ঢাকামঙ্গলবার , ৫ নভেম্বর ২০২৪
  1. সর্বশেষ
  2. বিশেষ সংবাদ

ঈদ !! একাল-সেকাল

প্রতিবেদক
নিউজ এডিটর
২৫ মে ২০২০, ৩:৫৪ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!

———–
রাত পোহালেই ঈদ। করোনার কল্যানে ঘুমের ঘড়ি বদলে গেছে। সেহরির পপর গাঢ় ঘুম হলেও কি ককারনে আজ নিয়মের ব্যত্যয় হল,কিছুতেই ঘুম আসলনা। সময়মত ঘুম না আসলে যা হয় আর কি, এলেমেলো ভাবনাগুলো মাথায় ঘুরতে থাকে। সার্চ ইঞ্জিনে যুৎসই শব্দটি দিয়ে সার্চ দিলেই প্রসেসরের প্রসেসড ডাটা আউটপুট দিতে সময় লাগেনা। কারো হাতে নষ্ট করার মত সময় থাকলে ১৫/২০ মিনিট আমার সাথে থাকতে পারেন। আমার আজকের টপিক ঈদের একাল সেকাল।
আমি, আমরা যৌথ টাইপের পরিবারে বড় হয়েছি। সেই ছাত্র জীবন থেকেই আমার আমাদের ঈদ আয়োজন সেই অর্থে ব্যাপক। ব্যাপক মানে সাধ্যের মধ্যে সবার জন্য কেনা কাটা। মা, বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন, বাসার কাজের লোকজন, সাধ্যমতো দরিদ্র আত্মীয় স্বজন এমনকি গ্রামের ইমাম মুয়াজ্জিনদের জন্যও আমি নিয়মিত কেনাকাটা করতাম সেই বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই। দল বেধে এলিফ্যান্ট রোড,নিউমার্কেট, হকার্স মার্কেট,চাঁদনীচক, গুলিস্তান ফুটপাত, বঙ্গবাজার এমনকি ইসলামপুরের পাইকারি ছিট কাপড়ের দোকানে ছিল আমার অবাধ যাতায়াত,এবং অবশ্যই একা নয়।
যাহোক ঘুম ভেঙেই যে শব্দটি মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে তা হল ‘‘কাট পিচ’’। সিনেমা দেখে আমরা যারা অভ্যস্থ বিশেষ করে সিনেমা হলে গিয়ে তারা শব্দটির সাথে কম বেশী পরিচিত। কিন্তু এ শব্দটির সাথে আমার, আমাদের পরিচয় সেই শৈশব থেকেই।
আমরা যারা অনটনের মধ্যে মধ্যে মানুষ হয়েছি তারা তাদের শৈশব কৈশোরে নগদ টাকার টানাপোড়েন এড়িয়ে সংসার যন্ত্রটিকে ভদ্রস্থভাবে পরিচালনার জন্য প্রতিনিয়ত আমাদের বাবা মা দেরকে কি পরিমান আর এন্ড ডি যে করা লেগেছে তা দেখেছি। কেউ এটি দেখেও দ্যাখেনি, বুঝেও বোঝেনি,নিস্পৃহ থেকে বাবা মায়ের উপর চাপ সৃষ্টি করে গেছি বা যাচ্ছি, আর কেউ সব জেনে বুঝে আত্মকেন্দ্রিক থেকেছি এবং একটা বড় অংশ সব ভুলে গেছি বা প্রকাশ করলে ইজ্জত কা সওয়াল হবে ভেবে মুখে কুলুপ এঁটে থাকি।
যা হোক যা বলছিলাম। আগেও অনেকবার বলেছি আমার দৃষ্টিতে আমার বাবা বহু দিক দিয়েই সত্যিকারের আইডল ছিলেন। সকলেরই হয়তোবা তাই থাকে, আমি ঠিক জানিনা। ০৮ ভাই বোনের সংসার, এক্সটেনডেড ফ্যামিলি মেম্বার আরো বেশি।বাবার স্কুলটিচারের চাকরি, মাঠে কিছু জায়গা জমি আর টুকটাক ছোটখাটো ব্যবসা,রোজগার বলতে এই। প্রাইমারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এতগুলো ছেলে মেয়ে, চাহিদার কমতি নেই। অর্থনীতি না পড়েও আমাদের বাবা মায়েরা চাহিদা আর যোগানের এমন অদ্ভুত সমন্বয় কিভাবে করতেন তা আজো আমার কাছে বিরাট বিস্ময়। তার মধ্যে আব্বার আবার ছিল জমি কেনার নেশা এবং দরাজ দিল।
আব্বার কাছে চেয়ে “না “শুনেছি এমনটি খুব একটা মনে পড়েনা-যদিও আমাদের চাহিদা ছিল খুবই সীমিত। ঈদ মানেই আনন্দ, যা লুকিয়ে থাকে মূলত নতুন কাপড়ের গন্ধে। ঈদ আসলেই তাই বাবা মা দের কপালের ভাঁজ বাড়তে থাকে। পকেটের সাথে সঙ্গতি রেখে ঈদ আনন্দ বজায় রাখার জন্য আমার বাবার মত অনেক বাবাদেরই ভরসা ছিল এই কাটপিচ থিওরী। একটু বুঝিয়ে বলি সম্ভবত রেডিমেড গার্মেন্টসের অব্যবহৃত টেট্রন,লিলেন,ফ্লানেল বা কটনের টুকরা কাপড় অবিশ্বস্য কম দামে পাওয়া যেত এই কাটপিচ মার্কেটে। খুঁজেপেতে কষ্ট করে একটু মিলিয়ে নিতে হত এই যা! যশোর শহরের কালেক্টরেট ভবনের পার্শ্বের একটি মার্কেট বিখ্যাত ছিল এই কাটপিচের জন্য। কখনো আব্বা একা কখনো বা আমরা কেউ সাথে গিয়ে বাহারি সব কাপড় কিনতাম। যে কাপড় নিয়ে সোজা নাভারণ বাজারের মজিদ চাচার দর্জির দোকান। শার্ট এক কালারের, হাতা, পকেট বা কলার অন্য কালারের। এমনকি পেল্লাই বড়লোকের ছেলেরাও তাকিয়ে থাকতো তার বাহার দেখে!
রোজার মাসে স্কুল বন্ধ থাকতো, তবুও কারনে অকারনে বাজারে গিয়ে দর্জির দোকানে খোঁজ নেয়া শার্ট বানানো হয়েছে কিনা? মজিদ চাচা আব্বার ছাত্র ছিলেন, আমাকে চিনতেন, দেখলেই বলতেন এই তো বাবা হয়ে যাবে, কাপড় কাটা শেষ, সেলাই হচ্ছে, আর এক দুটো দিন, বলেই ফর্সা মুখে হাসতেন।বেশ লাগতো তাকে দেখতে, কানে সব সময় রঙ্গীন পেনসিল গোহাড় , হাতে কাঁচি, মুখ ভরা চাপ দাঁড়ি, গাল ভরা হাসি। মজিদ দর্জিই ছিলেন আমাদের শৈশবে কৈশোরের ঈদ আনন্দের সূতিকাগার। ঈদের আগের রাত থেকেই পরিকল্পনা, কত আয়োজন। সেমাই ভাজা, সুজি ভাজা, বাদাম ভাজার কাজগুলো মা আগের রাতেই করে রাখতেন। যাতে খুব সকালেই ঈদের যত নাস্তার আয়োজনটা করা যায়। সে সব আয়োজনে বোনেদের পাশাপাশি আমিও থাকতাম। আমার একটা পার্মানেন্ট কাজ ছিল ভাজা বাদামের ভিতরে লাল রঙের যে খোসাটা থাকে ওটা ছাড়ানো। খুব যত্নের সাথে সে কাজটি করতাম। এর পর শোকেস থেকে নতুন প্লেট, হাফপ্লেট, চামচ এমনকি কাটা চামচও বের করা হত। সেগুলো ধুয়েটুয়ে আগের রাতেই ঠিক করে রাখা হতো। সে আমলে স্টিল বা মেলামাইনের কাটাচামচ ছিল যথেষ্ট বড়লোকি বা বনেদিয়ানার পরিচায়ক।

