রফিকুল ইসলাম জসিম >>
যে জাতি নিজের চিকিৎসাকে বিদেশের হাতে ছেড়ে দেয়, সে জাতির স্বাস্থ্যখাত কখনো দাঁড়াতে পারে না। কিন্তু একজন মানুষ যখন আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রেখে নিজের দেশ, নিজের মাটির চিকিৎসকদের ওপর আস্থা রাখেন—সেখানেই সত্যিকারের দেশপ্রেমের পরিচয় ফুটে ওঠে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান—এখন শুধু একটি দলের নেতা নন, বরং স্বদেশপ্রেম ও ঈমানি আস্থার জীবন্ত উদাহরণ। সম্প্রতি জাতীয় সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি দু’বার মঞ্চে পড়ে যান। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরীক্ষায় হৃদ্যন্ত্রে জটিলতা ধরা পড়ে। চিকিৎসকরা বাইপাস সার্জারির পরামর্শ দেন এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানোর পরামর্শও উঠে আসে।
তবে তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন—“আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে আমি দেশের চিকিৎসকদের ওপর ভরসা রাখছি। আমি বাংলাদেশেই চিকিৎসা করাবো, ইনশাআল্লাহ।”
এই একটি বাক্য যেন নতুন করে আশার বাতি জ্বালায়। তিনি দেখিয়ে দিলেন—দেশ মানে শুধু সীমারেখা নয়, দেশ মানে বিশ্বাস, দেশ মানে দায়িত্ব। আল্লাহতায়ালার উপর ভরসা রেখে দেশের মাটিতে থাকা, এখানকার ডাক্তার ও চিকিৎসাব্যবস্থাকে মূল্য দেওয়া—এটাই ঈমানদার নেতার পরিচয়।
যেখানে অনেকেই সামান্য অসুস্থতাতেই বিদেশ পানে ছোটেন, সেখানে তিনি হৃদ্যন্ত্রের মতো স্পর্শকাতর চিকিৎসাও স্বদেশেই গ্রহণ করছেন। তার এ সিদ্ধান্ত যেন এক মুজাহিদের মতো—আল্লাহর কুদরতে বিশ্বাস রেখে দেশের প্রতি অটল নিষ্ঠা।
এটা শুধু সাহস নয়, এটা ঈমানি আস্থা। এটা শুধু আত্মবিশ্বাস নয়, বরং দ্বীনদার এক নেতৃত্বের আলোকবর্তিকা। ডা. শফিকুর রহমান আজ তাঁর আমল, তাঁর নিয়ত এবং তাঁর কর্মের মাধ্যমে প্রমাণ করলেন—আল্লাহর ওপর ভরসা করলে কোনো কিছু অসম্ভব নয়।
আজ আমরা ‘স্বদেশ’ বলি গলায় গলায় পতাকা ঝুলিয়ে, কিন্তু তিনি নিজ শরীরকে রেখে গেলেন স্বদেশপ্রেমের নিঃশব্দ অথচ গম্ভীর ব্যাখ্যা। তাঁর সিদ্ধান্ত আমাদের জন্য দোয়ার অনুরোধও বটে—আল্লাহ যেন তাকে পূর্ণ আরোগ্য দান করেন এবং আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থাকেও হিদায়াত ও বরকতের মাধ্যমে আরও উন্নত করেন।