সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার (জেইউসি’র) হেলালী- মাহবুব – জাফর প্যানেল অনুমোদন দিয়েছে গত ১৩ ও ১৪ জুন কক্সবাজারের বহুল আলোচিত সাংবাদিক ইউনিয়ন (জেইউসি)র জামাত ও বিএনপি সমর্থিত দুপক্ষের আলাদা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৩ জুন জামাত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলেও ১৪ জুন বিএনপি সরাসরি ভোটে অংশগ্রহণ করে হেলালি -মাহবুব- জাফর পরিষদ নির্বাচিত হয়।
তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বী এই দু গ্রুপের স্বতন্ত্র নির্বাচনের মাধ্যমে স্বতন্ত্র দুই প্যানেল নজিরবিহীন বিজয়ী ঘোষণা করে সাংবাদিক ইউনিয়ন স্বতন্ত্রভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। নির্বাচনের পর শ্রম অধিদপ্তর দীর্ঘ তদন্তের মাধ্যমে বিএনপি সমর্থিত হেলালি – জাফর – মাহবুব প্যানেল কে বিজয়ী ঘোষণা করে বৈধতা দিয়েছে। বিএনপি সমর্থিত প্যানেলের প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানা যায়, শ্রম অধিদপ্তর দীর্ঘ তদন্তের মাধ্যমে সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার হেলালি – জাফর- মাহবুব প্যানেলকে বৈধ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে জামাত সমর্থিত হাসেম-হুমায়ুন- আনসার প্যানেলকে বাতিল ঘোষণা করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রম দপ্তর।
তথ্যসূত্রে জানা যায়, দু’পক্ষের আবেদন, তথ্য ও প্রমাণপত্র যাচাই-বাছাইয়ের দীর্ঘ তদন্ত কার্যক্রম শেষে ৪ আগস্ট এই লিখিত সিদ্ধান্ত দেয় শ্রম দপ্তর।
এর মধ্য দিয়ে সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার’র দীর্ঘ ৮ মাসের জটিলতা চূড়ান্তভাবে শেষ হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রম দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১৩ জুন নির্বাচন দেখিয়ে মোঃ হাসিম সভাপতি, হুমায়ুন সিকদারকে সহ- সভাপতি ও আনছার হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটি ও নূরুল ইসলাম হেলালীকে সভাপতি, এম আর মাহবুবকে সহ-সভাপতি ও এস এম জাফরকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৪ জুন নির্বাচন উৎসবমুখর নির্বাচন দেখিয়ে আরেক কমিটির অনুমোদন প্রাপ্তির জন্য শ্রম দপ্তরে জমা দেয়া হয়। অস্বাভাবিকভাবে দুটি কমিটি অনুমোদনের আবেদন করায় তদন্তের উদ্যোগ নেয় শ্রম দপ্তর। এর অংশ হিসেবে উভয় কমিটির কাগজপত্র সংগ্রহ ও তদন্ত দল সংশ্লিষ্টদের সরেজমিন সাক্ষ্য গ্রহণ করে।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের পরিচালক মোঃ গিয়াস উদ্দিন জানান, তদন্তে হাসিম-আনছার কমিটির বৈধ কোনো দালিলিক প্রমাণ ও পক্ষে কোনো যৌক্তিক ও সত্য সাক্ষ্য পাওয়া যায়নি। তারা ১৩ জুন যে ভোটগ্রহণ দেখিয়েছে তার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
পক্ষান্তে হেলালী-মাহবুব-জাফর কমিটি নির্বাচনের তফসিল থেকে শুরু করে ভোটগ্রহণ পর্যন্ত সমস্ত দালিলিক প্রমাণ যথাযথ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া তাদের ভোটগ্রহণের সচিত্র ভিডিও ফুটেজও পাওয়া গেছে। তাই হাসিম-আনছার কথিত কমিটিকে অবৈধ ঘোষণা করে হেলালী- মাহবুব-জাফর কমিটিকে বৈধ হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান এস এম আমিনুল হক বলেন, অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বিগত ১৪ জুন জেইউসি’র সদস্যদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। চট্টগ্রাম শ্রম অধিদপ্তরের এই সিদ্ধান্ত সঠিক হয়েছে বলে আমি মনে করি। অপর পক্ষ যেটি করেছে সেটি মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়। তাদের এটি করা উচিত হয়নি।
এদিকে চট্টগ্রাম শ্রম দপ্তর কর্তৃক অনুমোদিত সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজারের কমিটির নেতৃবৃন্দ হলেন- সভাপতি নুরুল ইসলাম হেলালী, সহ-সভাপতি এম আর মাহবুব, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাফর, যুগ্ম সম্পাদক এস এম ছৈয়দ আলম, কোষাধ্যক্ষ ইকরাম চৌধুরী টিপু, সাংগঠনিক সম্পাদক সাহেদ মিজান, প্রচার সম্পাদক এম বেদারুল আলম, নির্বাহী সদস্য শামসুল হক শারেক, জসিম উদ্দিন সিদ্দিকী।