ঈদের রান্নাটা একটু বেশী পরিমানেই হত। বিশেষ করে সেমাই সুজি। ভোর রাতেই ঘুম থেকে উঠতে হত। বাড়ীর সবাইকেই। তারপর আমরা ছেলেরা দল বেধে ফজরের নামাজ পড়ার জন্য বাবা চাচাদের সাথে মসজিদে যেতাম, ফজরের নামাজ শেষে মসজিদের ঠিক পাশেই দাদার কবর জিয়ারত ছিল রুটিন কাজ। সবাই ঈদের নামাজ পড়ে কবর জিয়ারত করলেও আব্বা এটি আমাদেরকে নিয়ে ফজর বাদই করতেন। তখন এটিকে একটু অতিরিক্তই মনে হত। এখন কারনটা বুঝি। আমাদের এলাকার ৫টি গ্রামের লোক একসাথে একটি ঈদগাহে নামাজ পড়তো, এখনো পড়ে। আব্বা ছিলেন এ ঈদগাহের দীর্ঘদিনের সভাপতি। ঈদের নামাজ শেষে ঈদগাহেই তাদের মিটিং এবং ঈদে কত টাকা উঠল,কোথায় কি খরচ এসব হিসাব কিতাব হত। কাজেই নামাজ শেষে আব্বার আসতে দেরী হত। এজন্য ঈদ নামাজ পরবর্তী কবর জিয়ারতে যেহেতু তিনি পরিবারের বা গ্রামবাসীর সাথে যোগ দিতে পারবেন না এজন্যই বাপের সুপুত্র ফজর বাদই এ পর্বটি সেরে রাখতেন। তাই শুধু বাবা হিসাবেই নন, সত্যিকার অর্থেই তিনি আমাদের আইডল।এখনো নির্দ্বিধায়,চোখবুজে তাকে ফলো করি।
সকালে কবর জিয়ারতের পর আরেকটি কাজ ছিল দাদার কবর পরিষ্কার করা। দীর্ঘদিন ধরে এ কাজে আমি নেতৃত্ব দিতাম- সাথে থাকতো গুড়াগাড়া কাজিনরা। দাদার কবরের ঠিক মাঝখানে একটি হাসনেহেনা গাছ ছিল। সুবহে সাদিক থেকে তার গন্ধে মসজিদ সহ আশেপাশের এলাকা মৌমৌ করতো। চোখ বন্ধ করলে সে গন্ধটা আমি এখনো টের পাই।
কবর পরিস্কার করার পরের কাজ ছিল পিরিচে সেমাই সুজি বাড়া। আমরা দলবেধে পাড়ার সবাই একসাথে ঈদগাহে যেতাম। ঈদগাহ ময়দানটি ৩টি গ্রামের মাঝে রেল লাইনের ধারে। নামাজের আগে পাড়ার লোক দাদী বেঁচে থাকতে দাদীকে সালাম করতে আসতো এরপর আব্বা মাকে। তাদের জন্য নির্ধারিত ছিল একটা পিরিচে দুই তিন রকম সেমাই, একটু সুজি। এরকম প্রায় শতখানেক হাফপ্লেটে খাবার সাজানো থাকতো বারান্দার একটি টেবিলে। দুতিনটা জগ ভরা পানি আর কয়েকটা গ্লাস। দলবেধে ছোট বড় মুরুব্বিদের পায়ে ধরে সালাম করতাম। বাড়ীর ছেলে মেয়েরা তো বটেই পাড়ার ছেলে মেয়েরা বা কম বয়স্করাও আব্বা মাকে সালাম করে ঈদগাহে যেতো। ছোটদের কাছে এটা ছিল সবচেয়ে আকর্ষণীয়। দুই টাকা থেকে এই সালামি শুরু করেছি, বিয়ে করার পর মা বেটার বউদেরকে এক হাজার টাকার ১টা করে নোট দিতো, আমরাও পেতাম সমহারেই। পাড়ার ছেলে মেয়েরাও বাদ যেতোনা সে সালামি থেকে। ঈদগাহে যাওয়ার সময় নামাজের বিছানা এবং ছাতা ছিল আবশ্যকীয় সঙ্গী। বাড়ীর সবাই আমরা একসাথে বসতাম, নামাজ পড়তাম, এলাকার মানুষ, বন্ধু বান্ধবদের সাথে দেখা হওয়া কোলাকুলি,আরো কত স্মৃতি। ফেরার পথে আবার কবর জিয়ারত এর পরে বাসায় এসে পাজামা পাঞ্জাবি চেঞ্জ করে ঈদের দিনের আমার মূল খাবার পান্তা ভাত, ডিম ভাজি, আগের রাতের বাসি ডাল, মরিচ পিয়াজ ভাজা মৌজ করে খাওয়া । ছোটবেলা থেকেই পান্তা ভাত আমার প্রিয় খাবার।প্রাইমারি থেকেই চেষ্টা করতাম রোজা রাখার। সেভেন এইটের পর কখনো রোজা ভেঙেছি এমনটি মনে পড়ে না। আশ্চর্য্যের বিষয় হচ্ছে পান্তাভাতের অভ্যাসটা আমার এখনো আছে। এরকম অদ্ভুতুড়ে একটা ইচ্ছার জন্য বউ প্রতিবছরই গালাগালি করে কিন্তু দয়া করে ব্যবস্থাটি
রাখেও। আরো আশ্চর্য্যে বিষয় হচ্ছে আমার বাচ্চা দুটোর মধ্যেও এ অদ্ভুত অভ্যাসটি একটু একটু করে গড়ে উঠছে। এটা আমার জন্য চরম পুলকের আর বউ এর জন্য চরম বিরক্তিকর একটা বিষয়। পান্তাভাতের পর বাড়ীতে এটা সেটা করতেই দুপুর।দুপুরে এক্সটেনডেড ফ্যামিলির জয়েন্ট লান্চ। নিয়মিত মেন্যু বিশেষ খিঁচুড়ি আর গরুর মাংস ভুনা,রান্না হত উঠোনে,খাওয়াও তাই।শুধু কি বাড়ির লোক,মেহমানরা নয়, এমনকি পাড়াপড়শিদের অনেকেও শরিক হত সে খানাপিনায়।

দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেই বন্ধুদের সাথে আড্ডার জন্য মন আইঢাই। আমার বাড়ী আর স্কুলের দূরত্ব ৫/৬ কিলোমিটার। কাজেই বন্ধু বান্ধব সবাই স্কুল কেন্দ্রিক। মোটামুটি ৪টা বাজলেই দে ছুট। কখন দেখা হবে বন্ধুদের সাথে। প্রথম দিকে এর বাড়ী ওর বাড়ী পরবর্তীতে এর দোকান ওর অফিস এবং বয়সকালে নাভারন ক্লাব ছিল কমন গন্তব্য। আশির দশক থেকেই নাভারন বাজারে দ্বিতল ভবনের ক্লাবটি ছিল,বিভিন্ন বয়সী মেম্বার রা তাস,দাবা খেলতো,আড্ডা দিত। সেই সিক্স সেভেন থেকে শুরু হয়ে এখনো চলছে সে আড্ডা। কালে ভাদ্রে কখনো ঈদের ছুটি পেলে বন্ধুদের সেই আড্ডায় যোগ দেওয়ার জন্য প্রানটা এখনো আই চাই করে। সে আড্ডায় কে কি করি এসব কোন ইস্যুই নয়। লাল চা ও দুধ চা পরপর চলতে থাকে কোক,ফান্টা, স্প্রাইট,বাদাম চানাচুরের সাথে সাথে।গোল্ডলিফ, বেনসনের ধোঁয়া মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় সে আড্ডায়। ক্রমে রাত বাড়তে থাকে। শশুর বাড়ী স্কুলের পাশেই। বরাবরের মতই কখনো বাড়ীতে ঈদের সুযোগ পেলেই সকালটা বাড়ীতে কাটাই, সন্ধ্যার দিকে যেতে হয় শশুর বাড়ী। শশুর শাশুড়িকে সালাম করে, সালামি নেয়া দেয়ার পাট চুকিয়ে সামান্য একটু কিছু মুখে দিয়ে বেরিয়ে পড়ি সে আড্ডায়। সে আড্ডার সামনে বাইসাইকেল, মটরসাইকেল, প্রাইভেটকার বা মাইক্রো সহ নামী দামী ব্রান্ডের গাড়ী,এমনকি হুইলচেয়ারও পাশাপাশি শোভা পায় বন্ধুত্ব আর সাম্যের প্রতীক হিসাবে। রাত বাড়তে থাকে, ফোনে ঘন ঘন কল আসতে থাকে প্রত্যকের নীড় থেকে গা সয়া বিরক্তি নিয়ে। ২/৫ মিনিট বলতে বলতে ঘন্টা খানেক পরে গিয়ে যোগ দেই শ্বশুরবাড়ীর ডিনারের টেবিলে। চা টা খেয়ে পেট ভরা থাকে, নানা পদের ঈদ স্পেশাল ডিনার খাওয়ার জায়গা আর পেটে থাকেনা তেমন একটা। রাতে শ্বশুরের ছাদে চলতে থাকে জম্পেস আড্ডা।একপাশে ছোট্ট নদী বেত্রাবতী আর একপাশের খোলারমাঠ থেকে আসা হাওয়ায় শরীর তো বটেই মনও জুড়িয়ে যায়,চোখ বুজে আসে।
ঢাকার বা কর্মস্থলের ঈদ অন্যরকম। ঢাকায় থাকলে রাজারবাগে সবার সাথে নামাজ পড়া, প্রথমে ফোর্সের এবং পরে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়। ৪৫/৪৬ বছরের জীবনের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় প্রায় ৩০ বছর ঢাকায় কাটালেও ঢাকা শহরের এই কর্পোরেট ঈদ কালচারে অভ্যস্ত হতে পারলাম না এখনো। আমি গ্রামের ছেলে না পারলে না পারলাম, কিন্তু জন্মসূত্রে রাজধানীর নাগরিক আমার দুই বাচ্চার অবস্থাও তথৈবচ সেটিই আমার বিস্ময়। কোন কারনে ঈদে বাড়ী যেতে না পারলে ওদের মুখের দিকে তাকানো যায়না কোন ভাবেই। বাধ্য হয়ে ঢাকায় ঈদ করতে হলে আগের রাতে সব রান্না বান্না করে রাখি আমরা। ঈদের দিন খুব সকালে নামাজটা পড়ে প্রিয় খাবার পান্তা ভাত খেয়ে সদলবলে রওনা দিই শহর থেকে দূরে,ফার ফ্রম দি ম্যাডিং ক্রাউডে, গাজীপুরের কোন বনবাংলো বা আশেপাশের কোন ফাকা রিসোর্ট। ঘাসের উপর পা ছড়িয়ে বসে থাকি। বাচ্চাদের সাথে ক্রিকেট খেলি, সাঁতার কাটি বা অলস সময় কাটাই। বনে বাদাড়েই চড়ুইভাতি স্টাইলে খাই বাসায় রান্না করা খাবার। দুপুর গড়িয়ে পড়ন্ত বিকালে রওনা দিই আপন ঠিকানায়। সন্ধায় থাকে আবশ্যকীয় কিছু ফর্মাল প্রোগ্রাম। মন পড়ে থাকে গ্রামে, আত্মীয় স্বজন বা বন্ধুদের আড্ডায়।
দেশের বাইরেও ঈদ করতে হয়েছে কয়েকবার। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে থাকা অবস্থায় ইউরোপের কসোভো, আফ্রিকার সুদানে ঈদের অভিজ্ঞতাও হয়েছে।
২০০৫ এ ঈদের কয়েকদিন আগেই কসোভোতে মিশনে গেলাম। কাজেই সঙ্গত কারনেই ঈদের ছুটিতে আসা হলনা। আমরা তিন ব্যাচমেট ব্যাচেলর হিসাবে এক বাসায়/পাশাপাশি থাকতাম। আবার অনেকেই পরিবারসহ ও থাকতেন। ঈদ আসন্ন। কন্টিনজেন্ট কমান্ডার ঈদের আগে কন্টিনজেন্ট মিটিং এ সবাই মিলে একসাথে এক বাসায় ঈদ করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। স্যুয়োমোটো কেউ দায়ীত্ব নিবে কিনা জানতে চাইলেন। আমরা ভেবেছিলাম যারা ফ্যামিলি নিয়ে থাকেন তাদের মধ্যে কেউ বা লেডি অফিসাররা স্বপ্রণোদিত হয়ে রাজী হবেন। সেটা হলনা যে কোন কারনেই হোক। কন্টিনজেন্ট কমান্ডার ব্যাচেলর পার্টির দিকে তাকালেন। রান্না বান্নায় টুকটাক খ্যাতির কারনেই হোক বা বেশী বোকা ছিলাম বলেই হোক গুরুদায়ীত্ব খুশী মনে নিলাম আমার ব্যাচমেট ও বাসামেট দের সম্মতিতে। দায়ীত্ব তো নিলাম, মুশকিল হচ্ছে ২০/২৫ জনের জন্য বিদেশের মাটিতে ঈদের আয়োজন করার জন্য ন্যূনতম হাড়িপাতিল বা আনুষাঙ্গিক জিনিষপত্র তো আমাদের নেই। মেন্যুর কথা জিজ্ঞেস করলে কন্টিনজেন্ট কমান্ডার খাঁটি ময়মনসিংহের ভাষায় বললেন আবার মেন্যু খুজুয়্যিন, মিয়্যা যা খাওয়াইবাম তাই খামুউইন!!

আমার বাড়ীওয়ালা পিটার এবং বাড়ীওয়ালি মেরি ছিল মুশকিল আসান দম্পতি। পিটার কে সমস্যার কথা বললাম। পিটার/মেরী দম্পত্তি তাদের স্টোর রুম খুলে দিল। হাড়িপাতিল যা যা লাগে বের করে নিলাম। মাত্র কদিন আগে দেশ থেকে গিয়েছি- ঈদ বিদেশেই করতে হবে। এ প্রস্তুতি আমাদের ছিল। সেমাই সুজির অভাব হলনা। হালিম, ন্যুডলস্ ও হল। খিচুড়ি, পোলাও মাংস, ফ্রেস দুধের পায়েস, ইয়োগোয়াট, গরু, খাসি, ব্রাজিলিয়ান চিকেন কোনটাই বাদ গেলনা। রেডিমেইড পরোটা, পাপড় কেনা ছিল সেঁকে নিলেই হবে। ব্যাচমেট ইমাম ভাই ভাল রুটি বানাতে পারতো। সেও বললো সবই তুই হাতে করলি আমিও একটু ক্যারিশমা দেখাই। বানানো হল হাতে বেলা রুটিও। বলাই বাহুল্য এসব করতে করতেই আমাদের রাত কাবার। ইন্জিনিয়ার্সের মেজর হান্নান ভাই ছিলেন কাটাকাটিতে ওস্তাদ।গরু বাদে হাস,মুরগি,এমন কি ভেড়া বা ছাগল কেটে মুহুর্তের মধ্যে সাইজ করে ফেলা তার কাছে ডাইলভাত।চশমা পরা চোখে সারাক্ষণ অন্যদিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাসতো এমন কি ছুরি চালানোর সময়ও।পর্যাপ্ত পরিমান কোক থাকলে আর ল্যাপটপে বা স্টিরিওতে ম্যাডোনা বা এনজেলিনা জোলির গান চললে সে পেয়াজ,টমেটো বা ব্রাজিলিয়ান চিকেন,কি সুদানিজ বিফ স্টেক একই গতিতে কেটে দিত। মিটিমিটি হাসিমুখী ভদ্দ্দরলোক মাসুদ ভাই যথারীতি কোক, ফান্টা, স্প্রাইট, ফ্রেশ জুসের যোগান দিল,আগের রাতে এবং পরদিনের মূল আয়োজনে।পিটার মেরীও আমাদের গেষ্ট। তারাও আসল- খালি হাতে নয়, তাদের বিখ্যাত আপেল কেক, রাজহাসের ডিমের পেষ্ট্রি নিয়ে, সবার জন্য। দুপুর নাগাদ সবাই মানে আমাদের পুলিশ ও মিলিটারি কলিগদের কয়েকজনও তাদের পরিবার।
কন্টিনজেন্ট মিটিং এ আমাদের স্যুয়োমোটো এতগুলো লোকের ঈদের খাবারের দায়ীত্ব নেওয়ার সময়ই অনেকে চোখ চাওয়া চাওয়ি করেছেন, হোস্ট হিসাবে গেস্টদের সমাদার করতে না পারার সম্ভাব্য ভবিষ্যত বেইজ্জতির আশঙ্কায়। আমাদের বাসার নীচতলায় বেশ বড় সড় একটা হল রুম ছিল। ভাবীরা এবং সিনিয়র কয়েকজন সোফা বা চেয়ারে বসলেন। বাকীরা সোফার হাতলে, ফ্লোরে কেউবা দেওয়ালে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে গেলেন। ২০ বাই২৫ ফুট বিশাল হলরুমটার বড় অংশই ভরে আছে নানা রকম ডিশে। সালাদ এক্সপার্ট হিসাবে তাদের বেস্ট পারফরমেন্স দেখালো ব্যাচমেট মাসুদ ভাইও সালমা। ফ্রেশ ইয়োগায়াট, আর গাছ থেকে সদ্য ছেড়া আপেল, নাশপাতি, লেবুর রস, শসা,টমেটো,চিজ মেয়নেজ আর ভিনেগার দিয়ে মাখানো সে সালাদের স্বাদ মনে হয় এখনো জিহ্বায় লেগে আছে। ধোয়ামাজায় পঞ্চম