গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উজেলায় পর্যাপ্ত খাবার সংকটের ফলে খাদ্যের খোঁজে দল বেঁধে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে বানর। ক্ষুধার তাড়নায় ঘুরে বেড়াচ্ছে গ্রামের এক বাড়ি থেকে অন বাড়ি। আর বানরের এমন উপদ্রবে যথেষ্ট নাকাল হতে হচ্ছে এলাকাবাসীদের।
হাট-বাজার থেকে বাজার নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে মানুষের হাত থেকে ছিনিয়ে নিচ্ছে ব্যাগ। নষ্ট করছে গাছের ফল-ফলাদী। কেড়ে নিচ্ছে মানুষের ঘরের খাদ্য সামগ্রী। তাড়া করলে বানর গুলো দল বেঁধে মানুষের উপর হামলা করে আহত ও করছে মানুষদের। যার ফলে ছোট বাচ্চারা ভয়ে ঘর থেকে বের হতে পারছে না।
পাহাড়া দিয়ে রাখতে হচ্ছে রান্না ঘর। বানর গুলো সুযোগ বুঝে ঘর থেকে হাঁড়ি নিয়ে ভাত খাচ্ছে। সর্বোপরি বানরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে গ্রামবাসি।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কাপাসিয়া উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের পানবরাইট, কুরুলিয়া, দড়িমেরুন তেতুলিয়া এলাকায় বানরের মাত্রাতিরিক্ত উপদ্রবের ফলে রিতিমতো গ্রামের লোকজন সবসময়ই থাকছে আতঙ্কে।
বানরের দল এক গাছ থেকে অন্য গাছে লাফালাফি করছে। তাদের এমন খেলা দেখতে মাঝে মাঝেই দর্শনার্থীরা ভিড় জমাচ্ছে এলাকা গুলোতে। কলা, বাদাম, ব্রেড ইত্যাদি খেতে দিলে দল বেঁধে মানুষের কাছে আসছে বানরের দল। দর্শনার্থীদের আনাগোনা কমে গেলে আবার দেখা দিচ্ছে বানরের খদ্যাভাব। তখন তারা স্থানীয়দের বাড়িতে হানা দিচ্ছে। সংখ্যায় অনেক বেশি হওয়ায় বানরের অত্যাচারে বাঁধা দিতে ভয় পাচ্ছে গ্রামের লোকজন। ক্ষুধার তাড়নায় খাবারের অভাবে অনেক সময় আক্রমণ করছে পথচারীদের ।
এলাকাবাসী জানায়, বিগত ২০১৮ সালে সাবেক সচিব এম এ কাদের সরকার নিজ উদ্যোগে বানরদের জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা করেছিলেন। ২-৩ মাস রীতিমতো খাদ্য দেওয়া হয়। তখন বানরগুলো শান্ত ছিল। এখন খাদ্য না পাওয়ার কারণে তাদের আক্রমনের মাত্রা বেড়ে গেছে। মানুষের মনে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।
৫/৭ বছর আগে এ এলাকায় বানরের সংখ্যা কম থাকলেও দিন দিন বানরের সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে গ্রামগুলোতে কয়েক হাজার বানরের বসবাস । ভুক্তভোগী গ্রামবাসী জানান,ধান, চাউল, মুরগির ডিম, কলা গাছের অাধা পাকা কলা, ফল, সবজি কিছুই তাদের জন্য রাখতে পারি না। মাঝে মাঝে বানরগুলো ঘরের ভিতরেও ঢুকে পড়ে।
রান্না করা ভাতের হাড়ি সুযোগ পেলে ঘর থেকে ছিনিয়ে নেয়। রোদে ধান শুকানো যায় না। সব ধান ছড়িয়ে-ছিটিয়ে এলোমেলো করে ফেলে।
বন বিভাগের সূর্যনারায়ণপুর বিট অফিসার আনিসুর রহমান বলেন, বন বিভাগের নির্দিষ্ট এলাকায় না থাকার কারণে তাদের খাদ্যের ব্যবস্থা হচ্ছে না। তারা লোকালয় থেকে যা পায় তাই খায়। তাদের খাদ্য সংকট রয়েছে। খাদ্যের সন্ধানে বানরের দল আশপাশের গ্রাম ও হাট-বাজারে ছড়িয়ে পড়ছে। পার্শ্ববর্তী শ্রীপুর উপজেলার বরমী বাজার এলাকায় প্রচুর বানরের বসবাস। বরমী থেকেই কাপাসিয়ার এ অঞ্চলে বানরের আগমন ঘটে বলে জানাযায়।
কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসা. ইসমত আরা বলেন, এ বিষয়ে আমার আগে জানা ছিল না। এতো বানর কাপাসিয়াতে আছে জানতাম না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। মানুষের ভোগান্তি লাঘবের জন্য বানরের খাদ্যের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন বলে জানান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এড.আমানত হোসেন খান।
শামসুল হুদা লিটন/হাসান তামিম/ঢাকা/১১