স্পোর্টস ডেস্ক:
করোনার প্রকোপে অনির্দিষ্টকালের জন্য ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) স্থগিত করেছে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড। বলা ভালো স্থগিত করে দিতে বাধ্য হয়েছে তারা। কারণ গত কিছুদিন ধরেই করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে ভারত। তার প্রভাব পড়েছে আইপিএলেও। একের পর এক ক্রিকেটার আক্রান্ত হচ্ছেন করোনায়। তারপরও সমালোচনা-বিতর্ক উড়িয়ে চলছিল ২০ ওভারের এই ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুরে আইপিএল স্থগিতের ঘোষণা এসেছে।
আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘বিসিসিআই খেলোয়াড়, কর্মী আর আইপিএল আয়োজনে জড়িত অন্যান্য অংশগ্রহণকারীদের সুরক্ষার সঙ্গে কোনও আপস করতে চায় না। এই অংশীদারদের সকলের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য এবং সুস্বাস্থ্যকে সামনে রেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
করোনাভাইরাস অতিমারিতে রীতিমতো দিশেহারা ভারত। দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছেই। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ভারতে ৩ হাজার ৪৪৯ জন মারা গেছেন। এ অবস্থায় আইপিএলের মতো বিনোদন ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়া নিয়ে উঠেছিল প্রশ্ন। বেশ কয়েকজন বিদেশি ক্রিকেটার শঙ্কা নিয়ে এরইমধ্যে ফিরেছেন নিজ দেশে।
এরমধ্যে জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থেকেও যখন একের পর এক ক্রিকেটার আক্রান্ত হচ্ছিলেন করোনায়, তখন স্থগিত ছাড়া উপায় ছিল না! এখন অব্দি আট ফ্র্যাঞ্চাইজির চারটিতে করোনা পজিটিভ হয়েছেন খেলোয়াড় ও সাপোর্ট স্টাফরা। এ কারণেই এই মৌসুমের জন্যই স্থগিত হয়ে গেলো আইপিএল।
আইপিএল স্থগিতের খবরটি সংবাদসংস্থা এএনআইকে নিশ্চিত করেন ভারতীয় ক্রিকেটে বোর্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজীব শুক্লা। আইপিএল চেয়ারম্যান ব্রিজেশ প্যাটেল জানিয়েছেন নিরাপত্তার কথা ভেবেই তারা এই আয়োজন স্থগিত করেছেন।
আইপিএল দলগুলোর ওপর করোনা যেভাবে থাবা বসিয়েছে, তাতে একের পর এক ম্যাচ বাতিল হয়ে যেতে শুরু করে। এ কারণে টুর্নামেন্ট এগিয়ে নিয়ে যাওয়াটাই অসম্ভব হয় পড়ে। এ অবস্থায় আইপিএল বাতিল করে দিতে বাধ্য হল আয়োজকরা।
একাধিক ভারতীয় ও বিদেশি ক্রিকেটার আইপিএল খেলতে রাজি ছিলেন না। কলকাতা নাইট রাইডার্স, চেন্নাই সুপার কিংস, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও দিল্লি ক্যাপিটালস দলের ক্রিকেটার এবং সদস্যরা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার খবর আসে ঋদ্ধিমান সাহা ও অমিত মিশ্র করোনা আক্রান্তের। চেন্নাই দল ইতিমধ্যেই ৬ দিনের জন্য কঠোর নিভৃতবাসে আছে। এই মুহূর্তে আইপিএলের ৬টি দল কঠোর আইসোলেশনে আছে।
সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এতোটাই জটিল হয়ে উঠেছিল যে স্থগিতের পথেই হাঁটতে হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলেই কেবল ফের এই টুর্নামেন্ট মাঠে গড়ানোর কথা ভাববে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড।
রাফিউল ইসলাম রাব্বি / নিউজ ভিশন