মিশনের অভিজ্ঞ সার্জেন্ট গাজি ছিল একাই একশো। পিটারের পোষা বিশাল রাজহাঁস ভুনা আর হাতে বেলা রুটিতো অমৃতই ছিল বলতে গেলে। মেহমানরা বিশেষ করে ভাবীদের চোখে চড়কগাছ!! মুখে বারবার একই কথা বিদেশে তো বটেই দেশেও তো বাবুর্চি ছাড়া এত কিছু করা কোনমতেই সম্ভব হতনা। হাইটেক ইমাম ভাই নানা কারসাজি করে বাংলা চ্যানেলে ঈদের অনুষ্ঠান ও ল্যাপটপে লাইভ দেখালো-ষোলকলা পূর্ণ হল। দুপুর গড়িয়ে শুরু হওয়া লাঞ্চ গড়ালো ডিনার পর্য্যন্ত। মাঝখানের কিছুটা সময় সবারই কাটলো পিটারের আপেল, আঙুর বাগান আর রাজহাঁসের বহরের সাথে সময় কাটিয়ে, ছবি তুলে এবং আমাদের এক সিনিয়র স্যারের হাতে বানানো বিখ্যাত দুধ চা খেয়ে।
২০১০ এ ঈদ করলাম সুদান মিশনে- এবার সত্যিকারের ইন্টারন্যাশনাল, ইনভায়রনমেন্টে,নন ফ্যামিলি মিশন এরিয়ায় ঈদ। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, আর্মেনিয়া,মিশর আর জর্দানের কয় মুসলমান মিলে জর্ডানিদের আমবাগানের বড়বাসায় ঈদের খানাপিনা হল। যে যার দেশের ঈদ স্পেশাল রান্না করে সাথে নিয়ে আসল। ইন্ডিয়ানরা হায়দ্রাবাদী বিরিয়ানী আর মাটন চপ, পাকিস্তানিরা বেশী ঘিয়ে রান্না করা বাশমতি পোলাও আর গরুর রেজালা, মালয়েশিয়ানরা আনল বিখ্যাত মালয় জিনজার নান আর চিকেন রোস্ট, আমরা নিলাম খিচুড়ি, ডিমভুনা আর বিফকারি, তুরস্কের পুলিশ লিউটেনেন্ট কর্নেল আকিব আমরা ডাকতাম (আকিব জাভেদ) কে আমরা কেউই কখনো পানি খেতে দেখিনি, সারাক্ষন চা, কফি, কোক, জুস এবং রাত হলে বোতলের উপরেই সে থাকতো। সে নিল ফ্রেস জুসের দায়ীত্ব, সাথে নানারকম সফ্ট ড্রিংকস। আর্মের্নিয়ান দুজনা ছিল বিশাল লম্বা, একজনের নাম থেচার আর একজনের নাম ভুলে গেছি ওরা আনল কিসমিস, আখরোট আর আলমন্ড দিয়ে বানানো হালুয়া। ইজিপসিয়ানরা আনল নানা পদের ডেজার্ট আর গাওয়া (হট ড্রিংকস),আর হালুয়া,সে হালুয়া থাকে কৌটার মধ্যে, মুখটা খুলে দিলে তার মম গন্ধে ঘরে তো বটেই আশেপাশেও বেহেশ্তি সুবাস। রাজকীয় খানাপিনা শেষে শুরু হল পাকিস্তানী পুলিশ ইন্সপেক্টর জাভেদের দরাজ গলায় কাওয়ালি, তাতে যোগ দিল কাশ্মীরের সৌম্য দর্শন পুলিশ সুপার সালেমান নাভিদ। সে আসর ভাঙল রাতের দ্বিপ্রহরে,মরুর বুকে তখন নেমে এসেছে ঠাণ্ডা। দক্ষিন সুদানের প্রত্যন্ত জনপদ আওয়েলের (Aweil) এর সেই আমগাছ তলার ঈদ আয়োজনের কথা ভুলি কি করে!! বহুবছর পরে দিল্লীতে একটা কনফারেন্সে সলেমান নাভিদের সাথে দেখা হতেই দূর থেকে এসে বুকে জড়িয়ে নিলেন, তিনি এখন কাশ্মীরের আইজি।সেই দরাজ গলা মনির মাই বেস্ট ফ্রেন্ড,

