মোঃ শিবলী সাদিক, রাজশাহী।
‘আসে বসন্ত ফুল বনে, সাজে বনভূমি সুন্দরী/চরণে পায়লা রুমুঝুমু, মধুপ উঠিছে গুঞ্জরী’ পুষ্পিত সৌরভে এভাবেই ঋতুরাজ বসন্ত তার আগমনের বার্তা নিয়ে প্রকৃতির দরজায় কড়া নাড়ছে। শীতের আমেজ মুছে গিয়ে প্রকৃতির রঙিন সজ্জায় শীতের রুক্ষতা কেটে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। বৃক্ষের পাতা ঝরে জায়গা করে দেয় নতুন কুড়ি। বসন্তদূত কোকিলের অবিরাম কুহু ডাক সবার কানে কানে বলে যায় বসন্ত এসে গেছে।
তাইতো মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলার ঋতুরাজ বসন্তকে স্বাগত জানাতে ঐতিহ্যবাহী দেশসেরা বিদ্যাপীঠ রাজশাহী কলেজ প্রকৃতির রঙ বেরঙের ফুলের পাশাপাশি সাজছে রং তুলির আঁচড়ে। রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আব্দুল খালেকের নির্দেশনায় বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ইকবাল হোসেনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আলপনায় অংশ নিয়েছে কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
হরেক রকমের রং-তুলির ছোঁয়া লাগছে ক্যাম্পাসের মাটিতে। লাল, নীল, সবুজ, হলুদসহ নানা রঙের তুলিতে তৈরি হচ্ছে দেয়ালচিত্র, রঙিন হচ্ছে ক্যানভাস। কলেজের রবীন্দ্র-নজরুল চত্বর, স্বাধীনতা চত্বর, পেন্সিল কর্নার, হাজী মোহাম্মদ মহসিন ভবনের সামনের রাস্তা, শহীদ কামরুজ্জামান ভবনের সামনের রাস্তা থেকে প্রশাসনিক ভবনের সামনের অংশসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বাঙালি ও লোকশিল্পের অন্যতম অংশ আলপনা শোভা পাচ্ছে ।
আলপনায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, বসন্ত উৎসবে প্রতিবছরই বসন্ত বরণ উপলক্ষে কলেজে আলপনা আঁকা হয়। এ বছরও বসন্তের আবাহনে আলপনা আঁকা হচ্ছে।
সহযোগী অধ্যাপক মো. ইকবাল হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা কঠোর পরিশ্রম দিয়ে সারাদিন আলপনা আঁকছে। আজ যারা আলপনায় হাত বাড়িয়েছে, তারা কেউ পাকা শিল্পী নয়। এটা তাদের ভালোবাসার থেকে, ভালোলাগা থেকে। এই আলপনায় ফুটিয়ে তুলেছে বসন্তের আমেজ, যা দেখে আমি অভিভূত। আলপনা যারা আঁকছে এবং এর সঙ্গে সহযোগিতার কাজে যারা জড়িত সবাইকে ধন্যবাদ। রাজশাহী কলেজ প্রতিবার এই ধরনের অনুষ্ঠান করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় এই আয়োজন।
রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আব্দুল খালেক বলেন, সবুজ চাদরে মোড়ানো ক্যাম্পাসটি নিজের মতো করে সাজিয়ে নিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। তারা সাজগোজসহ নানা শিল্পমুখী কাজে রাঙিয়ে চলছে অনবরত। বসন্তকে বরণ করতে ও ক্যাম্পাসকে রাঙাতে রাঙানো হচ্ছে বিভিন্ন আলপনা। সব চাপিয়ে এই রং তুলির আঁচড়ই যেন দোলা দেয় শিহরণ জাগানিয়া আবহে। এটা খুবই ভালো দিক। চারুকলা নামে কোনো বিভাগ না থাকার পরেও শিক্ষার্থীরা এমন কাজে আমাদেরকে আনন্দিত করছে।।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০