মোহাম্মদ ইউনুছ,পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়ন পরিষদে ব্যালট ছিনতাইয়ের অভিযোগে স্থগিত থাকা ফাঁসিয়াখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র দখলের চেষ্টা, ভোটার ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার পেকুয়া থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এতে তিন-চারশত জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামী করা হয়েছে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বারবাকিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ফাঁসিয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে অনধিকার প্রবেশ করে কেন্দ্র দখলের চেষ্টায় তিন-চার শতাধিক লোক পুলিশ ও ভোটারদের ওপর হামলা চালায়। তাঁদের ছোঁড়া ইটপাটকেলে পুলিশের এএসআই রূপম সেন, তৌহিদুল ইসলাম, কনস্টেবল আনিসুর রহমান, কাউচার আহমদ ও আব্দুল কাইয়ুম আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ইঁটের ১২০ টি টুকরো ও ১৫ টি লাঠি জব্দ করে।
মামলার বাদী নাজমুল হোসেন বলেন, হামলাকারীরা দা, লাঠি, ছুরি ও দেশীয় তৈরি অস্ত্র নিয়ে অতর্কিতভাবে ভোটকেন্দ্রে অনধিকার প্রবেশ করে। এসময় তাঁরা ইটপাটকেল নিক্ষেপের মাধ্যমে আতংক সৃষ্টি করে ভোটদানের উদ্দেশ্যে কেন্দ্রে আসা ভোটারদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের সদস্যদের লক্ষ্য করেও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। তা প্রতিহত করতে চাইলে তাঁরা পুলিশ সদস্যদের ঘেরাও করে সংঘবদ্ধভাবে আক্রমণ করে। এতে পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হয়। দুই ঘন্টাব্যাপী চলা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৩১ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও ৪ রাউন্ড গ্যাসসেল ছুঁড়ে।
এব্যাপারে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমার নির্দেশে পুলিশ ফাঁকা গুলি ও গ্যাসসেল ছুঁড়ে। ভোটকেন্দ্র দখল চেষ্টা, পুলিশ ও ভোটারদের ওপর হামলাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কাজ চলছে।
বারবাকিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ছালামত উল্লাহ বলেন, গত ২৮ নভেম্বর ৩য় ধাপের নির্বাচনে বারবাকিয়া ইউনিয়ন পরিষদের অপর আট কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হয়। ব্যালট ছিনতাইয়ের অভিযোগে ৬নং ওয়ার্ডের ফাঁসিয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতায় ৩০ ডিসেম্বর আমরা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করেছি। নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এখনো মাঠে আছে।
পেকুয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, হামলাকারীরা ভোটকেন্দ্র দখল করে ফের ব্যালট ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছে। তাঁরা যতই সংঘবদ্ধ হয়ে আক্রমণের চেষ্টা করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ততবারই তাঁদের রুখে দিয়েছে। এই একটি কেন্দ্রের নিরাপত্তায় আনসার, পুলিশ, ব্যার ও কোস্টগার্ডের দেড় শতাধিক সদস্যকে কাজ করতে হয়েছে।