মোঃ সামিউল আলম, বিরামপুর (দিনাজপুর):
ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন মেধাবী ছাত্র রাজ কুমার শীলের মানসিক
ভারসাম্য হারিয়ে বর্তমানে ৫০ টাকা মজুরীতে একটি ভুষির মিলে কাজ করার
ঘটনা গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে প্রশাসন
থেকে শুরু করে অনেকেই তার পাশে এগিয়ে আসেন।
তেমনি এগিয়ে এলেন দিনাজপুর জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার মোঃ
আনোয়ার হোসেন (বিপিএম, পিপিএম বার)। শনিবার (২২ ফেবুয়ারী)
বিকেলে তিনি বিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুজ্জামান ও
গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে নিয়ে হঠাৎ হাজির হন রাজকুমার শীলের বাড়িতে।
এরপর তার পরিবারের সাথে সাক্ষাত করে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এসময় তার
স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নিয়ে তাকে ফল-মূল ভর্তি একটি বড় বক্স উপহার দিয়ে
তার চিকিৎসা ও ঔষধ পত্রের ব্যয়ভার নিজের কাঁধে তুলে নেন। সেই সাথে
প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা এবং তার বাড়ির সামনে একটি দোকান
করে দেওয়ার অঙ্গীকার করেন তিনি।
এসময় থানার তদন্ত ওসি মতিয়ার রহমান, বিরামপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি
মোঃ শাহিনুর আলম, সহ-সভাপতি জালাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মশিহুর
রহমান, কার্যনির্বাহী সদস্য মোঃ সামিউল আলম, সদস্য হাফিজ উদ্দিন
সরকার, আব্দুল কুদ্দুস, রায়হান কবির চপলসহ অন্যান্য সাংবাদিকবৃন্দ ও থানার
অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য যে, বিরামপুর পৌর শহরের ঘাটপাড় এলাকার নাপিত শ্রী লগীনা ও
পার্বতী রানী শীলের ছেলে রাজ কুমার শীল। ১৯৮০ সালে বিরামপুর পাইলট উচ্চ
বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন তিনি। এরপর ঢাকা কলেজ থেকে
বিজ্ঞান শাখায় এইচএসসিতে ঢাকা বোর্ডে সম্মিলিত মেধা তালিকায়
পেয়েছিলেন উচ্চতম স্থান। যথারীতি সুযোগ পেয়ে ঢাকা মেডিকেল
কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। ঢামেকের দ্বিতীয় প্রফেশনাল পরীক্ষায়
ফার্মাকোলজিতে অকৃতকার্য হওয়ার পর দ্বিতীয়বার পরীক্ষায় অংশ
নিয়েছিলেন রাজকুমার শীল। কিন্তু স্বাস্থ্য বিড়ম্বনায় কোন কারণবসত হয়ে
যান মানসিক রোগের রোগী। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে এখন তিনি মাত্র ৫০
টাকা বেতনের একটি ভুষি কারখানার শ্রমিক। অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটাই
এক মেধাবীর বাস্তব জীবন কাহিনী।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০