ফাইল ছবি
ফারহানা সুপ্তি, নিজস্ব প্রতিবেদক :
আবরার হত্যায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীদের বিচারের দাবিতে উত্তাল বুয়েট ক্যাম্পাস, সারাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষার্থী রা। বুয়েট ক্যাম্পাসে সকল ছাত্রসংগঠন নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বুয়েটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুন্তাসির হাসান বলেন, “বুয়েটে কোন লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র সংগঠন থাকার মানে হয়না। ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্র শিবিরসহ সকল লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র সংগঠনকে ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করা উচিৎ। যদি কারো রাজনীতি করার প্রবল ইচ্ছা থাকে, তবে ছাত্র সংসদগুলো চালু করা হোক।”
মুন্তাসির আরো বলেন, “ভাবতে অবাক লাগে এটাই এখন বুয়েট! কয়েকদিন আগেও আমি বুয়েটের র্যাঙ্কিং নিয়ে মাথা ঘামাতাম! যেখানে মানুষের জীবনের নিরাপত্তাই নাই, সেখানে আবার পড়াশুনার চিন্তা! আমার ডিপার্টমেন্টের ‘১৭ ব্যাচের একটা ছেলেকে ছাত্রলীগের কতগুলো অমানুষ পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। এই ঘটনায় অনেকেই হয়তো অবাক হয়েছে। তবে আমি যতটা অবাক হওয়ার কথা ততটা হতে পারিনি। এর কারণ গত ২/৩ বছর ধরে বুয়েটের হলগুলোর পরিস্থিতি এমনই।
তিনি আরো জানান, “গত বছর এই শেরে বাংলা হলেই ‘১৭ ব্যাচেরই এক ছেলেকে পিটিয়ে পা ভেঙে দিয়েছিল এই ছাত্রলীগ। কিন্তু এর কোন শাস্তি বা বিচার কিছুই হয়নি। গত বছর এই শেরে বাংলা হল থেকেই দাইয়ান নাফিসকে ‘শিবির’ হিসেবে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে পুলিশের কাছে দিয়ে দেয়। তখন তো স্বয়ং ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী নিজেই এসেছিল।
ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি নিয়ে মুন্তাসির আরো জানান, “এই ঘটনার কিছুদিন পরেই ‘১৪ ব্যাচের আরেক ছেলেকে পিটিয়েছিল। ২৭ টা সেলাই পড়েছিল শুনেছি। মজার ব্যাপার হচ্ছে – বুয়েট প্রশাসন এতে মাথা ঘামানোর প্রয়োজনই মনে করেনি! সত্যিকথা বলতে কি গত ৩০ বছরে বুয়েটে এই ছাত্ররাজনীতির কোন সুফল আমরা পেয়েছি সেটা কি কেউ বলতে পারবে?
বুয়েটের প্রশাসন সম্পর্কে মুন্তাসির আক্ষেপ করে জানান, “ছাত্রলীগের তাণ্ডব কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারতো বুয়েট প্রশাসন। কিন্তু তাদের নীরবতা এদেরকে যা ইচ্ছা তাই করার প্রশয় দিয়ে দিয়েছে”।
এদিকে সারাদেশে আজ আবরার হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, আবরার বুয়েটের ইইই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। রবিবার দিবাগত রাতে আবরারকে অমানুষিক নির্যাতন করে বুয়েটের শের ই বাংলা হলের দ্বিতীয় তলার ‘ই ‘ ব্লকের সিড়ির নিচে ফেলে রেখে যায় হত্যাকারী রা। ঘঠনাস্থলে আবরার মৃত্যু বরণ করে। সকাল ৬টা নাগাদ আবরারের লাশ ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক ‘আবরার’ কে মৃত ঘোষনা করেন।