রাজীব হোসেন :
চারদিকে যখন মৃত্যুর মিছিল সেখানে মানসিক শক্তি যোগানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পদক্ষেপ অনলাইন ক্লাস কতটুকু যৌক্তিক হবে?
বিশেষ করে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই গ্রামে বসবাস করেন। পৃথিবীর এই সংকটময় মুহূর্তে যাদের পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় তাদের জন্য এই অনলাইন ক্লাস কতটা চ্যালেঞ্জ হতে পারে?
জীবনঘাতি করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে পৃথিবী থমকে গেছে। কিছুদিন পূর্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, সুচিন্তিত শিক্ষকমন্ডলী দরিদ্র, মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের পাশে ছায়ার মতো দাঁড়িয়েছেন।
এখন, যেখানে দিনমজুর পরিবারের তিন বেলা আহার যোগাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে সেখানে অনলাইন ক্লাস তাদের জন্য অনেকটাই বিলাসিতার ন্যায়।
অনলাইন ক্লাসে কতিপয় স্বচ্ছল এবং দরিদ্র মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য যে বিষয়গুলে হুমকি বা হতাশার কারণ হতে পারেঃ
(১) সম্মানিত শিক্ষক মণ্ডলীর পছন্দসই হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার,ক্লাউড ভিডিও মিটিং এ যুক্ত হওয়ার জন্য প্রয়োজন মেগাবাইট। দরিদ্র বা আর্থিক অস্বচ্ছলতাদের জন্য যেটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
(২) বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী গ্রামে বসবাস করায় অনেকের স্মার্টফোন থাকলেও নেট স্পিড স্লো হওয়ার কারণে সময় মতো যুক্ত হওয়াটা অনেকটাই অসম্ভব হবে।
(৩) কতিপয় স্বচ্ছল শিক্ষার্থী এখানে মানসিক তৃপ্তি বা অ্যাকাডেমিক ভাবে লাভবান হলেও এটেনডেন্স যদি বাধ্যতামূলক করা হয় অনলাইন সক্রিয় থাকা অবস্থায় তাহলে অস্বচ্ছলতাদের পাশাপাশি কতিপয় স্বচ্ছলরাও মানসিকচাপে পড়ার সম্ভবনা রয়েছে।
এছাড়া প্রত্যেক ক্লাস পরবর্তীতে ডাউনলোডের অপশন না থাকলে দুই শ্রেণির জন্যই হতাশার কারন হতে পারে।
আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের বিনয়ের সাথে বলতে চাই, এই খারাপ সময়ে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার উদ্যোগটা অবশ্যই প্রশংসাযোগ্য। এটা সকল শিক্ষার্থীদের জন্য যেন আশা বা মানসিক শক্তি যোগায়। কতিপয় শিক্ষার্থী ছাড়া যেন অন্যদের নিরুৎসাহিত হওয়ার কারণ না হয় এই অনলাইন ক্লাস। আমি আশাবাদী শ্রদ্ধেয় শিক্ষকমন্ডলী বিষয়টা নিয়ে ভাববেন।
লেখার মধ্যে ভুল থাকতেই পারে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। সুস্থ হোক বাংলাদেশ, সুস্থ হোক পৃথিবী। ফিরে আসুক ছন্দমুখর জীবন।
প্রার্থনা করি মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট।
————–
মোঃ রাজিব হোসেন
দর্শন বিভাগ(শিক্ষার্থী)
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।