হাছান মাহমুদ সুজন, কুতুবদিয়াঃ
শত প্রতিকূলতার মাঝে আন্দোলনে, সংগ্রামে, মিছিল মিটিংয়ে, বিরোধীদল কিংবা সরকার দলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে রাজপথে হোক বা মাঠে ময়দানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ একজন ব্যক্তি কুতুবদিয়ার সদর বড়ঘোপ ইউনিয়নের দক্ষিণ মগডেইল এর বাসিন্দা আবুল কালাম৷ সচরাচর তিনি সবার কাছে আবুল কালাম মেম্বার নামেই পরিচিত৷ ছিলেন তিনি একাধারে ৫ মেয়াদে বড়ঘোপ ৫নং ওয়ার্ড়ের ইউপি সদস্য। প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিন বছরের অধিক সময়ধরে৷ বর্তমানে দলীয় পদে সদর বড়ঘোপ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত আছেন৷ দলীয় পদে পদায়িত হলেও জনপ্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন তিনি সবসময় সকল জনতার৷ তবে হারিয়ে গেছে আগের সেই প্রাণ চাঞ্চল্য, সদা জনতার সুখে দুঃখে জনতার মাঝে ছুটে যাওয়ার উদ্দীপনা যেন অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে তাঁর৷ বঞ্চনা আর প্রহসনের গ্লানি বয়ে বেড়াতেই জীবনের কাছে ও যেন তিক্ত হয়েছেন তিনি আজ৷
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে তাঁর সফলতা ও সুখ্যাতি যতটুকুই থাক বরাবরই তিনি কখনো দলীয় আদর্শচ্যুত হননী কিংবা জনবিচ্যুত হননি, ছিলেন সদা জনতার কাতারে৷ গত ২৫(জুলাই) ২০১৯ইং অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার উপনির্বাচনে নিজ দক্ষতা ও যোগ্যতা বলে বড়ঘোপ ইউনিয়ন পরিষদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন যা বাংলাদেশ
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের পর্যবেক্ষণ এবং মতামতের ভিত্তিতে দেওয়া হয়৷ উল্লেখ্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কক্সবাজার জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, বর্তমান কুতুবদিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী নিয়মতান্ত্রিক দায়বদ্ধতার কারণে স্বেচ্ছায় বড়ঘোপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্বভার থেকে পদত্যাগ করলে উল্লেখিত ইউনিয়নে এই উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷
অনুষ্ঠিত এই উপনির্বাচনে আবুল কালাম আওয়ামী সমর্থিত নৌকা প্রতিকের প্রার্থী হলে ও নিজ দলেরই কিছু স্বার্থান্বেষী নেতাকর্মীর উদাসীনতা আর হীনম্মন্যতার ঘৃণ্য চক্রান্তের কারণেই মূলত তিনি ঐ নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারেন নি বলে মনে করেন এলাকাবাসী ও দ্বীপের সচেতন নাগরিকগন৷ অপরদিকে প্রতিপক্ষের পেশী শক্তি, ছলচাতুরী আর নিয়ম বহির্ভূত আর্থিক লেনদেনের দৌরাত্ম্য তো রয়েছেই৷ এই অপ্রত্যাশিত জবরদস্তি পরাজয়ের গ্লানি শুধু আবুল কালামের নয় বরং এই পরিকল্পিত পরাজয়ের দায় কুতুবদিয়ার আওয়ামীলীগ কখনো এড়াতে পারেনা, অনাকাঙ্খিত এই প্রহসনের পরাজয়ে যেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ও তাচ্ছিল্য করা হয়েছে বলে মনে করেন অনেকেই৷
প্রবীণ আওয়ামী সমর্থিত ব্যক্তিবর্গের মুখ থেকে শুনা যায় সারা জীবন আওয়ামীলীগের রাজনীতির একনিষ্ঠ ধারক বাহক আবুল কালাম এই নির্বাচনে সর্বস্ব হারিয়েছেন, পুনরায় তাঁকে নৌকা প্রতিক দিয়ে নির্বচন করার সুযোগ দিলে তাঁর প্রতি ন্যায় বিচার করা হবে৷ ত্যাগী এই রাজনীতিবীদের ত্যাগের ঋণ কি শোধ করবে আওয়ামী লীগ?
এব্যাপারে জানতে চাইলে আবুল কালাম বলেন-আমি নির্বাচনের দিন দলীয় কোন নেতাকর্মীকে মাঠে পাইনি এবং প্রশাসনের ব্যাপক বিরুধিতার মুখে আমার নির্বাচনী অবকাঠামো ভেঙ্গে পড়তে দেখে ঐ দিন বেলা ১২টার দিকে আমি নির্বাচন বর্জন করতে বাধ্য হয়েছি৷ পুলিশের এই রহস্যজনক আচরনে আমি মর্মাহত, আমার দলীয় নেতাকর্মীদের পাশে না পেয়ে আমি মর্মাহত৷ বঙ্গবন্ধু আমার আদর্শ, শেখ হাসিনা আমার নেত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ আমার দল৷ আমি সবসময় বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দলের রীতিনীতি মেনে চলতে পছন্দ করি, জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ আমার কাছে শিরোধার্য৷ আমি অভিমানী হতে পারি অকৃতজ্ঞ নই৷
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০