মেঘে মেঘে অনেক বেলা হয়েছে। শৈশব, কৈশোরের ঈদের স্মৃতি, দেশ বিদেশের ঈদের স্মৃতিচারন করতে গিয়ে কত কথা মনে পড়ে। কতজনকে হারিয়েছি!!ঈদের দিনে গোসল শেষে নতুন পাজামা পাঞ্জাবি পরে আব্বার সামনে দাঁড়ালেই আতর মাখাতেন? আতরের গন্ধ আমার কাছে বরাবরই একটু কড়া মনে হয়, তারপরও সেই স্নেহটুকু উপভোগ করতাম। মাকে সালাম করলেই দু হাত তুলে কপালে চুমু খেতেন, এমন কি চাকরি করার পরও হাতে সালামির টাকা দিতেন। কোন সময়ই আমার ভূল হতনা, তারপরও বারবার মনে করিয়ে দিতেন ১০/২০/৫০/১০০ টাকার নতুন নোট যেন নিয়ে যাই বা পাঠাই। এগুলো এখন শুধুই স্মৃতি। বাচ্চারা এখন ঈদের দিনে ওদের মাকে, আমাকে সালাম করে, সালামি দিই। তাদের চোখে সালামি পাওয়ার সেই জেল্লাটা দেখতে পাইনা আমি।

