আত্মসমালোচনা ও Inferiority Complex
লেখা : সেঁজুতি মুমু
আত্মসমালোচনা আর inferiority complex কে একই ভাবা কি আদৌ যৌক্তিক ?? যে ব্যক্তিরা আত্মসমালোচনা করতে জানে তারা কখনই inferiority complex এ ভোগে না। আত্মসমালোচনাকারী ব্যক্তি প্রতিদিন না হলেও অবসরের সময় নিজের দোষত্রুটি গুলো নিয়ে ভাবে এবং নিজের কাছে নিজের ত্রুটি স্বীকার করে সংশোধনের পথ খুঁজে বের করে এবং নিজের ত্রুটিসমুহ সংশোধনে সদা প্রস্তুত থাকে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের চোখের দিকে তাকিয়ে নিজের ত্রুটি স্বীকার করতে পারাটাও অনেক বড় সাহসের কাজ। যা সবাই পারে না। তবে আত্মসমালোচনাকারী ব্যক্তিদের বেশিরভাগই নিজের অন্তরাত্মার কাছে নিজের ত্রুটি স্বীকার করার ক্ষমতা রাখে। অন্যদিকে inferiority complex এ ভোগা মানুষগুলো নিজেদের কিছু অবাস্তব ত্রুটি খুঁজে বের করে সবসময় হীনমন্যতায় ভোগে। আত্মসমালোচনাকারী ব্যক্তিরা ঠিকই নিজেদের দুর্বলতা অবগত হয়ে তা নিয়ে খামকা দু:খ না করে নিজেকে সুধরানোর এবং যোগ্য করে তোলার কাজে নিয়োজিত হন। অন্যদিকে inferiority complex এ ভোগা মানুষগুলো নিজেদের ত্রুটি জানতে পেরে নিজেকে দোষ দিতে দিতে আত্মঅত্যাচার করতে করতে নিজের আত্মবিশ্বাসকে এতটা নিচে নামিয়ে ফেলে যে তারা আসলে যা কোনো মানুষ কখনোই হতে পারে না নিজেকে সেই নিম্ন পর্যায়ের ভাবে এবং সবসময় হীনমন্যতায় ভোগে। সব মানুষ সব করতে পারে না এটা স্বাভাবিক। কিন্তু প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই এমন কিছুগুন আছে যা তাকে অন্যের থেকে আলাদা করে। ও পড়াশুনায় ভালো, ও খেলাধুলায় ভালো ও অমুকে ভালো এসব ভেবে নিজেকে কষ্ট না দিয়ে আমাদের খুঁজে বের করা উচিত আমরা কিসে ভালো? বা আমরা কি করতে চাই সেজন্য কি যোগ্যতা দরকার? আর মানুষের ইচ্ছাশক্তি এতোটাই শক্তিশালী যে মানুষ যদি অদম্যভাবে নিজের লক্ষ্যে এগিয়ে যায় সে তার লক্ষ্যে পৌঁছাবেই। তাকে আটকানোর সাধ্য কারো নেই। কিন্তু তাই বলে আমি শারুখখান হবো আমি নিউটন হবো এসব অবাস্তব কিছু স্বপ্ন দেখার মানে হয় না। আর যদি তুমি মনে কর যে তুমি তা হতে পারবে। তবে চেষ্টা চালিয়ে যাও। দুদিন চেষ্টা করে তৃতীয় দিন আফসোস করবা এটা তো হবে না। জীবন ও সময় গতিশীল তা কারো জন্য থেমে থাকে না। তাই আমাদের উচিত বৃ*থা নিজেকে দোষারো*প করে সময় নষ্ট না করে নিজের ত্রু*টিগুলো চিহ্নিত করে তা সংশোধনে ব্রতী হওয়া। এখানেই পার্থক্য আত্মসমালোচনাকারী আর inferiority complex ভোগা মানুষদের মধ্যে। তবে হ্যাঁ অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো না। আমি যদি আত্মসমালোচনার নাম করে সারাদিন নিজের ত্রুটি বের করতে থাকি আর তা সংশোধনের পরিকল্পনা করি কিন্তু তা বাস্তবায়নের সময় আর আমাকে খুঁজে পাওয়া যায় না তাহলে সেটা একসময় আমাকে inferiority complex এর জালে জড়িয়ে ফেলবে। এর থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় হলো নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করা আর কাজে মনোনিবেশ করা। অলস মানুষের মস্তিষ্ক শয়তানের আস্থানা। তাই এখন থেকে এই মুহুর্তে নিজের লক্ষ্য স্থির করুন আর তা সফল করতে উদ্যোগী হন তবেই inferiority complex এর জাল ছিন্ন করা যাবে!!