রুদ্র উজ্জ্বল দুপুর, শীতল বাতাস গায়ে লাগা, শীতে একদম বিরক্তিকর এবং ভালো লাগার অনুভূতি, বৃষ্টির দিনে পানি ভেজা, সব ছিলো শৈশব বলতে গোল্ডেন সময়। একটা মানুষের পুরো জীবনে যত সুখ তার অর্ধেক এই সময়ে।
---- শীত আসলো, সবার মধ্যে একটা আলাদা অনুভূতি লাগা শুরু করলো। এদিকে শিশুরা মস্ত চিন্তায় পড়ে গেলো, কখন পড়বে শীতের কাপড়। মা'র কাছে বায়না ধরেছে শীতের কাপড়ের জন্য। কেউ পড়বে আগের বছরের পুরোনো শীতের কাপড়, আবার কেউ পড়বে নতুন চক চকে কেনা শীতের কাপড়। তবে সবার মাঝে ভালো লাগার অনুভূতি কিন্তু আলাদা হয় না। এদিকে কৃষক ধান কেটে বাড়িতে তোলার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। ধানের কাজ শেষ হলো। এখনই তো সময় পিঠে উৎসবের। সবার বাড়িতে পিঠের আমেজ লাগতে শুরু করলো। যদি রাতে কন কনে শীতে শীতের পিঠা আর যদি বাহিরে ধবধবে সাদা জোছনা থাকে। তাহলে তখন তো তাজমহল এখানে হার মানাবে। দাদি গল্প শুরু করতে লাগলো। সাথে তো লাইফ সাপোর্টার পান থাকবেই, সেটা ছাড়া কি চলে! গল্প অনেক্ষণ চললো, তবে বেশীর ভাগ তো পাশের বাড়ি সখিনা, জরিনাদের কথা হলো। কারণ তারা এই রকম। এই জোছনার আলোতে ছোটরা লোকোচুরি খেলতে ব্যস্ত। কি মজা, কি আবেগ, কি পরিবেশ, পৃথিবী তখন তো তাদের দখলে। সবাই খেলতে খেলতে ঘাম শরীর বেয়ে মাটিতে পড়ে যাচ্ছে। সেখানে তো পড়ালেখা নাম মাত্র বিষয়, অন্য কিছু নয়। খেলা শেষ সবাই কে দেখে মনে হচ্ছে ঘামের সাগর থেকে গোসল করে আসতেছে। যাই হোক, ছোট চাচির ধারা গল্পের ইতি টানা হলো। শীত চললো শীতের গতিতে। ঠোট ফাটতে শুরু, সাথে তো ফা ফ্রেএ থাকছে-ই। কি রকম অবস্থা, সবার সামনে গিয়ে কথা বলতে লজ্জা লাগে। যদি সে ফা দেখে মন্তব্য করে, ছেলেটা তো গোসল করে না ১৩মাস হলো মনে হয়! এভাবে কাটতে লাগলো শীত। আসলো এবার প্রখর রোদ, মানুষ শরীরের টি শার্ট খোলে খালি গায়ে গরম তাড়াতে ব্যস্থ হয়ে পড়লো । তাড়ানো তো যায় না! বরং গিয়ে মসজিদের বড় পুকুরে গোসল করে আসি। দিনে তো করা হয় ৫-৬ বার করে। সেটা তো এখন উত্তম মাধ্যম শরীর ঠান্ডা রাখার। এদিকে আবার শরীরে ঘামাচির চাষ হতে শুরু করলো। তবে আমি এখন বীজ ছাড়া চাষ করতে পারি! বৃষ্টির ফোঁটা গায়ে লাগলো ঘামাচি উধাও।রাতে বৃষ্টি হলো ঘুমটাও সফল হলো, এভাবেই কাটতে লাগলো সব----
আমরা বলি, দিন গুলো হারিয়ে গেছে। না সেগুলো হারিয়ে যায় নাই, হাত বদল হয়েছে মাত্র। আপনার বয়স বেড়েছে। তাই এইসব হারিয়ে গেছে। যারা ছোট তারা কিন্তু এখন ঠিকই আপনার মতো সব পেয়ে যাচ্ছে। যা আপনি শৈশবে পেয়েছেন।
কামনা শুধু একটা, শৈশবের জীবনে ফিরে যাক সব প্রাণ!
সাব্বির শাহারিয়ার তানজিদ
এসএসসি ব্যাচ-২০২০
ঈদগড় আমির মোহাম্মদ বদি উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০