মুহা. ইকবাল আজাদ, ক্রীড়া প্রতিবেদক।
আইসিসির নতুন র্যাংঙ্কিং তালিকায় তিন সংস্করণে উত্থান পতন ঘটেছে বাংলাদেশ দলের। আজ (১লা মে) আইসিসির ওয়েবসাইটে প্রত্যেক দলের র্যাংঙ্কিং তালিকা প্রকাশ করা হয়। যেখানে বাংলাদেশ দল টেস্ট সংস্করণে একাধিক পয়েন্ট হারিয়েছে। ওয়ানডে সংস্করণে পয়েন্ট বৃদ্ধি পেলেও তালিকার পূর্বের স্থানে অবস্থান করছে। পাশাপাশি টি-টোয়েন্টি সংস্করণে বাংলাদেশের একাধিক পয়েন্ট বৃদ্ধির পাশাপাশি র্যাঙ্কিংয়েও উন্নতি হয়েছে।
আইসিসি র্যাংঙ্কিংয়ের সর্বশেষ হালনাগাদে ২০১৯ সালের মে থেকে শুরু করে এখন অব্দি খেলা ম্যাচের ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ এবং তার আগের দুই বছরের ম্যাচের জন্য ৫০ শতাংশ হারে পয়েন্ট বিবেচনা করা হয়েছে।টেস্ট তালিকায় আফগানিস্তানকে ৯ম স্থানে প্রদর্শন করলেও মূলত তারা তালিকার অন্তর্ভুক্ত হবে না। নবীন দল আফগানিস্তান এবং আয়ারল্যান্ড পর্যাপ্ত পরিমাণ ম্যাচ না খেলায় রেটিং পয়েন্ট বেশি থাকা সত্ত্বেও তারা তালিকার বাহিরে অবস্থান করবে।
গত জিম্বাবুয়ে সিরিজে টেস্টে বাংলাদেশ দল জয় লাভ করলেও পূর্বের ম্যাচগুলোতে ইনিংস ব্যবধানেও হেরেছে বাংলাদেশ। গত পাকিস্তান সিরিজ, ভারত সিরিজ এবং নবীন আফগানিস্তানের সাথে টেস্টে হেরেছে মুমিনুলের দল। ফলে টেস্ট র্যাঙ্কিং থেকে ৫ পয়েন্ট হারিয়েছে বাংলাদেশ। রেটিং পয়েন্ট বিবেচনায় বাংলাদেশ থেকে ২ পয়েন্ট (৫৭) বেশি নিয়ে বাংলাদেশের উপরে অবস্থান করছে নবীন দল আফগানিস্তান। তবে আফগানিস্তান তালিকার অন্তর্ভুক্ত না হওয়া বাংলাদেশ পূর্বের (৯ম) স্থানে অবস্থান করবে। দুই দশক আগে অভিষেক হওয়া বাংলাদেশ এখনো টেস্টের শিশু দল। পর্যাপ্ত ম্যাচ, মানসম্মত বোলার এবং ব্যাটসম্যানের ব্যর্থতায় নিয়মিত টেস্ট হেরেছে বাংলাদেশ দল। তাছাড়া ক্রিকেট বোর্ডের পর্যবেক্ষণের অভাবও এই দায়ে অভিযুক্ত হবে। প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট শিকার করার মতো বোলার খুঁজে না পাওয়ার ব্যর্থতা টিম ম্যানেজমেন্ট এর উপর বর্তাবে। ২০১৬ সাল থেকে গতকাল পর্যন্ত টেস্টে ভারত শীর্ষ স্থানে অবস্থান করেছিলো। বর্তমানে ভারতকে টপকে টেস্টে শীর্ষ স্থানে অবস্থান করছে অস্ট্রেলিয়া দল।
করোনা হামলায় বিশ্ব ক্রিকেট যেন থমকে আছে। বন্ধ হয়ে গেছে সকল ধরনের ক্রিকেট ম্যাচ। বাংলাদেশ সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছিলো জিম্বাবুয়ে সিরিজে। প্রিয় সংস্করণে র্যাংঙ্কিং তালিকায় উন্নতি অবনতি কিছুই হয়নি বাংলাদেশের। তবে রেটিং পয়েন্ট বেড়েছে। মাত্র ১ পয়েন্ট বেড়ে বাংলাদেশের বর্তমান রেটিং পয়েন্ট ৮৮। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের আরও কিছু জয় কিংবা বিশ্বকাপ পরবর্তী শ্রীলঙ্কা সিরিজের আত্মসমর্পণ হালনাগাদে কিছুটা হলেও কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যথায় তালিকায় একটুও হলেও উন্নত বাংলাদেশকে দেখা যেতো। ২০১৫ সালের পরে ওয়ানডেতে বাংলাদেশ অন্যতম পরাশক্তি। তবে এর ধারাবাহিকতা দেশের বাহিরেও চলমান রাখতে হবে। পাশাপাশি হুট করে কাউকে পরিবর্তন না করে একজন ক্রিকেটারকে নির্দিষ্ট পজিশনে দীর্ঘ সময় সুযোগ দিতে হবে। ওয়ানডে সংস্করণের শীর্ষে আছে গত বিশ্বকাপ জয়ী ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল। পর্যায়ক্রমে আছে ভারত এবং বিশ্বকাপের রানার্সআপ নিউজিল্যান্ড।
একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ যতটা ফেভারিট, টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি সংস্করণে ততটা আন্ডারডগ। তবে টেস্টে উন্নতি না হলেও টি-টোয়েন্টিতে কিছুটা হলেও পরিবর্তন এসেছে বাংলাদেশ দলের। বিশ্বকাপের পর ত্রিদেশীয় সিরিজে ফাইনালে উঠেছিলো বাংলাদেশ দল। গত ভারত সিরিজে তাদের মাটিতে ভারতকে এক ম্যাচ হারিয়েছিলো বাংলাদেশ। সিরিজের শেষ ম্যাচেও লড়াই করেছে বাংলাদেশ দল। পাকিস্তান সিরিজে আত্মসমর্পণ করলেও গত জিম্বাবুয়ে সিরিজে ব্যাটের ঝলক দেখিয়েছে লিটন-সৌম্যরা। তাতেই ২ রেটিং পয়েন্ট বৃদ্ধিতে এক ধাপ এগিয়ে সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ৮ম স্থানে অবস্থান করছে মাহমুদউল্লাহর দল। তরুণ ক্রিকেটারদের সাথে সিনিয়রদের ব্যাটিং সহযোগিতা পেলে উন্নতির দরজা আরেকটু প্রসস্থ হবে বাংলাদেশ দলের।
২০০৭ সালে বিশ্ব ক্রিকেটে টি-টোয়েন্টি সংস্করণের অভিষেক ঘটে। তারপর থেকে অস্ট্রেলিয়া দলের কখনোই শীর্ষ স্থান ছুঁয়ে দেখা হয়নি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এক যুগ পার হওয়ার পরে সেই সৌভাগ্য লাভ করে অস্ট্রেলিয়া দল। দীর্ঘসময় শীর্ষ স্থান দখল করা পাকিস্তানের অবস্থান ৪র্থ। পর্যায়ক্রমে ইংল্যান্ড এবং ভারত দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে। ৭ম স্থানে থাকা আফগানিস্তান বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে এক রেটিং পয়েন্ট কমে ১০ম স্থানে আছে। টি-টোয়েন্টির ফেরিওয়ালা খ্যাত ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল ৯ম স্থানে অবস্থান করছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০