ভারত কাল ৭ উইকেটে ৪৪৩ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণার পর অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। প্রশ্ন উঠেছিল, একটু তাড়াতাড়ি ইনিংস ঘোষণা হয়ে গেল না? বেশি দিন আগের কথা নয়, মাত্র দুই বছর আগে অস্ট্রেলিয়ারই বিপক্ষে ঠিক এই রানেই প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে পরে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিল পাকিস্তান। বিরাট কোহলি হলে হয়তো জবাবে বলতেন, আরে ওটা এই অস্ট্রেলিয়া নয় স্টিভ স্মিথ আর ডেভিড ওয়ার্নারের অস্ট্রেলিয়া। টিম পেইনের এই অস্ট্রেলিয়া তো ফলোঅনই এড়াতে পারল না!
কোহলিকে নিয়ে এই রূপক কল্পনাকে মেলবোর্নের বাইশ গজে বাস্তবে অনূদিত করেছেন ভারতের বোলাররা। পাকিস্তানের বিপক্ষে সেই টেস্টে স্মিথ ও ওয়ার্নারের সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসেই বিশাল সংগ্রহ পাওয়ায় জয়ের মুখ দেখেছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু পেইনের এই অস্ট্রেলিয়ায় যে একজন স্মিথ কিংবা ওয়ার্নার নেই। যাঁরা আছেন তাঁরা ফলোঅনও কাটাতে পারলেন না। আজ তৃতীয় দিনে চা-বিরতির পর শেষ সেশনের খেলা শুরুর চতুর্থ ওভারের মধ্যেই অস্ট্রেলিয়া ১৫১ রানে অলআউট। কেউ ফিফটি পর্যন্ত পাননি! সর্বোচ্চ ২২ রান এসেছে পেইন ও মার্কাস হ্যারিসের ব্যাট থেকে। ২৯২ রানে এগিয়ে থেকেও অবশ্য অস্ট্রেলিয়াকে ফলোঅনে পাঠাননি ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি।
কাল বিনা উইকেটে ৮ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছিল অস্ট্রেলিয়া। আজ তাঁদের ব্যাটিং অর্ডারকে তাসের ঘর বানিয়ে ছেড়েছেন জাসপ্রীত বুমরা। ৩৩ রানে ৬ উইকেট নিয়েছেন এই পেসার। এক পঞ্জিকাবর্ষে এশিয়ার প্রথম বোলার হিসেবে ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইনিংসে ন্যূনতম ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়লেন বুমরা।
আজ অবশ্য ভারতকে ভালো শুরু এনে দিয়েছেন ইশান্ত শর্মা। অস্ট্রেলিয়ার ২৪ রানে ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চকে ফেরান তিনি। মধ্যাহ্নভোজ বিরতির আগে ৮৯ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। এর মধ্যে শন মার্শ ও মার্কাস হ্যারিসকে তুলে নেন বুমরা। গতি আর স্লোয়ারের মিশেলে আজ তিনি অসাধারণ বল করেছেন। দ্বিতীয় সেশনে ৫৬ রান তুলতে আরও ৩ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া (৭ উইকেটে ১৪৫)। শেষ সেশনে বুমরা নিজের দুই ওভারে নিয়েছেন ৩ উইকেট। প্রথম ওভারে পেইনকে (২২) তুলে নেওয়ার পর দ্বিতীয় ওভারে লায়ন ও হ্যাজলউডকে ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস গুঁড়িয়ে দেন বুমরা।
অস্ট্রেলিয়াকে তাঁদের মাঠে সর্বশেষ ফলোঅনে পাঠিয়েছিল ইংল্যান্ড। ১৯৮৮ সালে সিডনি টেস্টে। এরপর অস্ট্রেলিয়া তাদেরই ঘরের মাঠে দুবার ফলোঅনে পড়েছে, এই দুবারই প্রতিপক্ষ ভারত। ২০০৪ সালে সিডনি টেস্টের পর এবার মেলবোর্ন টেস্ট। কিন্তু এই দুবারই প্রতিপক্ষকে ফলোঅনে না পাঠিয়ে ভারত ব্যাটিংয়ে নেমেছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের স্কোর বিনা উইকেটে ৮ রান। দুই ইনিংস মিলিয়ে এরই মধ্যে ৩০০ রানের লিড নিয়েছে কোহলির দল।