দোয়ার মাধ্যমে বান্দা সবসময় আল্লাহ তায়ালার কাছে নিজের প্রয়োজনের কথা তুলে ধরেন। দোয়া যেকোনো মুহূর্তে, যেকোনো সময় করা যায়। দোয়া করার জন্য নির্ধারিত কোনো সময় নেই। তবে প্রতিদিন এবং বছরের নির্দিষ্ট কিছু সময়ে সময়ে দোয়া কবুলের বিশেষ গুরুত্বের কথা বলা হয়েছে হাদিসে।
যেমন— আজান, ইকামতের মাঝের সময়, ফরজ নামাজের পরে, গভীর রাতে তাহাজ্জুদের সময় আল্লাহ তায়ালা দোয়া কবুল করেন। এমনকি শেষ রাতে আল্লাহ তায়ালা নিজেই বান্দার কোনো কিছু চাওয়ার অপেক্ষায় থাকেন। কেউ শেষ নিজের অভাব থেকে মুক্তি, ঋণ পরিশোধ, জীবনের শান্তি, গুনাহ থেকে ক্ষমার আবদার জানালে আল্লাহ তায়ালা তাকে তা দান করেন। হাদিসে দোয়া কবুলের বিশেষ মুহূর্তগুলোর কথা বর্ণিত হয়েছে।
মধ্য শাবানের রাত বা শবে বরাতে দোয়া কবুল হয়। এ রাতটিতে বান্দা আল্লাহ তায়ালার কাছে মনের আকুতি ঢেলে মোনাজাত করতে পারেন। এই রাতে দোয়া কবুলের বিষয়ে বিখ্যাত শাফেয়ী মাজহাবের ইমাম, ইমাম শাফেয়ী রহ. বলেন—
পাঁচ রাতে দোয়া কবুল হয়। রজবের প্রথম রাত, দুই ঈদের রাত, জুমার রাত ও শবে বরাত। এসব রাত সংক্রান্ত যেসব ফজিলত বর্ণিত হয়েছে, সেগুলোকে ইমাম শাফেয়ী মুসতাহাব মনে করতেন। (ইবনে রাজাবকৃত লাতায়েফুল মাআরিফ, পৃষ্ঠা : ১৩৭)
এ রাতে আল্লাহ তায়ালা মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন। মুয়াজ বিন জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত—
নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলা অর্ধ-শাবানের রাতে অর্থাৎ শাবানের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে তাঁর সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন। (সহিহ ইবনে হিব্বান: ৫৬৬৫)
ইমাম শাফেয়ী রহ.
ইমাম শাফেয়ী রহ.-এর পুরো নাম মোহাম্মদ ইবনে ইদ্রিস ইবনে আব্বাস ইবনে উসমান ইবনে শাফেয়ী। তিনি ১৫০ হিজরী মোতাবেক ৭৬৭ সালে ফিলিস্তিনের গাজায় জন্মগ্রহণ করেন। দু’বছর বয়সে তিনি মক্কায় চলে যান।
সেখানে তিনি শৈশবকালে আল-কুরআন হেফজ করেন এবং মাত্র ১০ বছর বয়সে ইমাম মালেক রহ.-এর ‘মুওয়াত্তা’ হাদীসের গ্রন্থটি মুখস্থ করেন। পনেরো বছর বয়সে তিনি ফতোওয়া দেওয়া আরম্ভ করেন। ইতিহাসের পাতায় ইমাম শাফেয়ী এক উজ্জল নক্ষত্রে নাম হয়ে আছে।