জোভান আহমেদ নাইম :
শাসক হওয়ার ইচ্ছা থাকলে শিক্ষা প্রশাসন হওয়া উচিত আপনার প্রথম চয়েজ।রাজনীতিবিদ সংসদ সদস্য হন,কথিত শাসকও হন।পার্লামেন্ট এ বসে আইন বানান।জনগণের সেবার জন্য সেই আইন।শিক্ষা পরিচালনার জন্য আইন ও নিয়ম নীতি আছে।বাট এগুলোর প্রয়োগ রাজনীতিবিদরা করেন না।মুখে বলা পর্যন্তই।শাসন কার্য পরিচালনা ও বাস্তবায়ন যারা করেন তারাই আসল হিরো।এরাই শিক্ষা প্রশাসনের মানুষ জন।
“শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড”
কথাটির বিশ্লেষণ করতে হবে বলে মনে হচ্ছে না।ব্যক্তির বিকাশ এবং সমাজ ও দেশের সামগ্রিক অগ্রগতিতে উচ্চ শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জাতির উচ্চাকাঙ্খা পূরণের লক্ষ্যে উচ্চ শিক্ষাই প্রধান অবলম্বন। তাই আমাদের দেশে শিক্ষা ক্ষেত্রে উচ্চ শিক্ষা লাভের সুযোগও রয়েছে বেশ। যে ডিগ্রি ব্যাচেলর-অব-এডুকেশন বা বিএড নামে পরিচিত। যদি ইচ্ছা থাকে শিক্ষা নিয়ে কাজ করার তবে এই বিষয়ে পড়তে পার তুমিও। শিক্ষা দেওয়া হয় এমন সব ধরনের বিষয়, যা আধুনিক বিশ্বে তোমার প্রতিটি পদক্ষেপে কাজে লাগবে। তোমাকে কেবল একজন দক্ষ শিক্ষা ও প্রশাসন বিশেষজ্ঞ হিসেবে গড়ে তুলবে না, বরং একজন ভাল মানুষ হিসেবে তৈরি হতে সাহা্য্য করবে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন কলেজে রয়েছে বিএড পড়ার সুযোগ।
💘💘শিক্ষা বিজ্ঞান অনুষদ💘💘
নোবিপ্রবি তে শিক্ষা বিজ্ঞান অনুষদ চালু হয় গত দুবছর আগে শিক্ষা বিভাগ চালুর মাধ্যমে। অনুষদ হিসেবে এই প্রথম বাংলাদেশে চালু হয় এইটি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়,চট্টগ্রাম বিশ্বিবদ্যালয়,BUP,খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক আগ থেকেই আই.ই.আর অর্থাৎ শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট নামে চালু আছে।
📕📖যে সকল বিষয় পড়তে হবে📕📖
শিক্ষা প্রশাসন পড়তে চাইলে এখানে সর্বপ্রথম কষ্ট করার মানষিকতা তৈরি করে তোমাকে প্রবেশ করতে হবে। শিক্ষা বিষয়ের পাশাপাশি তোমাকে প্রশাসন সম্পৃক্ত বিষয়াদি পড়ানো হবে। যে যে বিষয় পড়ানো হবেঃ-
অনেকে মনে করে থাকেন, এখান থেকে পাশকৃত শিক্ষার্থীরা স্কুল শিক্ষক হবেন। তাদের জ্ঞাতার্থে বলি, আপনারা যদি একবার আইইআরের কোর্স ও কারিকুলাম লক্ষ্য করেন, তাহলে নিশ্চয়ই এর সমৃদ্ধি সম্পর্কে অবগত হবেন। কারণ এখানে পড়ানো হয় শিক্ষা পদ্ধতি, শিক্ষার ভিত্তি, শিক্ষা প্রশাসন, শিক্ষাক্রম, জেন্ডার এডুকেশন, শিক্ষা গবেষণা, শিক্ষা মনোবিজ্ঞান,ম্যানেজমেন্ট, কম্পিউটার, বাংলা ও ইংরেজি। মোটাদাগে যে বিষয়গুলো উল্লেখ করলাম তার বিস্তারিত জেনে একজন শিক্ষার্থী হয়ে ওঠেন শিক্ষা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ। বিশেষজ্ঞ হবার বেলাতেও শিক্ষার্থীকে এরিয়া নির্ধারণ করে নিতে হয়। যেমন: ভৌত বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, বিশেষ শিক্ষা, ভাষা অথবা সামাজিক বিজ্ঞান। পরবর্তীতে এমএড করার সময় তারা আরও সুনির্দিষ্ট এরিয়া নিয়ে পড়তে পারে।শিক্ষার্থীকে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হয়। এতে তার বিভিন্ন দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তাও বৃদ্ধি পায়।
