অধ্যাপক শামসুল হুদা লিটনঃ
কাপাসিয়ার বৃহত্তম কৃষি খামার ধাধার চরে প্রতিদিনই অসংখ্য কৃষক ফসল ক্ষেতে কাজ করতে আসেন । সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শত কৃষকের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠে ধাধার চর। ঝড়-বৃষ্টি,প্রাকৃতিক দুর্যোগে একটু মাথাগোঁজার জন্য অনেক কৃষকই ধাধার চরে নিজ উদ্যোগে তৈরি করেছেন শান্তির নীড় কুঁড়েঘর বা চালাঘর। বিভিন্ন গ্রাম থেকে ধাধার চরের বেলে- পলিমাটিতে ফসল ফলাতে আসা কৃষকদের সাময়িক বিশ্রামের জায়গা এই চালাঘর- কুঁড়েঘরগুলো যেনো শিল্পীর তুলিতে ছবি আঁকা । স্থানীয়ভাবে এই ছোট্ট ঘরগুলো কুঁড়েঘরগুলো বিভিন্ন নামে পরিচিত। অনেকে এগুলোকে কুটিবাড়ি, ডাকবাংলো বলে থাকে। যে নামেই ডাকা হউক না কেন এসব ঘর কৃষকদের চরে আশ্রয়ও বসবাসের ঠিকানা। কৃষকের কুঁড়েঘর ধাধার চরের কৃষকদের পরম শান্তির নীড়। নদীর পশ্চিম পাড়ের নাশেরা, ঘিঘাট, একডালা, গোসাইরগাও, বাড়ৈগাও গ্রামের অনেক কৃষকেরই জমি আছে এই ধাধার চরে। আশপাশের গ্রাম থেকে প্রতিদিনই চাষীরা চরে এসে চাষাবাদ করেন। এই চরের অনেক কৃষক গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগিও লালনপালন করে থাকেন। অনেক কৃষক নিজেদের নানা প্রয়োজনে চরের নিজস্ব জায়গায় তৈরি করেছেন চালাঘর বা কুঁড়েঘর। ঝড়- বৃষ্টি কিংবা আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় নিরাপদ আশ্রয় স্থল হিসেবে কৃষকেরা এসব চালাঘরে আশ্রয় গ্রহণ করে থাকেন ।
অনেক কৃষক আবার নিজেদের গৃহপালিত পশু লালনপালন করার জন্যও চরে চালাঘর তৈরি করেছেন।প্রায়ই ধাধার চরে রাতে গরু-ছাগল চুরির ঘটনা ঘটে। কৃষক নিজেদের চালাঘরে থেকে রাত জেগে গবাদিপশু পাহারা দিয়ে থাকেন। ফসলের মৌসুমে জমি থেকে ফসল তুলে বাজারজাত করার পূর্বে প্রাথমিকভাবে চালাঘরে রেখে সংরক্ষণ করা হয়। দুপুরের খাবার, বিশ্রাম, কাপড়-চোপড় সহ কৃষি বীজ ও নানা ধরনের কৃষি সরঞ্জাম রাখার সুন্দর ও নিরাপদ জায়গা হলো এসব কুঁড়েঘর। ধাধার চরের কৃষকের চালাঘর - কুঁড়েঘর ধাধার চরের ঐতিহ্য ও সৌন্দর্য। এসব কুঁড়েঘর পর্যটকদের দারুণভাবে আকৃষ্ট করে। হয়তো এসব চালাঘর কিংবা কুঁড়েঘর থেকেই আগামী দিনে চরের কৃষকরা ধাধার চরকে দেশের বৃহত্তম কৃষক পল্লী হিসেবে গড়ে তুলবেন।
লেখক -
শামসুল হুদা লিটন
সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০