নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
শালিস বিচারের কথা বলে পৌরসভা কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে এক নারী বিচারপ্রার্থীকে বেধম মারধরের ঘটনায় নারী কাউন্সিলর ফারহানা ইয়াছমিন ফোরকান (৩৮)সহ ২জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৩/৪জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। হামলার শিকার ও ভুক্তভোগি মহিলা হামিদা বেগম বাদী ১৩জুন’২২ ইং রাতে এ মামলাটি (নং ২৫,জিআর ২৯৮/২২) দায়ের করেন।
অভিযোগে জানাগেছে, মামলার ২নং আসামী পারভিন আক্তারের মালিকানাধীন কাহারিয়াঘোনাস্থ বাসায় ভাড়া থাকতেন বাদী হামিদা বেগম। কিন্তু বাড়ি মালিকের পুত্র মোঃ জিদান ভাড়াটিয়া হামিদার ৪বছর বয়সী নাবালিকা মেয়েকে ফুসলিয়ে বাড়িতে ডেকে নিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। এঘটনায় হামিদা বেগম বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় জি.আর মামলা (নং- ৪৫৭/২১ইং) দায়ের করেন। এঘটনায় ধর্ষক জিদানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা দায়ের এর পর ধৃত ধর্ষকের মা পারভিন ক্ষিপ্ত হয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি ধমকি প্রদান করায় বাদী হামিদা ভাড়া বাসা থেকে মালামাল নিয়ে বাসা ত্যাগ করার জন্য চাইলে স্থানীয় মহিলা কাউন্সিলর অভিযুক্ত ফোরকানকে নিয়ে ঘরের মালামাল আটকে দেয়। বাসা ঘরের মালামাল উদ্ধারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এম.আর মামলা নং- ১৬৫/২০২১ইং দায়ের করলে, তার প্রেক্ষিতে মালামাল সমূহ বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য চকরিয়া থানাকে নির্দেশ দেন। পুলিশ মালামাল উদ্ধার করতে গেলে স্থানীয় ৪,৫ ও ৬নং ওয়ার্ড মহিলা কাউন্সিলর ফোরকান মালামাল হস্তান্তর করতে না দিয়ে পৌরসভা কার্যালয়ে নিয়ে যান। পরবর্তীতে মহিলা কাউন্সিলর ফোরকান হামিদার কাছ থেকে ৩০হাজার টাকা দাবী করলে, নিরুপায় হয়ে ধার-কর্জ করে ৫হাজার টাকা দেন। সর্বশেষ গত ৭জুন’২২ইং বিকালে চকরিয়া পৌরসভার সচিবের নাম্বার থেকে ফোন করে মালামাল ফেরত ও বিচারের কথা বলে পৌরসভায় ডেকে নিয়ে যান। ওই সময় মহিলা কাউন্সিলর ফোরকান আদালতে বিচারাধীন ধর্ষণ মামলা প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টিসহ অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে। তাতে প্রতিবাদ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে অনহায় হামিদা বেগমকে গলা টিপে হত্যার চেষ্টাসহ বেধম মারধর করে। ছিনিয়ে নেয় ১টি এক ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন, নগদ ১০হাজার টাকা ও মোবাইল সেট। ওই সময় তার শিশু মেয়ে কাসমি জন্নাত ছাপা (৪) কেও মারধর করে অপহরণের চেষ্টা চালায়। এসময় উপস্থিত লোকজন এগিয়ে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এবিষয়ে ভুক্তভোগি মাহমুদুল করিমের স্ত্রী হামিদা বেগম বাদী হয়ে ১৩জুন’২২ ইং রাতে চকরিয়া থানায় মামলা (নং ২৫,জিআর ২৯৮/২২) দায়ের করেন। এতে আসামী করা হয়েছে; অভিযুক্ত নারী কাউন্সিলর ও স্থানীয় এম এন মোস্তফা মিলটনের স্ত্রী ফারহানা ইয়াছমিন ফোরকান ও কাহারিয়াঘোনার মোঃ জিয়ার স্ত্রী পারভিন আক্তারসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩/৪জনকে।
মামলার বাদী হামিদা বেগম অভিযোগ করেন, হামলাকারী বিতর্কিত নারী কাউন্সিলর ফারহানা ইয়াসমিন ফোরকানের বিরুদ্ধে মামলা মামলা মোকাদ্দমা, অসহায় মানুষকে নির্যাতন, চাঁদাবাজী হুমকি ধমকি দেয়াসহ অনেক অভিযোগ এলাকায় রয়েছে। তাকে চাঁদা প্রদানে অস্বীকৃতি ও তার কথামত ধর্ষণ মামলা আপোষ না দেয়ায় তার উপর প্রকাশ্যে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। ফারহানা ইয়াসমিন ফোরকানের কাজ হচ্ছে ব্ল্যাক মেইলিং করে নিরীহ লোকজনকে মিথ্যা অভিযোগ ও মামলা দিয়ে হয়রাণী করা।তাই তিনি প্রশাসনের কাছে এই মামলাবাজ ও লোভী মহিলার বিরুদ্ধে আইনি প্রতিকার কামনা করেন।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, অভিযোগের বিষয়ে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো: জুয়েল ইসলামের মাধ্যমে তদন্ত করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় হামিদা বেগমের অভিযোগটি মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে।আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।