মুহা. ইকবাল আজাদ, ঢাকা।
১৫ বলে রান শূন্য। ১৬ বলে পেয়েছেন প্রথম রান। পরিসংখ্যান-ই বলে দেয় শুরুর দিকে কতটা চাপে ছিলেন বাবর আজম। ব্যক্তিগত ২ রান যোগ করতে তাইজুলের ফ্লাইড বলে বল আকাশে।পেছনে ছুটছেন দীর্ঘদেহী ইবাদত হোসেন। পেয়েছেন হাতের নাগালেও। কিন্তু হাতের আঙুলের আগায় লাগিয়েও ছেড়ে দিয়েছেন সহজ ক্যাচ। তা দেখে নিশ্চয়ই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন বাবর আজম । মনে মনে হয়তো ধন্যবাদ দিয়েছেন ইবাদতকেও। বাবরের ক্রিকেটীয় ধন্যবাদ জ্ঞাপন যে কারো জন্য কাল হতে পারে এটা সকলেরই জানা। হয়েছেও তাই। অর্ধশতক-শতক-পুনরায় অর্ধশতকের (১৪৩*) কাছাকাছি টেস্টের এই সাত নাম্বার ব্যাটসম্যান। একজন বাবরকে সুযোগ দিলে কি হতে পারে, তার প্রতিফলন মাঠে দাঁড়িয়ে দেখলো টিম বাংলাদেশ।
দিনের শুরুতে ব্যাটিংয়ে নামে পাকিস্তান দল। বোলাররা শুরুটা করেছিলেন স্বপ্নের মতো। দলীয় দ্বিতীয় ওভারে আবিদ আলীকে লিটনের হাতে বোকা বানিয়ে ড্রেসিং রুমে ফেরান আবু জায়েদ। শুরুতে বোলারদের লাইন-লেন্থ আর সুইং কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে দর্শকদের মনে। দিন যত বেড়েছে, ততটাই যেন বিবর্ণ হয়েছে বাংলাদেশের বোলাররা। দ্বিতীয় উইকেট পেতে বাংলাদেশকে দিতে হয়েছে ৯৩ রান। কাপ্তান আজহার আলীকে ফিরিয়ে আবু জায়েদের প্রথম সেশনের পাস মার্ক। তবে দ্বিতীয় সেশন থেকে ছেড়ে কথা বলেননি পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা।
পেসারদের মধ্যে কিছুটা হলেও উজ্জ্বল ছিলেন আবু জায়েদ। ৩.৩০ ইকোনমিতে বলে করে নিয়েছেন ২ উইকেট। ইবাদত ও রুবেল ছিলেন নিতান্তই বিবর্ণ। বেধম পিটুনি খাওয়া ইবাদত রান দিয়েছেন ওভারপ্রতি ৫.২৫ গড়ে। রুবেল হোসেনও কম যাননি। সতেরো ওভারে ৪.৫২ গড়ে রান বিলিয়ে ছিলেন উইকেট শূন্য। অবশ্য শূন্যের সংখ্যাকে রুবেল একে পরিনত করতে পারতেন। শন মাসুদের কট বিহাইন্ডের আবেদন করেননি কোন ফিল্ডার। লিটন এবং নিজের ভুলে উইকেট পেতে গিয়েও না পাওয়ার তালিকায় রুবেল হোসেন। ৮৬ রানে ইনিংসকে টেনে মাসুদ আউট হন তিন অঙ্কের ফিগার ছুঁয়ে।
দুই দশক টেস্ট খেলে বাংলাদেশ যে এখনো টেস্টের শিশু, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ২০ উইকেট নেওয়ার সামর্থ্যহীন কোন দলই টেস্টে ভালো করবে না। যে দেশে ভালো বোলার নেই, সে দেশের ঘরোয়া লীগে রানের রেকর্ড হবে এটাই স্বাভাবিক। সাথে আন্তর্জাতিক লেভেলে এসে ব্যাটসম্যানদের অসহায় আত্মসমর্পণ দেখতে হবে এটাই অনুমেয়। টেস্টে ভালো করতে ম্যাচ ফি বাড়ানোর পাশাপাশি ভালো বোলারও খুঁজে বের করা দরকার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের। তাতে যদি বাংলাদেশ শিশু থেকে কিশোর বয়সে পদার্পণ করে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০