আমরা আমাদের বাবা-মা, অতীত কে নিয়ে যেভাবে নস্টালজিয়ায় ভুগি ওরাও কি একদিন তাই করবে? যখন আমরা থাকবোনা। হয়তো বা করবে, হয়তো বা করবেনা। কি জানি, ঠিক বুঝিও না। স্নেহ বরাবরই নিম্নগামী। আমাদের বাবা মা আমাদেরকে যতটা ভালবেসেছেন তা যেমন আমরা তাদের কে শোধ দিতে পারিনি, ঠিক তেমনি ভাবে আমাদের ছেলে মেয়েদেরকে আমরা যতটা ভালবাসি ওরাও তা কোন দিনই আমাদেরকে ফেরৎ দিতে পারবেনা, ওরা আবার দিবে ওদের সন্তানদেরকে। এটাই বোধ হয় নিয়তির বিধান।

রাত পোহালেই ঈদ। করোনার আতংক, আর রোজগারের অসুবিধায় নিম্নবিত্ত মানুষের টানাপোড়েনের সাথে যোগ হয়েছে ভয়ঙ্কর ঘুর্নিঝড় আম্পানের তান্ডব। ঘরে খাবার চাল ও নেই,মাথার উপরের চাল ও নেই। দেয়াল বা বেড়া ঝড়ে উড়েগেছে।ঘরের চাল বা বেড়ার সাথে উবে গেছে স্বপ্ন,সেই সাথে জিইয়ে থাকা সামান্য মলিন হাসিটুকুও।তাদের বাচ্চারা নতুন কাপড়ের জন্য নয়,পেটের ক্ষুধায় কাঁদছে। শুধু সরকারী সাহায্যে এ সমস্যা যাবেনা যদি সক্ষম মানুষরা হাত বাড়িয়ে না দেন।এ অবস্থায় লাখ লাখ বিপন্ন মানুষের জীবনে ঈদ কেমন হবে তা সহজেই অনুমেয়।

