণে ট্রমা ইনজুরি হতে পারে। সাম্প্রতিককালে ট্রমা ইনজুরির সবচেয়ে বড় কারণ হলো - সড়ক দুর্ঘটনা।
সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের এখন নিত্যদিনের সঙ্গী। বলতে গেলে "মাছে ভাতে বাঙালি"র মতো হতে চলেছে। এমন কোনো দিন নেই যে, পত্রিকার পাতায় চোখ বুলালে সড়ক দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায় না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় ১২ লাখ মানুষ দুর্ঘটনায় নিহত হয় এবং আহত হয় ৫ কোটির বেশি। আহতদের অধিকাংশেদেরকেই পঙ্গুত্ব বরণ করতে হচ্ছে।
দেশে ট্রমা ইনজুরিতে মৃত্যুর প্রধান কারণ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। আর মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাগুলো মূলত ঘটে বেপরোয়া গতি, ওভারটেকিংয়ের চেষ্টা, বারবার লেন পরিবর্তন, ট্রাফিক আইন না মানা ও চলন্ত অবস্থায় মোবাইল ফোনে কথা বলার কারণে। হেলমেট ব্যবহার না করা ও নিম্নমানের হেলমেটের কারণে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। মোটরবাইক দুর্ঘটনার সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ৫০ দশমিক ৪৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এতে মৃত্যু ৫১ দশমিক ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের তথ্য বলছে, দেশে নিবন্ধিত মোটরসাইকেলের সংখ্যা ৩১ লাখের বেশি, যা মোট যানবাহনের ৬৮ শতাংশ। শুধু ঢাকাতেই নিবন্ধিত মোটরসাইকেল ৮ লাখের মতো। এর বাইরে একটি বড় অংশের মোটরসাইকেল রয়েছে অনিবন্ধিত।
দুর্ঘটনা কমাতে গাড়ি চালানোর সময় সতর্কতা চিহ্ন এবং ট্রাফিক সিগন্যালের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। মোটর সাইকেল চালানোর সময় হেলমেট ব্যবহার করতে হবে। রাস্তায় চলাকালীন মোবাইল ফোন ব্যবহার বন্ধ রাখতে হবে। উচ্চস্বরে গান বাজানোকে না বলতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে, যেহেতু ট্রমা ইনজুরিতে মৃত্যুর বড় একটা অংশ সড়ক দুর্ঘটনা থেকে সেহেতু সতর্কতা অবলম্বন করলেই সড়ক দুর্ঘটনা কমে আসবে এবং ট্রমা ইনজুরিতে মৃত্যুর সংখ্যা কমে যাবে।
লেখক:শিক্ষার্থী,ঢাকা কলেজ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০