মুহা. ইকবাল আজাদ।
উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাইটার পাইলট, গ্রুপ ক্যাপ্টেন সাইফুল আজম মৃত্যুবরণ করেছেন। আজ দুপুর ১টায় ঢাকার মহাখালি ডিএসএইচও’র তার নিজ বাস ভবনে ইন্তেকাল করেন। পাবনা জেলার খাগড়বাড়িয়া এলাকায় ১৯৪১ সালে জন্ম নেওয়া এই পাইলট বিশ্বের ৪টি বিমানবাহিনীতে কাজ করেছেন। তাছাড়া দুইটি ভিন্ন প্রতিপক্ষ ভারত ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই করার অনন্য কৃতিত্ব রয়েছে তার। মৃত্যুকালে এই কিংবদন্তীর বয়স ছিল ৮০ বছর।
পাকিস্তান বিমান বাহিনী এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনী মিলিয়ে দুই দেশের এয়ারফোর্সে দীর্ঘ ২০ বছর কর্মরত ছিলেন সাইফুল আজম। তাছাড়া ১৯৬৭ সালে জর্ডান এবং ইরাকের হয়ে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন এই ফাইটার পাইলট। ছয়দিনের যুদ্ধে তিনি ‘হকার হান্টার’ নিয়ে জর্ডানের বিমান বাহিনীর পক্ষে আকাশে উড্ডয়ন করেন। দুই দিনের ব্যাপ্তিতে তিনি দুইটি ভিন্ন স্থানে আক্রমণ করেন। তাতে একটি বিমান ভূপাতিত হয় এবং অন্যটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অসীম সাহসিকতা প্রদর্শনের জন্য তাকে জর্ডানের ‘অর্ডার অব ইসতিকলাল‘ ও ইরাকি সাহসিকতা পদক ‘নুত আল শুজাত’ প্রদান করা হয়। ২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী তাকে ‘লিভিং ঈগল’ উপাধিতে সম্মানিত করে।
স্বাধীনতার পর থেকে সাইফুল আজম বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে ‘ডিরেক্টর অব ফ্লাইট সেফটি’ ও ‘ডিরেক্টর অব অপারেশন্স’ হিসেবে যোগ দান করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিমানঘাঁটির কমান্ড পদ লাভ করেন। ১৯৭৭ সালে বিমান বাহিনীতে ‘গ্রুপ ক্যাপ্টেন’ হিসেবে পদোন্নতি পান। ১৯৭৯ সালে গ্রুপ ক্যাপ্টেন হিসেবে অবসর নেন।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর ফাইটার পাইলট সাইফুল আজম দেশে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সিভিল এভিয়েশন অথরিটি (সিএএ) এর দুইবার চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাছাড়া ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (এফডিসি) এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেছেন। পাশাপাশি নিজ এলাকা পাবনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য পদেও নির্বাচিত হয়েছিলেন।