পূর্ব প্রকাশের পর...
মাদকের করাল গ্রাসে বাংলাদেশ!
# কি আশ্চর্য !! এই ছোট্ট দেশে প্রতি বছর ৫০০ কোটি টাকার মাদক পাচার হয়। ১০ লাখ লোক এই ব্যবসার সাথে যুক্ত। যার অধিকাংশই তরুণ।
# মাদক দ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা “মানস” এর এক পরিসংখ্যানে বলা হয়,দেশে প্রতি সাড়ে ৬ সেকেন্ডে একজন করে ঘন্টায় ৪৫০জন মাদকাসক্ত বা ধুমপায়ীর মৃত্যু হয়। এতে আরো বলা হয়,একটি সিগারেটে ক্যান্সার উৎপাদক ২৮ টি উপাদান রয়েছে। একজন নারী ধুমপায়ীর হৃদরোগ হওয়ার আশংকা শতকরা ১ ভাগ। বাংলাদেশে ২০ থেকে ৩৪ বছর বয়সী ধুমপায়ীর সংখ্যা শতকরা ৮১ ভাগ,যার অধিকাংশই শিক্ষার্থী। মাদকাসক্তদের মধ্যে গড় পরতা হারে শতকরা ৪২ জন কোন না কোন অপরাধের সঙ্গে জড়িত। এছাড়া ঢাকা শহরের প্রথম শ্রেণীর কলেজ-বিশ্বিদ্যিালয়ের ৫ হাজারের বেশি ছাত্রী মারাত্মক পর্যায়ে মাদকাসক্তিতে জড়িয়ে পড়েছে।
# এক গবেষনায় দেখা যায়,ঢাকা শহরে বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত ছাত্র-ছাত্রীদের যাদের বয়স ১৫-৩০ বছরের মাঝে সেসব যুবকদের ৭০% এবং যুবতীদের ৫০% নেশাগ্রস্ত। এছাড়া ফিরোজ (১৯৮৮) সালে পর্যবেক্ষন করে দেখেছেন যে,মাদকাসক্তদের ৮৯% ৩০ বছরের নীচে। অতি সম্প্রতি দেশের শীর্ষ স্থানীয় কয়েকটি দৈনিকের জরিপ রির্পোটে দেখা যায়,নেশাগ্রস্ত ও নেশার চোরাচালান ও এই ব্যবসার সাথে জড়িত ৯০% ই হচ্ছে যুবক যুবতী,বস্তিবাসী ও কর্মসংস্থানহীন লোক।
# এক গোয়েন্দা রির্পোটে জানা যায়,অতি সম্প্রতি ইয়াবা নামক নীলনেশা টি চলচ্চিত্র ও শোবিজ জগতে ভয়ংকর ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু মাত্র চলচ্চিত্র পাড়া ও রাজধানীর অভিজাত এলাকায় ইয়াবাসহ মাদকদ্রব্য সরবরাহের জন্য ১ হাজার সুন্দরী নারীকে ব্যবহার করা হচ্ছে।
# গবেষনা প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন সমন্বয় ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) এর এক গবেষনা রির্পোটে বলা হয়,তামাক ব্যবাহারের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বছরে নীট ক্ষতি হচ্ছে দুই হাজার ছয়শ কোটি টাকা। তামাক ব্যবহারের প্রত্যক্ষ ফল হিসাবে প্রতি বছর ৫৭ হাজার লোক মারা যায় এবং ৩ লাখ ৮২ হাজার লোক পঙ্গুত্ববরণ করে। এছাড়া ১২ লাখ লোক তামাক ব্যবহার জনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের মাত্র ২৫% হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে ধরে নিয়ে দেখা যায়, এর ফলে বছরে দেশের অর্থনীতিতে ৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়। অন্যদিকে তামাক খাতে বছরে দুই হাজার চারশ কোটি টাকা আয় হয়। এতে আরো বলা হয়,দেশে প্রতি বছর ৩৩ হাজার হেক্টর জমি তামাক চাষে ব্যবহৃত হয়। বছরে ৪০ হাজার মেট্টিকটন তামাক উৎপাদিত হয়। আর ৬ হাজার ৭শ ১২ মেট্টিকটন তামাক পাতা আমদানি এবং ৪ হাজার ৫শ ৫৪ মেট্টিকটন তামাক পাতা রফতানি করা হয়। বছরে ২০ হাজার ৩শ মিলিয়ন সিগারেট এবং আনুমানিক ১লাখ ৮ হাজার মিলিয়ন বিডি উৎপাদিত হয়। দেশে ১৫ বছরের বেশি বয়স্ক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৩৬.৮% কোন না কোন ভাবে তামাক ব্যবহার করছেন। এছাড়া বছরে মাদকের পেছনে খরচ পড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা।
# পত্রিকায় প্রকাশিত এক রির্পোটে ডিএনসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, দেশে বর্তমানে প্রাকৃতিক ও রাসায়নিক সহ অর্ধশতাধিক মাদকদ্রব্য বৈধ অবৈধ উপায়ে উৎপাদন,আমদানি,বিপনন ও ব্যবহার করা হচ্ছে। আমাদের দেশে সাধারণত আফিম,গাাঁজা,ভাং,চরস,মরফিন,হেরোইন,কোকেন,চোলাই,দেশী মদ ও ফরেন লিকার মাদকদ্রব্য হিসাবে সুপরিচিত। এছাড়াও রয়েছে কোডিন সমৃদ্ধ ফেন্সিডিল,থিবাইন,নোজকা পাইন,নারকোটিন,প্যাপাভারিন,এলএসডি,বারবি,চরেটস,অ্যামফিটামিন,সেথামফিটামিন ইত্যাদী। আফিমের সমজাতীয় কৃত্রিম উপায়ে তৈরি বিভিন্ন মাদকদ্রব্যের মধ্যে রয়েছে মেপারভাইন,মেথাডন,পেথিডিন,ডাইহাই-ড্রোকোডিন,হাইড্রো মরফিন,এসিটাইল মেথাডন,আলফাসিটাইল মেথাডল ইত্যাদী। তাছাড়া তাড়ী,পঁচুই,চ্যু,ডি/এস,আর/এস,অ্যালকোহল,বিয়ার,মেথানল,ট্রেংকুলাইজার,বিভিন্ন ধরনের ঘুমের ঐষুধ যথা,সিডাক্্িরন,নাইট্রোজিপাম,ডায়াজিপাম, ফুরাইট্রোজিপাম,টেমাজিাপম,কোনাজিপাম ইত্যাদী সব কিছুই সময়ের ব্যবধানে মাদকদ্রব্য হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে । নিয়মিত অভ্যস্তদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে,ব্রান্ডি,হুইস্কি,ভদকা,রাম,জিন,রেকটিফাইড,স্পিরিট,মেসকালিন,পেয়োটি ক্যাসটাস ইত্যাদী। অপ্রচলিত-ডলাটাইল ইন হ্যালেন্ট জাতীয় মাদকের মধ্যে রয়েছে ডান্ডি খ্যাত ডেন্ত্রাইড সলিউশনস,টলুইন,গ্লু পেট্রোল,অ্যারোসল,টিকটিকির পোড়া লেজ,জ্যামবাক মলম,ঘমাক্ত মোঝা ধোয়া পানি,ঘুমের ট্যাবলেট মিশ্রিত কোমল পানীয় ,পিরিটন ও ফেনারগ্যান কফ সিরাপ ইত্যাদী। সম্প্রতি ইয়াবা নামক এক প্রকার যৌন উত্তেজক সিনথেটিক ট্যাবলেট বাংলাদেশে মাদক হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে। এছাড়া মাদক জাতীয় হালকা উত্তেজক হচ্ছে বিড়ি,সিগারেট,চুরুট,হুক্কা,জর্দা,খৈনী,সাতা পাতা,দাঁতের গুল ইত্যাদী। এসব মাদক দ্রব্যেগুলো শ্রেণীভেদে স্নায়ু উত্তেজক ক্ষতিভ্রম সৃষ্টিকারী,স্নায়ুতে প্রশান্তিদায়ক,মায়াবিভ্রম উৎপাদনকারী ইত্যাদী।
# ভৌগোলিক অবস্থার কারণেই বাংলাদেশ আর্ন্তজাতিক মাদক মাফিয়া চক্রের থাবার মুখে রয়েছে। স্থানীয় এজেন্ট ও মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের সহায়তায় তারা এ দেশকে বানিয়েছে মাদকের চোরাচালান ও অভ্যন্তরীন চলাচলের নিরাপদ রুট। আকাশ,সড়ক,রেল ও নৌপথ ব্যবহার করে শক্তিশালী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ফেন্সিডিল,হেরোইন,ইয়াবা সহ নানা রকজমের মাদকদ্রব্য পাচার হয়ে আসছে এবং রাজধানী ঢাকা সহ প্রত্যন্ত জনপদ পর্যন্ত ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে তার পরিবহনের কৌশল বদল করে থাকে। এই অবৈধ বাণিজ্যে গডফাদার,খুচরা দোকানী ছাড়াও রয়েছে শত শত মাদক সম্রাট-সম্রাজ্ঞী। বিশেষ কোন অঘটন না ঘটলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও মাদক বিভাগ তাদের ধরে না। বরং অনেক সময় তাদের সহায়তায় মাদক ব্যবসায়ীরা নিরাপদে ব্যবসা করে চলেছে। এ জন্য মাদক ব্যবসায়ীরা হাজার হাজার টাকা মাসোয়ারা দিয়ে থাকেন। তাদের মাধ্যমে শুধু ফেন্সিডিল পাচারের কারণে বছরে ১ হাজার ৬শ কোটি টাকা ভারতে চলে যাচ্ছে।
সূত্র মতে,ভৌগোলিক অবস্থানের কারনে বাংলাদেশ প্রধান মাদক উৎপাদন অঞ্চলের মধ্যবর্তী হওয়ায় মাদকদ্রব্যের অবৈধ পাচার ও অপব্যবহার থেকে মুক্ত থাকা দুঃসাধ্য ব্যাপার। এ দেশের দক্ষিণ দিকে সমুদ্র ছাড়া অন্য সকল দিকে মাদক উৎপাদনের স্বর্গরাজ্য। মায়ানমার,থাইল্যান্ড ও লাউসের সীমান্তস্থিত পাবর্ত্য এলাকায় অবস্থিত গোল্ডেন ট্রায়াংগল অধুনা বিকশিত মাদক উৎপাদন কেন্দ্র গোল্ডেন ওয়েজ ভারত,নেপাল ও তিব্বতের পাবর্ত্য এলাকায় অবস্থিত এবং মাদক জগত গোল্ডেন ক্রিসেন্ট পাকিস্তান,আফগানিস্তান ও ইরানের সীমান্তস্থিত পাবর্ত্য এলাকায় অবস্থিত। এ সুযোগকে ষোল আনা কাজে লাগিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম মাদক উৎপাদনক ও ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশকে আর্ন্তজাতিক চোরাচালানের ট্রানজিট রুট ও করিডোরে পরিনত করেছে।
# তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়,বাংলাদেশ ও ভারতের প্রায় ৪ হাজার ২২২ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় অধিকাংশই মাদক পাচারের জন্য নিরাপদ পয়েন্ট হিসাবে চিহিৃত। দৈনিক কালের কন্ঠের একটি সরেজমিনে প্রতিবেদনে জানা যায়, ভারত বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে একাধিক ফেন্সিডিলের কারখানা স্থাপন করেছে। এবং উক্ত কারখানা গুলোথেকেই বাংলাদেশে বানের স্রোতের মতো ফেন্সিডিল ঢুকছে। গোয়েন্দাসূত্রগুলো বলছে,প্রতিদিন ভারত থেকে চোরাই পথে অন্তত ৩০ লাখ বোতল ফেন্সিডিলের অনুপ্রবেশ ঘটছে। বর্তমানে লুজ ফেন্সিডিল ও পাচার হয়ে আসছে। একই ভাবে আসছে অন্যান্য মাদকদ্রব্যও । পর্যবেক্ষক মহলের মতে,বাংলাদেশের বানের পানির মতো আসে মাদক। এর ৬০ ভাগ আসে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চল সীমান্ত দিয়ে আর অবশিষ্ট ৪০ ভাগ পাচারে ব্যবহৃত হয় পূর্ব সীমান্ত ও দক্ষিণের সাগর পথ। দেশের মোট মাদকের অর্ধেক বাজার রাজধানী ঢাকা কেন্দ্রীক। মাদকচক্রও রাজধানীতে বসেই কলকাঠি নাড়ে। মাদকের প্রায় সব চালানই সড়ক রেল ও নদী পথে প্রথমে ঢাকায় আসে আমদানীকারকদের গুদামে। পরে শক্তিশালী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মাদক পৌঁছে যায় প্রত্যন্ত জনপদ পর্যন্ত। এ চক্র অজ্ঞাত কারণে সব সরকারেরই আনুকূল্য পায়। আইনকে তারা আমলে নিতে চায় না, টাকার জোরে প্রতিটি সমাজেই তারা প্রভাবশালী,প্রতাপশালী হিসাবে পরিচিত। আর নীল মাদক ইয়াবা মিয়ামারের সীমান্ত দিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ দিয়েই প্রবেশ করে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।
# হাল ফ্যাশনের তরুণ-তরুণী আর তাদের বাহন চোখ ধাঁধানো দামি গাড়ি। ভেতরে চলছে মাদক গ্রহন ও বিকৃত মানসিকতার নানা উপাদানের ব্যবহার। রাজধানীর অভিজাত এলাকায় এ দৃশ্য এখন প্রায় স্বাভাবিক হয়ে পড়েছে। অভিজাত এলাকায় বিভিন্ন স্পটে মাদক ব্যবসা চলছে। মাদকের টাকা জোগাড় করতে ধনীর দুলালরা জড়িয়ে পড়ছে চুরি ছিনতাইসহ নানা অপরাধে। এদের পেছনে বরাবরের মতো সহযোগিতা করে যাচ্ছে নেপথ্যে থাকা মাদকব্যবসায়ীরা। এবং বরাবরের মতোই তারা আড়ালে থেকে যায়। সম্প্রতি র্যাব-১ ও র্যাব অপারেশন উইং যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে বিকৃত রুচির ছয় ধনীর দুলালকে গ্রেফতার করে। অভিযানে বেরিয়ে আসে নানা অজানা তথ্য। তাদের কাছ থেকে একটি বিএমডব্লিউ ৩২৫১ এম-২০০৬ এবং একটি পোরসে গাড়ি উদ্ধার করা হয়। এছাড়া আরো উদ্ধার করা হয়েছে ১৬টি ইয়াবা ট্যাবলেট,নেশাজাতীয় অন্যান্য ট্যাবলেট,মোবাইল সেট ৫টি,ফেন্সিডিল পাঁচ বোতল,হেরোইন সেবনের সিলভার কালার কাগজ,পর্ণো সিডি ২৪ টি,বিকৃত যৌন আনন্দের উপাদান সেক্্র হ্যান্ডকাফ,অ্যানল অ্যারাউসার,সেক্্র গিয়ার,সেক্্র স্টাইপ ফর ফিমেল,যৌন উত্তেজনাবর্ধক জেলি ও লিকুইড,পর্ণো সাবভেইল্যান্সবই,হেরোইন ও গাঁজা সেবনের সরঞ্জামাদি ও বৈদেশিক মুদ্রা। এ অভিযানের মাধ্যমে অভিজাত এলাকায় বাস্তব অবস্থা প্রকাশ হয়ে পড়ে এবং দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এভাবেই ঢাকার তরুণ কিশোর বেশির ভাগই মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েছে। জড়িয়ে পড়েছে নানা অপকর্মে। এদের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। অভিভাবকরা দিশেহারা। থানায় অভিযোগ করলেও কোন কাজ হয় না।
# এছাড়া অনুন্ধানে আরো জানা যায়,দেশব্যাপী সব ধরনের খুন,হত্যা,ধর্ষন,অপহরণ সহ সকল সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের পেছনে মাদকাসক্তরাই মূল ভূমিকা পালন করছে। এছাড়া সারা দেশে অভিজাত হোটেল,মোটেল,রোস্তোরা,কাব,বেশ্যাপল্লী ইত্যাদীতে এসে যুব সমাজ মুড়ি-মুড়কির মতো টাকা উড়ায়। মদের আর মাদকের নেশায় বুঁদ হয়ে নতর্কীদের নিয়ে মেতে উঠে। অনেকে গার্ল ফেন্ড,বান্ধবী,বন্ধু ইত্যাদী নিয়ে আসে । বেলেল্লাপনায় পাপের সাগরে কেটে দেয় রাত। র্যাব মাঝে মাঝে অভিযান চালিয়ে কোটি কোটি টাকা,দ্রব্য সামগ্রী উদ্ধার করে।
# পত্রিকায় পত্রিকায় এক রির্পোটে হতে জানা যায়, ২০০৫ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বানের মতো ঢুকছে সিগারেট। এখানে শুধু ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যেবাকো (বিডি) লিমিটেড প্রতিদিন ৬৫ হাজার ২৫০ টাকার (২৯ হাজার ৭৫০টি) সিগারেট বিক্রি করে। সপ্তায় তিন দিন সিগারেট বিক্রি করে এ কোম্পানী। আকিজ গ্রুপ বিক্রি করে আট হাজার ৮৬৬ টাকার সিগারেট। সে হিসাবে ক্যাম্পাসে প্রতিদিন ৭৩ হাজার ৮৬৬ টাকার সিগারেট বিক্রি হয়। সিগারেটের বড় গ্রাহক ছাত্র,কর্মচারী ও শিক্ষকেরা। বিশেষ করে প্রথম বর্ষের ছাত্রদের মধ্যে সিগারেট খাওয়ার প্রবনতা একটু বেশি। নেশার শুরু সিগারেট দিয়ে। সাম্প্রতিক সময়ে পত্রিকায় ইসলামী বিশ্ব বিদ্যালয়ে দৈনিক লাখ টাকা সিগারেট বিক্রির নিউজ এসেছে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর এ অবস্থা হলে সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর কি অবস্থা হতে পারে?
# পরিবর্তিত বিভিন্ন পরিস্থিতিতে মাদক ব্যবসায়ীরা কৌশর বদল করতে বাধ্য হচ্ছে। বর্তমানে লাশের কফিন,প্রাইভেটকারের ভেতরে বিশেষ বাক্স তৈরি করে মাদক দ্রব্যদি পরিবহন করা হচ্ছে। তাই তাদের সহজে ধরা সম্ভব হয় না।
# মাদকের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর,পুলিশ,র্যাব,বিজিবি,কোস্টগার্ড,কাস্টমস প্রভূতি সংস্থা সরাসরি কাজ করছে। কিন্তু সমন্বয় না থাকায় তাতে আশানুরুপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া সব সময় অভিযান অব্যাহত না রেখে মাঝে মাঝে অভিযানের কারণে মাদক নিয়ন্ত্রন করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে রাজনৈতিক নেতা নেত্রীদের পৃষ্টপোষকতা,বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অসৎ কিছু কর্মকর্তার কারণে মাদক ব্যবসায়ীরা ধরা ছোয়ার বাইরে থেকেই যায় সব সময়।
# মাদক নিয়ন্ত্রনের ক্ষেত্রে দেশের মাদক বিভাগ বড়ই ব্যর্থ। মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়,মাদক ব্যবসায়ী বা মাদক চক্র খুবই শক্তিশালী। বাঁধ ভাঙ্গা পানির মতো এদেশে মাদক আসছে। আমরা অসহায়। তাদেরকে মোকাবেলার মতো সামর্থ আমাদের নেই। এই যদি হয় মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের ভাষ্য তাহলে সে দেশে কিভাবে মাদক দ্রব্যের নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হবে?
চলবে.......
ছানাউল্লাহ
সাংবাদিক ও কলামিস্ট
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০