সর্বাবস্থায় আল্লাহর শুকরিয়া করাই মু’মিনের বৈশিষ্ট্য। ঈমান বা আমল কোনটাই জোরদার না হলেও বিষন্নতার মাঝেও আনন্দ খুঁজে বেড়াতেই আমার ভাল লাগে। লক ডাউনের এই বন্দী জীবনে ঈদের আনন্দ হাতের নাগালে নেই, তাই স্মৃতিচারন করে নিজেকে প্রফুল্ল রাখার চেষ্টা করি।গভীর ভাবে বিশ্বাস করি মেঘ কেটে গিয়ে সূর্য হাসবেই। মুশকিল যতই হোক আসান তার চেয়ে বেশী।
সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা।আমার ও পরিবারের পক্ষ থেকে।বিশেষ করে আমার দশ বছরের ছেলে আলিফের পক্ষ থেকে, আজকে নিয়ে তার ত্রিশটা রোজা হতে চলেছে।আমার আরামপ্রিয় মেয়েটাও পুরো মাস জুড়েই নামাজ রোজা করেছে নিয়মিত ভাবেই।তাদের মাও প্রতিবছরের ন্যায় এবারেও গতরাতেই কোরান খতম করতে পেরেছে বাচ্চাদের নিত্যদিনের ইউটিউব মেন্যুর নানা ডিশ সাপ্লাই এর মাঝেও,হেল্পিং হ্যান্ডের এই নৈরাজ্যের মধ্যেও।
ইতিমধ্যে আমার ১২ জন কলিগ করোনা মোকাবেলায় আত্মাহুতি দিয়েছেন,মৃত্যুর মিছিল বাড়ছেই।প্রিয় ব্যাচমেট মোজাম্মেল ভাই, আমার সরকারী গাড়ীর ড্রাইভার মোক্তার সহ করোনা আক্রান্ত তিনহাজারের বেশী সহকর্মী।স্মরণ কালের কঠিন সময় পার করছে প্রিয় স্বদেশ এবং ফ্রন্ট লাইনার হিসাবে পুলিশ,ডাক্তারও চিকিৎসাকর্মী,সেনাবাহিনী,মাঠ প্রশাসন,খাদ্য সরবরাহ,যোগাযোগ সহ অন্যান্য বিভাগের আত্মনিবেদিত সহকর্মী গণ।একই স্টেশনের অনুজ সহকর্মী দুদকের উপসচিব পরম প্রিয় জালাল সহ অনেকেই মারা গেছেন,অনেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে দুঃসহ সময় পার করছেন।পরম পরোয়ারদিগার রহম করুন সকলকে।
এমনি বাস্তবতায় এখনো কর্তব্য পালন করতে পারছি এবং এখনো বেঁচে আছি,অনুভুতি ব্যক্ত করতে পারছি এই খুশিতেই সবাইকে “ঈদ মোবারক”।

লেখক :
মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান
এইডিশনাল ডি আইজি
বাংলাদেশ পুলিশ।।

538 Views

আরও পড়ুন

তরিকুল ইসলামের কবিতা:- সংবিধানের বিলুপ্তি ঘটুক

বুটেক্সে ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন আইপিই

শেরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলায় গ্রেফতার ১

বুক রিভিউ:সময়ের ছবি ‘নীরব কোলাহল’

মৌলভীবাজারে সোনার বাংলা আদর্শ ক্লাবের ৬ষ্ঠ মেধা যাচাই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

হাওরের জনপদ এখন উচ্চশিক্ষায় আরো এগিয়ে যাবে–ড. মোঃ আবু নঈম শেখ

রাবিতে গ্রীন ভয়েস এর নেতৃত্বে মাহিন-সিরাজুল

ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় মনিরকে

নাইক্ষ্যংছড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় গৃহবধূর লাশ উদ্ধার !!

আগামী দিনের রাজনীতি হবে তারেক রহমানের নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশ গড়ার রাজনীতি: নাজমুল মোস্তফা আমিন

নাটোরে অস্ত্রসহ আওয়ামীলীগ নেতা ও তার সহযোগী আটক

দুর্লভ নিদর্শনে সমৃদ্ধ এশিয়াটিক সোসাইটি ঐতিহ্য জাদুঘর