তাওহীদ জিহাদ, টঙ্গী :
ঠিক এক বছর আগে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত ঐতিহাসিক “জুলাই অভ্যুত্থান”-এর রেশ ধরে টঙ্গীর ঐতিহ্যবাহী তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার পকেট গেইট—বর্তমানে ‘শহীদ নাসির গেট’—ইট-সুরকির প্রাচীর তুলে বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।
উত্তরা-টঙ্গী অঞ্চলে আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র ছিল এই মাদ্রাসাটি। শিক্ষার্থীদের সাহসী ও সংগঠিত ভূমিকা আন্দোলনকে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেয়। এই ভূমিকার প্রতিক্রিয়ায় তৎকালীন প্রশাসন শুরু করে দমন-পীড়নের এক নির্মম অধ্যায়।
আন্দোলনের ঠিক পরপরই গভীর রাতে মাদ্রাসার মূল প্রবেশপথে ইট-সুরকির দেয়াল তুলে সেটিকে কার্যত অবরুদ্ধ করে ফেলা হয়। অভিযোগ রয়েছে, সরকারের মদদপুষ্ট ‘পুলিশ লীগ’ ও কিছু ‘আওয়ামী লীগ’ নামধারী ক্যাডার মাদ্রাসাটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, তৎকালীন অধ্যক্ষ মাওলানা মিজানুর রহমানকে ‘ক্রসফায়ার’-এর হুমকি দেওয়া হয়েছিল, যা পুরো শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকমহলে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।
উল্লেখযোগ্য যে, জুলাই অভ্যুত্থানে এই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অসাধারণ সাহসিকতার পরিচয় দেন। প্রাণ হারান পাঁচজন, আহত হন পাঁচ শতাধিক। শহীদদের মধ্যে আলিম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাসির পুলিশের গুলিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের এশিয়া পাম্পের সামনে শহীদ হন। তাঁর স্মরণে মাদ্রাসার বন্ধ গেটটির নামকরণ করা হয় “শহীদ নাসির গেট”।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মতে, এটি কেবল একটি প্রতিষ্ঠানকে দমন করার প্রয়াস নয়; বরং সমাজের স্বাধীনচেতা ও প্রতিবাদী কণ্ঠগুলোকে চিরতরে স্তব্ধ করার রাষ্ট্রীয় প্রচেষ্টা ছিল এটি।
এই দিনটি আর শুধু একটি তারিখ নয়—বরং বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রতিবাদ, আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের এক কালো এবং গৌরবময় অধ্যায়।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০