💰💰জব সেক্টর💰💰
এখন প্রশ্ন আসতে পারে এই এডুকেশন বিশেষজ্ঞরা কাজ করবেন কোথায়? বলা যায়, কোথায় কাজ করবেন না? তাদের জন্য কাজ করার প্রচুর ক্ষেত্র রয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতোই তারা পিএসসি পরিচালিত সব ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার পাশাপাশি ব্যাংকগুলোতেও যোগদান করছে। তবে শিক্ষার জন্য রয়েছে এর নিজস্ব কাজের ক্ষেত্র। যেমন: শিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা অধিদপ্তর, উপজেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা রিসোর্স সেন্টার ইন্সট্রাক্টর, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটসমূহ, সরকারিভাবে পরিচালিত বিভিন্ন প্রজেক্ট,জাতিসংঘের শিক্ষা বিষায়ক প্রজেক্ট, শিক্ষার উন্নয়নে কর্মরত দেশি-বিদেশি এনজিওসমূহ, NCTB, NAEM, NTRCA প্রভৃতি। প্রফেশনাল কোর্স হবার কারণে শিক্ষা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ছাড়া অন্য কারও কাজ করার কথা নয়। যদিও বাস্তবে আমরা ভিন্ন চিত্র দেখি। বাংলাদেশের অন্য অনেক কিছুর মতোই এটিও একসময় পরিবর্তিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করি। এছাড়াও দেশ-বিদেশে উচ্চশিক্ষা নেবার সুযোগ এখানে অনেক বেশি। অস্ট্রেলিয়া, জাপান, নরওয়ে, কোরিয়া,মালেশিয়া,জার্মান,লন্ডন প্রভৃতি দেশে শিক্ষা নিয়ে পড়ার জন্য পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। সেখান থেকে আইইআর এর অনেক শিক্ষার্থী ডিগ্রি নিয়ে এসেছেন এবং অনেকে পড়ছেন। কাজেই শিক্ষার শিক্ষার্থীদের কাজ নিয়ে ততোটা চিন্তা না করলেও চলে। এখন নিশ্চয়ই আইইআর থেকে পাশকৃত শিক্ষার্থী শুধু স্কুল শিক্ষক হবেন, এমন সংকীর্ণ ধারণা থেকে আমরা বের হতে পেরেছি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামটিই বলে দেয় এর কাজ সম্পর্কে। শিক্ষা নিয়ে গবেষণা করা হয় শিক্ষা প্রশাসন বিভাগে। তাই এখানকার শিক্ষার্থীরা একেকজন ক্ষুদে শিক্ষাবিদ হয়ে গড়ে ওঠে। তাত্ত্বিক জ্ঞানের পাশাপাশি বাস্তব অভিজ্ঞতা (Practicum: Micro-Teaching) তাদের করে তোলে আরও সমৃদ্ধ। সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরিচালিত শিক্ষা প্রশাসনের পড়াশোনায় একটি সেমিস্টার (৭ম সেমিস্টার) শিক্ষার্থীকে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হয়। এতে তার বিভিন্ন দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তাও বৃদ্ধি পায়।আগামীতে নোবিপ্রবি থেকে তোমরাও এইসব জায়গায় থাকবে।
#সেশনজট :
এই ডিপার্টমেন্ট এ সেশান জট বলতে কোন কিছু নেই-ই।নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান
বাকি ব্যাচগুলো স্বাভাবিক নিয়মেই আছে। পরীক্ষা ঠিক সময়েই হয়। কাজেই
তোমার অনার্স শেষ করতে মাত্র তিন বছর ছয় মাস থেকে চার বছরেই লেখাপড়ার পাঠ চুকানো সম্ভব।
সব শেষে শুভ কামনা রইলো নোবিপ্রবির ব্যাচেলর অব এডুকেশনাল এডমিনিস্ট্রেশন শিক্ষার্থীদের জন্য ।
-------------------
-জোভান আহমেদ নাইম
শিক্ষা প্রশাসন বিভাগ।
শিক্ষা বিজ্ঞান অনুষদ।
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০