ঢাকাবুধবার , ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  1. সর্বশেষ

অন্ধকার থেকে আলোয়: তীব্র বিষন্নতা ও পুনরুদ্ধারের পথ

প্রতিবেদক
জুবায়েদ মোস্তফা
১০ অক্টোবর ২০২৪, ৩:১০ অপরাহ্ণ

Link Copied!

কতবার আপনি নিজেকে একা অনুভব করেছেন, যখন মনে হয়েছে কেউই বুঝতে পারছে না আপনার অনুভূতিগুলোকে? অথচ আপনি কোনোভাবেই বোঝাতে পারছেন না আপনার ভিতরের জমে থাকা কষ্টকে।হ্যা, শারীরিক সমস্যা থেকেও মানসিক সমস্যা কিছু ক্ষেত্রে তীব্র ভয়াবহ ও বেদনাদায়ক হয়,আর এই বেদনার সর্বশেষ পর্যায়ে আত্মহত্যা নামের কালো অধ্যায় চলে আসে।তীব্র বিষণ্ণতা শুধু একটি মানসিক রোগ নয়, এটি এক গভীর সংকট, যা প্রতিদিন হাজারো মানুষের জীবনকে ধ্বংস করে চলেছে। কিন্তু আমরা কি যথেষ্ট মনোযোগ দিচ্ছি?”
আলবার্ট কামুর মতে, ‘যেখানে মানুষ বেঁচে থাকে, সেখানে সবসময়ই জীবনের আলো আছে।’ কিন্তু তীব্র বিষণ্ণতার শিকার হওয়া মানুষের জন্য সেই আলো ধীরে ধীরে নিভে যায়, এবং তাদের জীবন শুধুই অন্ধকারের পথে গিয়ে মিশে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতি বছর লক্ষাধিক মানুষ তীব্র বিষণ্ণতার কারণে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন, অথচ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটি অবহেলিত থেকে যায়। মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর এই নীরব মহামারি আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনকে প্রতিনিয়ত বিপর্যস্ত করছে।এই বিপর্যস্ততা উত্তরণের জন্য প্রয়োজন একান্তই নিজের সচেতনতার।

তীব্র বিষন্নতাকে মেডিকেলের ভাষায় মেজর ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডার বলা হয়। যা একটি মানসিক স্বাস্থ্যগত রোগ যা ব্যক্তির অনুভূতি, চিন্তা ও আচরণকে প্রভাবিত করে। এটি দীর্ঘস্থায়ী মনোভাবের অবনতি ঘটায় এবং ব্যক্তি সবসময়ই গভীর বিষণ্ণতা, ক্লান্তি এবং হতাশার মধ্যে ডুবে থাকে।

তীব্র বিষন্নতার বিভিন্ন লক্ষণ আছে যেমন:
কমপক্ষে দুই সপ্তাহের অধিক সময় তীব্র মন খারাপ,
আনন্দহীনতা,ওজন পরিবর্তন যাওয়া, ক্ষুধার পরিবর্তন, অনিদ্রা বা অতিরিক্ত ঘুমানো,
শক্তিহীনতা,নিজের মূল্যহীন মনে হওয়া,আত্মহত্যার চিন্তা বা চেষ্টা।

তীব্র বিষন্নতার কারন :
পারিবারিক ইতিহাস থাকলে ডিপ্রেশনের ঝুঁকি বেশি হতে পারে,মস্তিষ্কের রাসায়নিক ভারসাম্যহীনতা, মস্তিষ্কে সেরোটোনিন, ডোপামিন এবং নরএপিনেফ্রিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটারের মাত্রা কমে গেলে বিষণ্ণতা তৈরি হতে পারে,মানসিক ট্রমা
গর্ভাবস্থা, প্রসবকালীন সময় বা মেনোপজের কারণে হরমোনের পরিবর্তন ডিপ্রেশন ঘটাতে পারে,
দীর্ঘমেয়াদী মানসিক চাপ, যেমন আর্থিক সমস্যায় থাকা বা কর্মক্ষেত্রের অতিরিক্ত চাপ।

প্রতিকার:
যখন বিষন্নতার তীব্র পর্যায় চলে, তখন অবশ্যই একজন সাইকোলজিস্ট বা সাইক্রিয়াটিস্ট এর পরামর্শ নেওয়া উচিত। সাইক্রিয়াটিস্ট হলেন মনোচিকিৎসক, যিনি ওষুধের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন। আর সাইকোলজিস্ট হলেন মনোবিজ্ঞানী, যিনি কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে রোগীর সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন।

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা:
মানসিক চাপ কমাতে শখের কাজ করা, নিজের যত্ন নেওয়া, বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো।
নিজেকে মূল্য দেওয়া এবং মেডিটেশন এর মাধ্যমে ইতিবাচক চিন্তা করতে চেষ্টা করা।পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপের মাধ্যমে স্বাস্থ্য বজায় রাখা।
মেজর ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডার একটি গুরুতর মানসিক রোগ, তবে সঠিক চিকিৎসা ও সমর্থনের মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য এবং অনেক ক্ষেত্রেই নিরাময়যোগ্য।

সর্বোপরি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরতে চাই,মানসিক যেকোনো সমস্যা সেটা মেজর ডিপ্রেশন,ওসিডি, সিজোফ্রেনিয়া যেটাই হোক এগুলো হলে আমাদের সমাজ,ঐ নির্দিষ্ট মানুষ কে নিচু চোখে দেখেন এবং অনেকে সাইক্রিয়াটিস্ট বা সাইকোলজিস্ট এর কাছে শরনাপন্ন হতেও চান না। আমাদের উচিত শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার মতো, মানসিক সমস্যা গুলো কেও আমলে নিয়ে প্রতিকার এবং প্রতিরোধের চেষ্টা করা। কারন সুস্থতা বলতে শুধু শারীরিক নয়, মানসিক স্বাস্থ্য কেও বোঝায়।

জয় পাল অর্ঘ
ফার্মেসি বিভাগ,
বশেমুরবিপ্রবি।

366 Views

আরও পড়ুন

সমাজসেবা অধিদপ্তরের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নে শান্তিগঞ্জে সেমিনার

শান্তিগঞ্জে জনসচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ 

স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও দেশ অর্থনৈতিক শোষণ, রাজনৈতিক নিপীড়ন ও সাংস্কৃতিক গোলামী থেকে মুক্ত হতে পারেনি–অধ্যাপক মুজিব

কক্সবাজার জেলা জামায়াতের মতবিনিময় সভায় নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান 

চট্টগ্রামে জামায়াত নেতার পায়ের রগ কেটে হাত ভেঙে দিয়েছে চাঁদাবাজরা

ডিবি পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে বরিশাল মহানগর ছাত্রদল সহ-সভাপতি রাসেল আকন আটক

শান্তিগঞ্জে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা-শিক্ষক দিয়ে পিআইসি কমিটি গঠনের অভিযোগ 

সংবর্ধিত হলেন সেরা কনটেন্ট নির্মাতা শিক্ষক ফারুক ইসলাম

নাগেশ্বরীতে কেন্দ্রীয় ড্যাব নেতার ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত

বুটেক্সে নতুন বিভাগ চালু- সোশ্যাল মিডিয়ায় শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ প্রকাশ

এক বাসের পেছনে আরেক বাসের ধাক্কা পটিয়ায় বৃদ্ধ নিহত

দোয়ারাবাজারে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় শিশু নিহত