অধ্যাপক শামসুল হুদা লিটনঃ
আধুনিক যুগে বিদ্যুতের আলো কুপির বাতিকে যেনো অপ্রয়োজনীয় করে তুলেছে। গ্রামবাংলার এক সময়ের ঐতিহ্য কুপি বাতি আজ কালের গর্ভে বিলীনের পথে। এই কুপি বাতি এখন আর তেমন একটা দেখাই যায়না। কুপিবাতি এখন শুধুই অতীত স্মৃতি। অতীত ইতিহাস। কালের বিবর্তনে কুপি বাতির স্থান দখল করে নিয়েছে বৈদ্যুতিক বাল্ব, চার্জার ল্যাম্প, চার্জার লাইটসহ আরও অনেক কিছুই।
আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে আবহমান গ্রামবাংলার কুপি বাতি যেন হারিয়ে যাচ্ছে। এক সময় গ্রামবাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে এই কুপি বাতির আলো অন্ধকার দূরীকরণের প্রধান অবলম্বন ছিলো।
অমাবস্যা কিংবা অন্ধকার রাতে মিটি মিটি আলো জ্বালিয়ে গ্রামের মানুষের পথ চলতো। এমন একটা সময় ছিল যখন গ্রামবাংলার মানুষের অন্ধাকারে একমাত্র আলোক বর্তিকার কাজ করতো এই কুপি বাতি। কুপি বাতিগুলো ছিল বিভিন্ন ডিজাইনের ও বাহারি রঙের। এই কুপিগুলো তৈরি হত কাঁচ, মাটি, লোহা আর পিতল দিয়ে।
মানুষ সামর্থ্য অনুযায়ী কুপি কিনে ব্যবহার করতেন। বাজারে সাধারণত দুই ধরনের কুপি পাওয়া যেত বড় ও ছোট। বেশি আলোর প্রয়োজনে কুপি বাতিগুলো কাঠ এবং মাটির তৈরি গছা অথবা স্ট্যান্ডের উপর রাখা হতো। এই গাছা অথবা স্ট্যান্ডগুলো ছিল বাহারি ডিজাইনের। কিন্তু বর্তমানে গ্রামে বিদ্যুতের ছোঁয়ায় কুপি বাতির কদর যেন হারিয়ে গেছে। বিদ্যুৎ না থাকলেও গ্রামবাংলার মানুষ ব্যবহার করছেন সৌর বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন রকমের চার্জার। রূপসী-গ্রামবাংলা আপামর মানুষের কাছে কুপি বাতির কদর কমে গেলেও আবার কেউ কেউ এই কুপি বাতির স্মৃতি এখনো সখ করে আঁকড়ে ধরে আছেন। গ্রামের অনেককেই আবার সৌখিন হিসেবেও কুপি বাতি ব্যবহার করতে দেখা যায়।
এছাড়া অনেকেই আবার স্বযত্নে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের নিদর্শন স্বরূপ কুপি বাতি সংরক্ষণ করে রেখেছেন। কুপি বাতির ব্যবহার ও কদর যে হারে লোপ পাচ্ছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে এটি শুধুই স্মৃতি হয়ে থাকবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০