মোসাঃতানজিলা, (নিউজ ভিশন), ঢাকাঃ পড়ন্ত বিকেলে ঘনবসতিপূর্ণ পুরান ঢাকার লালবাগ কেল্লা যেন একটি বিশাল ফুলবাগান। ব্যস্ত জীবনের সবার এক স্বস্তির জায়গা এটি। ফুলে ফুলে সাজানো এই সবুজে ঘেরা লালবাগ কেল্লাটি
আওরঙ্গবাদ ঢাকার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত একটি অসমাপ্ত মুঘল দুর্গ।
এখানে আসলে মনে পড়ে যায় বাংলার সোনালী ইতিহাসের গল্প ও মনোরম ঐতিহ্যের আবেগঘন ছোঁয়া পাওয়া যায়।
এটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ১৬৭৮ সালে, মুঘল সুবেদার মুহাম্মদ আজম শাহ কর্তৃক, যিনি ছিলেন সম্রাট আওরঙ্গজেবের পুত্র এবং পরবর্তীতে নিজেও সম্রাট পদপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। কিন্তু পরে তিনি দিল্লি চলে যান এতে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অতঃপর তার উত্তরসুরি, মুঘল সুবেদার শায়েস্তা খাঁ ১৬৮০ সালে নির্মাণকাজ পুনরায় শুরু করেন, কিন্তু শেষ করতে পারেন নি তা। কারণ মুঘল সুবেদার শায়েস্তা খাঁর কন্যা পরিবিবি মারা যান। এ কারণে তিনি নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন।
আর সেই পরীবিবির সমাধিস্থলই এখানে যুগ যুগ ধরে তার চিহ্ন বহন করে আছে।
এখানে সুন্দর জ্যামিতিক কাঠামোগত ব্যবস্থা আর ছোট ছোট টিলা গুলো যেন মিলেমিশে বাঙালির অপূর্ব সৌন্দর্য চেতনাবোধ জাগ্রত করে।
দুর্গের অভ্যন্তরে স্থাপিত প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে রয়েছে মুঘল আমলের বিভিন্ন নিদর্শন, অস্ত্র, পোশাক, মুদ্রা, শিল্পকর্ম ও ভাস্কর্য । এখানে স্থাপত্য কাঠামোর মধ্যে পরিবিবির সমাধি, মসজিদ ও শায়েস্তা খাঁর দরবার হল উল্লেখযোগ্য। বর্তমান জাদুঘরটি শায়েস্তা খাঁর বাসভবন ও দরবার হলকে পুনঃব্যবহার করে গঠিত হয়েছে।
এই সাজানো পরিচ্ছন্ন পরিবেশে প্রজাপতিরা উড়ে বেড়ায় সারাক্ষণ, উড়ে বেড়ায় ফুলের চারপাশে মো মো করা মৌমাছিরা।আকাশে পাখিদের ছোটাছুটি কেবলি মুগ্ধ করে । বিভিন্ন ফুলে ফুলে ও পাতাবাহারের রঙে রঙিন হয়ে থাকে সারাবছর। বাচ্চারা থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষের ভালো লাগার জায়গা এটি।
এদিকে বেলাশেষে সূর্য টা যখন ঢলে পরে পশ্চিমে, তখন এক অপূর্ব সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করা যায় যেন আমাদের স্বপ্নের শহরকে তা ইঙ্গিত করে।
বর্তমানে এটি দেশীয় জনসাধারণের জন্য জনপ্রতি ৩০ টাকা মূল্যের টিকিট কেটে প্রবেশ করতে হয়। আর বিদেশিদের জন্যে টিকিট মূল্য ১০০ টাকা। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য মূল্য ২০ টাকা করে।
তবে আগে সবার জন্যই এর প্রবেশ মূল্য ছিলো ২০ টাকা। তারও আগে ছিল ১০ টাকা করে। দিন দিন এই মূল্যবৃদ্ধিতে অসন্তুোষ প্রকাশ করছেন নেটিজেনরা। কারণ আশেপাশের সবার এবং দূরে থেকে যারা ঢাকায় আসেন তাদের প্রধান আকর্ষণ থাকে এই লালবাগ কেল্লা। সেই হিসেবে টিকিটের মূল্যবৃদ্ধিটা তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
বিকেল পাঁচটার মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় এটি।
যাওয়ার সময় হয়তো সকলেরই মনে হবে আরেকটু থেকে গেলে ভালো লাগতো। তবে সূর্যের অস্ত যাওয়ার সাথে সাথে সবারই চলে যেতে হয় রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রের এই আঙিনা ছেড়ে।