মোঃ আবু সঈদ স্টাফ রিপোর্টারঃ
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার নোয়াখালী বাজার ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে ঐতিহ্যবাহী সিংগাশাহ মাজার সংলগ্ন এলাকায় পূর্ব নির্ধারিত তারিখে মাজারে ওরস মোবারকের পরিবর্তে ওয়াজ ও দোয়া মাহফিল সম্পন্ন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) দুপুর ২ ঘটিকা হইতে পরদিন ফজর পর্যন্ত মাওলানা শায়েখ আব্দুস শহীদ জামলাবাজী ও মাওলানা আজির উদ্দিন এর সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসেবে নসিহত পেশ করেন শায়খুল হাদিস আল্লামা নুরুল ইসলাম খান।
এছাড়া আমন্ত্রিত উলামায়ে কেরাম শায়েখ মাওলানা তাহির আহমেদ,মাওলানা বদরুল আলম,হাফিজ মাওলানা এমদাদুল হক,মাওলানা আল আমিন আহমদী, কারী মুহিবুল হক,
মাওলানা মুহিবুর রহমান রহমানী,মাওলানা আজিজুল হক, মাওলানা আব্দুল হাই দুলন, মুফতি সালমান মাজহারী, মাওলানা সোলাইমান আহমদ হানাফী,মাওলানা জামিল আহমদ আনসারী,মাওলানা লুৎফুর রহমান লুলু, মাওলানা জিল্লুল হক সহ উক্ত ওয়াজ মাহফিলে বিভিন্ন আলেমগণ তাদের নসিহত পেশ করেন। এতে সারারাতব্যাপী মুসল্লিগণ প্রাণ খুলে ওয়াজ শ্রবণ করেন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়,নোয়াখালী বাজার মসজিদ সংলগ্ন স্হানে ঐতিহ্যবাহী একটি মোকাম পীরে কামেল সিংগাশাহ এর রওজা শরীফে প্রতিবছর ১৪ই ফাল্গুন দিবাগত রাতে তার আশেক ভক্তগণ ওরস মাহফিল করেন। গতকাল ১৪ ই ফাল্গুন ছিল সেই নির্ধারিত দিন।
আরো জানা যায়, প্রায় ৩০০ বছর পূর্বে চট্টগ্রাম হইতে বাসর রাতে স্ত্রী ও বড় ভাইয়ের ছেলে মকবুল আলীকে নিয়ে রাতের আধাঁরে ঘর হইতে বের হয়ে সিলেটে আসেন সিংগা শাহ। সেখান থেকে এখানে এসে নদীর পাড়ে জঙ্গলের মধ্যে তাবু টাঙ্গিয়ে জীবন যাপন করতে শুরু করেন। দীর্ঘ ১২ বছর বিনা টাকায় সুরমা নদীতে নোয়াখালী টু জামলাবাজ ফেরি পারাপারের কাজ করেন তিনি। দীর্ঘ সময় পর তিনি এখানে বসতি স্থাপন করেন। তাহার কোন সন্তানাদি ছিল না। চট্টগ্রাম হইতে সাথে নিয়ে আসা ভাতিজা মকবুল আলী শাহকে উত্তরসূরী রেখে তিনি পরলোক গমন করলে মকবুল আলী শাহ চাচার উত্তরসূরী হিসেবে উক্ত স্থানে চাচার আদিপত্যকে ধরে রাখতে একটি মাজার তৈরি করেন এবং এখানে প্রতি বছর মৃত্যু তারিখে ওরস উৎসবের আয়োজন করেন। পরবর্তীতে মকবুল আলী শাহ মৃত্যুবরণ করিলে তাহার পুত্র রমজান আলী শাহ এবং রমজান আলী শাহ মৃত্যুবরণ করার পর তাহার পুত্র হানিফ উল্লাহ স্হলাভিত্তিক হন। পরবর্তীতে হানিফ উল্লাহ মৃত্যুবরণ করিলে তাহার পুত্রদ্বয় হাছন আলী ও আইয়ুব আলী শাহ ধারাবাহিক ভাবে উক্ত অনুষ্ঠান পরিচালনা করে আসছেন ।
সেই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর উক্ত মাজার সংলগ্ন স্থানে বিভিন্ন আশেকান ভক্তবৃন্দের আয়োজনে মেতে উঠে গানের উৎসব। অগণিত ভক্তবৃন্দ, আশেকানদের গান-বাজনা আর আনন্দ উৎসবে মেতে উঠে স্হানটি দীর্ঘ সময়ের ইতিহাসে প্রথমবার এই পরিবর্তন এলো। সেই ওরস মাহফিলের পরিবর্তে তার নির্ধারিত দিনে ওয়াজ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে নোয়াখালী বাজার ও সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী।
গতকাল সরজমিন মাজার ঘুরে দেখা যায় মাজারটিতে কিছু সংখ্যক ভক্তবৃন্দরা তাদের গুরুর আরাধনাায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০