১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন নিঃসন্দেহে বিশ্ব ভূ-রাজনীতির এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর তৈরি করা অগণতান্ত্রিক আচরণ, অকার্যকর সংসদ ও অর্থনৈতিক শোষণের প্রভাবে পূর্ব বাংলার সাধারণ মানুষ যে বঞ্চনা ও বৈষম্যের পাশাপাশি ক্ষুদা, অপুষ্টি, স্বাস্থ্যহীনতা, অদক্ষতা, শিক্ষার অভাবে ভুগছিল তা ছিল অবর্ননীয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বিবিএস এর তথ্য অনুসারে ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ছিল ৩৪ মার্কিন ডলার। জিডিপি ছিল ৮০০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা এবং মাথাপিছু আয় ছিল ১০০ ডলারের নিচে।
তবে স্বাধীনতার দীর্ঘদিন পরে বাংলাদেশের অর্থনীতি বেশ বদলে গেছে। শুরুর দিকে কৃষি নির্ভর অর্থনীতি থাকলেও তা বর্তমানে ধীরে ধীরে উৎপাদনমুখী শিল্প অর্থনীতিতে পরিণত হচ্ছে। রেমিটেন্স আর তৈরি পোশাক খাতকে বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদন্ড বলা যায়। এছাড়াও পাট, চা, চামড়া ও ঔষধের মতো রপ্তানিমুখী শিল্পসমূহের বিকাশ বাংলাদেশের অর্থনীতি কে করেছে দারুণভাবে সমৃদ্ধ। কৃষিতে সবুজ বিপ্লবের ফলে উৎপাদন বেড়েছে কয়েকগুন। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দূরদর্শী নেতৃত্ব ও অবকাঠামোগত পরিবর্তনের প্রভাবে স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা। বর্তমানে জিডিপির আয়তন ৬.৫৮ লাখ কোটি টাকা এবং মাথা পিছু আয় ২৮২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে
যে দেশকে একসময় তলাবিহীন ঝুড়ি বলে আখ্যায়িত করা হতো সে দেশ এখন পুরো বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে বিশ্বের ৩৫ তম অর্থনীতির দেশ। যদিও করোনা মহামারী ও বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের প্রভাবে চলমান অর্থনীতির অবস্থা কিছুটা সংকটময় তবে ধারণা করা হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতি যে ছন্দে আছে এভাবে চলতে থাকলে ২০২৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৪ তম অর্থনীতির রাষ্ট্রে উন্নীত হবে।
রাকিব হোসেন
শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০