ফারহানা মাহবুবা
সামাজিক যোগাযোগের সবচেয়ে প্রাচীন মাধ্যম হলো চিঠিপত্র। সামাজিক যোগাযোগের বিপ্লব আসে টেলিফোন আবিষ্কারের ফলে। এরপর আসে ফ্যাক্স, ইমেইল। তারপর মোবাইল ফোন এসে যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করে। ইন্টারনেট আবিষ্কারের ফলে ইন্টারনেটে সাধারন মানুষের অ্যাকসেস দিন দিন বাড়তে থাকে।বর্তমানে আমাদের দৈনন্দিন জীবন ইন্টারনেট নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখন প্রযুক্তিবিহীন জীবন কল্পনাও করা যায়না। ইন্টারনেট ব্যবহার করে আমরা ক্রমান্বয়ে আধুনিক ঠিকই হচ্ছি। কিন্তু আমাদের সামাজিক বন্ধন গুলোতে দুরত্ব চলে আসছে।
সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী ৭৫.১৫% মানুষ ফেসবুক, ৬.৪১% টুইটার, ৩.৬২% মানুষ ইউটিউব ব্যবহার করছে। এভাবে একটি পরিবারের প্রায় প্রতিটি সদস্য কোনো না কোনো ভাবেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সংযুক্ত আছে। আমরা দিনের বেশিরভাগ সময় ফেসবুক, ইউটিউবের মতো সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে ব্যয় করছি। ফলে আমাদের কাছে পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে কাটানোর মতো সময় থাকেনা। সারাদিনের কাজ শেষে যখন আমরা ঘরে ফিরে আসি তখনও পরিবারকে সময় না দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যস্ত থাকি। আমরা মনে করছি, প্রযুক্তির কল্যাণে অনেক দূর থেকে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুদের খোঁজ নিতে পারছি। কিন্তু আসলে আমরা একে অপরের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। কারণ, সরাসরি প্রিয়জনদের সাথে সাক্ষাত করে যে অনুভূতি এবং ভালোবাসা পাওয়া যায় সেটা কখনো সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব হয়না। সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধু -বান্ধব বাড়ছে ঠিকই। কিন্তু বন্ধু বেশি হওয়ার কারণে সবার খোঁজ নেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে প্রকৃত বন্ধুগুলো একসময় হারিয়ে যায়। এখন আর আগের মতো পরিবারের সদস্যরা একসাথে গল্পগুজব করে না। আজকাল বড়রা পরিবারের ছোটদের সাথে সময় কাটায় না। সবাই সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যস্ত থাকে। ফলে শিশুরা নৈতিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এভাবেই আমরা একে অপরের কাছে থেকেও দূরে আছি। আমাদের উচিত সোশ্যাল মিডিয়ায় অপ্রয়োজনে সময় নষ্ট না করে পরিবার এবং বন্ধুদের জন্য সময় বের করা। তাদের সাথে সময় কাটানো। এতে করে আমরা নতুন কিছু শিখতে পারব, নতুন অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারব। এবং আমাদের সম্পর্কগুলোও মজবুত হবে।
লেখক:
শিক্ষার্থী,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
সদস্য, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০