ডি এইচ মনসুর, চট্টগ্রাম :
বহুজাতিক মাইক্রোসফট কোম্পানিতে চাকরি পেয়েছেন চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গার জেলেপাড়ার সন্তান নিখিল দাস।
ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকির অদূরে এসপো সিটিতে মাইক্রোসফট অফিসে ল্যাব অপারেটর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন নিখিল দাশ।
নিখিল কাটগড় মুসলিমাবাদ জেলেপাড়ার বাসিন্দা কমলা দাসের পুত্র।
নিখিলের পড়াশোনা ইস্টার্ন রিফাইনারি মডেল হাইস্কুলে। পরে সরকারি সিটি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে কৃতিত্বের সাথে এইচএসসি পাশ করে ভর্তি হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে।
সেখান থেকে ২০১৫ সালে স্নাতক ও ২০১৭ সালে স্নাতকোত্তর শেষে পাড়ি জমান ফিনল্যান্ডের তামপেরে ইউনিভার্সিটিতে।
সেখানে পদার্থ বিজ্ঞানে মাস্টার্সে পড়াশোনা অবস্থায় কাজ করছিলেন সহকারী গবেষক হিসেবে। পরে নিখিলকে আর পিছনে ফিরে থাকাতে হয়নি।
ফিনল্যান্ডে অবস্থান করা নিখিল বলেন, আমার বাবা ৪ বছর বয়সে মারা যান। তখন সংসারের বোঝা কাঁধে নেন আমার মা কমলা দাস। তিনি একটি এনজিওতে চাকরি করে দিনরাত পরিশ্রম করে আমার লেখাপড়া চালিয়ে গেছেন।
সংসারের প্রয়োজনে পড়াশোনার পাশাপাশি আমরা একটি চায়ের দোকানও চালাতাম। পরে কলেজে পড়ার সময় আমি টিউশন করে নিজের খরচ চালতাম।
নিখিল বলেন,ইতোমধ্যে আমি মাইক্রোসফটে ল্যাব অপারেটর হিসেবে কাজ শুরু করেছি। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিলো জায়ান্ট কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করার। মাইক্রোসফটের পরিধি অনেক বড়। এখানে আমার মেধার পুরোটাই দেওয়া যাবে। আমি নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে কাজ করবো, যাতে দেশের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে পারি। এজন্য আমি সবার কাছে দোয়া প্রার্থী।
নিখিলের সাফল্যে দারুণ খুশি তার মা কমলা দাস।
তিনি বলেন, ছোট বেলা আমার ছেলে টিউশন করে নিজের পড়াশোনার খরচ চালিয়েছে। তার এই সাফল্যে আমি খুব গর্বিত ও আনন্দিত। আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে অনেক কষ্টে এই সংসার চালিয়েছি। ছেলেকে কখনো ভালো কিছু খাওয়াতে পারিনি। সে এখন যে পর্যায়ে পৌঁছেছে সবকিছু নিজের প্রচেষ্টায়। আশা করি, আমার ছেলে প্রত্যেক দরিদ্র পরিবারের জন্য একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে।