এম এ মোতালিব ভুঁইয়া:
বিদ্যালয়ের দুই ভবনের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে মেইন রাস্তা। রাস্তাটি দিয়ে দ্রুত গতিতে চলাচল করছে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। আর রাস্তার দুই পাশে রয়েছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদানের শ্রেণিকক্ষ। বিদ্যালয়ের দুই ভবনের মাঝ দিয়ে মেইন রাস্তা থাকায় শিক্ষার্থীরা টিফিনের সময় সেখানেই খেলায় মেতে উঠছে। এতে যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা।
বলছিলাম সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বোগলাবাজার ইউনিয়নের পেস্কারগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কথা। ওই বিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় আড়াই শতাধিক শিশু শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।
এই বিদ্যালয়ের দুই ভবনের মাঝ দিয়ে মেইন রাস্তা সীমানা প্রাচীর না থাকায় শিক্ষার্থীরা টিফিনের সময় সেখানেই খেলায় মেতে উঠছে এমনকি বিদ্যালয় ছুটির পর কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে পড়ে। এতে যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। ঝড়ে যেতে পারে কোন কোমলমতি শিক্ষার্থীর প্রাণ এমনটাই অভিযোগ করে বিদ্যালয়ের অভিবাবকরা ইতি পূর্বে এক শিশুর স্কুল ছুটির পর অটোরিকশার সঙ্গে ধাক্কা লেগে মারাত্মক জখম হয়।
জানাযায় পেস্কারগাও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৭০ সালে স্থাপিত হয়। । ৪ জন শিক্ষক ও ২৪০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয়ের দুই ভবনের মাঝ দিয়ে বাগানবাড়ি -রিংকু বর্ডার হাট,পেস্কারগাও ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসা,পেস্কারগাও জামে মসজিদ,জ্ঞানালোক ক্যাডেট একাডেমী, কৈয়াজুরী কমিউনিটি ক্লিনিক,বাগানবাড়ি বিওপি, দোকানপাট, দোয়ারাবাজার উপজেলা সদর,লক্ষীপুর ইউপি ও বাংলাবাজার যেতে হয় এই কারনে বর্তমানে রাস্তাটি চরম ব্যাস্ততম রাস্তায় পরিনত হয়েছে। এই বিদ্যালয় দুই ভবনের মাঝ দিয়ে রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার মানুষ চলাচলের জন্য ব্যাবহার করে । অত্যান্ত ব্যস্ত ও জনবহুল এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য ভ্যান,সাইকেল, অটোরিকসা, ট্রলি, মটরসাইকেল, ট্রাক ও অনান্য গাড়ী চলাচল করে । ফলে চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এই বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,পেস্কারগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি দুই ভবনের মাঝের রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে সীমানা প্রাচীর না থাকায় এই বিদ্যালয়ের মাঠে ছাত্র-ছাত্রীরা খেলা করতে করতে মাঠ ছেড়ে রাস্তাায় চলে আসে। শিক্ষার্থীরা অল্প বয়সের হওয়ায় দুর্ঘটনার বিষয়টি বিবেচনা না করেই রাস্তার মধ্যে ছুটাছুটি করতে থাকে। তাই অসাবধানতা বশত যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
এই বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী তানিসা আক্তার জানায়,বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর হলে আমরা নিরাপদে স্কুলের মাঠে খেলাধুলা করতে পারবো।অভিভাবকরা বলেন, ছেলে-মেয়েরা মেইন রোডে পাশে খোলা মাঠে খেলাধুলা করে, এখানে দুর্ঘটনার আশংকা থেকেই যায়। তাই সীমানা প্রাচীরটি স্থাপন করা খুবই দরকার। সে কারনে আমরা বাচ্চাদেরকে স্কুলে পাঠিয়ে বেশ দুচিন্তায় থাকি।
প্রধান শিক্ষক মো:হারুনুর রশিদ বলেন, সীমানা প্রাচীর না থাকার ফলে সব সময় শিক্ষার্থীদের নিয়ে দুচিন্তায় থাকি। সব সময় সতর্ক থাকার পরেও যে কোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এই বিদ্যালয়টি মেইন রাস্তা সংলগ্ন হওয়ায় পরও সীমানা প্রাচীর নির্মান করা হয়নি। বিষয়টি সংচিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে তিনি বলেন খুব শ্রীগ্রই সীমানা প্রাচীর নির্মান করা হবে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শামছুর রহমান জানান, দুই পাশে বিদ্যালয়ের ভবন রেখে মাঝ দিয়ে রাস্তা দিয়ে বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে শিশুরা সময় পেলেই রাস্তাটির উপর খেলায় মেতে উঠে। তাছাড়া বিদ্যালয়ের দুই পাশেই ভবন থাকার কারণে শিশুদের শ্রেণিকক্ষে যাওয়ার সময়ও রাস্তা পার হয়ে যেতে হয়। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাই তারা শিশুদের নিরাপত্তায় বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
বোগলাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মিলন খান বলেন,বিদ্যালয়ে সীমানা প্রাচীরটি স্থাপন করা খুবই দরকার।মাননীয় সংসদসদস্য মুহিবুর রহমান মানিক মহোদয়ের সাথে আলোচনা করে খুব শ্রীগ্রই সীমানা প্রাচীরের ব্যবস্থা করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাংশু কুমার সিংহ বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। সমস্যাটি সমাধানে উদ্যোগ নেয়া হবে।’
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০