মো.লিওন সরকার
স্বেচ্ছাসেবা কথাটির সাথে আমরা সবাই কম বেশি পরিচিত।অনেকে স্বেচ্ছাসেবা বলতে বোঝে নিজের মেধা,নিজের শ্রম,নিজের পয়সা খরচ করে মানুষের সেবা করা।আরও সহজভাবে বলতে গেলে 'ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো' প্রবাদবাক্যটির সাথে স্বেচ্ছাসেবা কথাটি সবচেয়ে বেশি সম্পর্কিত।প্রকৃত অর্থে সেচ্ছাসেবা মূলত একটি দাতব্য কাজ।
যে মাতৃভূমি আমাদের সুস্থ ও সুন্দর জীবন উপহার দিয়েছে তার প্রতি আমাদের কিছু কর্তব্যও আছে।আমাদের সমাজ,সংস্কৃতি অদৃশ্যভাবে যে সেবা দিচ্ছে তা দেখা যায় না।আমরা যদি স্বেচ্ছাসেবার মাধ্যমে সমাজকে ১০ শতাংশ দিয়ে থাকি তার থেকে বেশি ৯০ শতাংশই গ্রহণ করি।
বর্তমান তরুণ প্রজন্মের হাত ধরে এদেশে স্বেচ্ছাসেবার নতুন দ্বার উম্মোচিত হয়েছে।সামাজিক সেবাকে স্বেচ্ছাসেবা হিসেবে প্রকাশ করতে স্বেচ্ছাসেবক কথাটি প্রথম ব্যবহৃত হয় ১৬৩০ সালে।আগে দেশি-বিদেশি অল্প কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সামান্য কিছু স্বেচ্ছাসেবককের দেখা মিললেও বর্তমানে তরুণরা প্রতিষ্ঠিত সংগঠনের পাশাপাশি নিজেরাই বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছে এবং সমাজের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে তারা একসাথে কাজ করছে।সাম্প্রতিককালে করোনা ভাইরাস মহামারীর সময়ে আমরা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর এবং স্বেচ্ছাসেবকদের দৃষ্টান্তমূলক কাজ দেখেছি।যারা পুরো সময়ে নিজেদের জীবনকে বিপন্ন করে কাজ করে গেছে।
একজন অন্ধকে রাস্তা পার করে দেওয়া, অনাহারীর মুখে এক বেলা দু'মুঠো ভাত তুলে দেওয়া,রাস্তার পাশের ময়লা ডাস্টবিনে ফেলা কিংবা একজন মুমূর্ষু রোগীকে রক্ত দান করা এসবই আসলে স্বেচ্ছাসেবা।একজন ব্যক্তি হিসেবে আমরা এগুলা যেকোনো সময়ে করতে পারি।কিন্তু বড় কিছু করতে গেলে তরুণদের সাংগঠনিক হতে হবে। কথায় আছে, "একের জন্য যা বোঝা, দশের জন্য তা লাঠি।" তাই আমরা একজন যা করতে পারবো কয়েকজন মিলে তার থেকে বেশি মানুষকে সাহায্য করতে পারব।
আমরা যদি স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ করি তাহলে আমরা শুধু যে সমাজ ও মানুষের সেবা করি তা নয় বরং নিজেকে গড়ে তুলছি। এ কাজের মাধ্যমে নেতৃত্বগুনসহ আরও অনেক গুণাবলী অর্জন করতে পারি। যা পরবর্তী জীবনে আমাদের কাজে দিবে। সুতরাং স্বেচ্ছাসেবাকে দায় না মনে করে এটিকে আমাদের কর্তব্য মনে করে সামাজিক মূল্যবোধ অথবা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে হলেও স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ করা উচিত।
মো. লিয়ন সরকার
শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০