ঢাকামঙ্গলবার , ২৬ নভেম্বর ২০২৪
  1. সর্বশেষ

ইসলামী জীবনব‍্যবস্থা মানবজাতির শান্তির মূল

প্রতিবেদক
নিউজ এডিটর
১৪ অক্টোবর ২০২০, ৪:৪০ অপরাহ্ণ

Link Copied!

———

ইসলাম পরিপূর্ণ পূর্নাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। ইসলামের সব বিধান পরিপূর্ণ এবং সত্য। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ রব্বুল আলামীনের যিনি আমাদের জন্য দীন ইসলামকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন। তাই মুমিন মুসলমান ইসলামের বিধানগুলোকে শর্তহী ভাবে পালন কর থাকে। দয়াময় আল্লাহ তাআলা সীমাহীন কৃপা ও দয়া মায়া করে মানবকূলকে সর্বোৎকৃষ্ট জীবন ধারায় চলার জন্য একমাত্র সঠিক এবং পূর্নাঙ্গ ধর্ম ইসলাম মানবকূলে দিয়েছেন । ফলে দুনিয়ার শান্তি ও পরকালের মুক্তি লাভে মুমিন কোন চিন্তা থাকে না।

আল্লাহপাক মানুষের জীবন যাপনের জন্য এক বিধান রেখেছেন, আর তা হচ্ছে ইসলামিক জীবন বিধান বা দীন। একমাত্র ইসলামিক জীবন বিধান অনুযায়ী জীবন যাপনের মধ্যেই আল্লাহ তাআলা উভয় জাহানে মানুষের সুখ, শান্তি ও কামিয়াবী রেখেছেন। অন্য কিছুর মধ্যে নয়। তাই উভয় জাহানের কামিয়াবীর জন্য ইসলামিক জীবন বিধান অনুযায়ী জীবন যাপন করতে হবে। যাকে বলা যেতে পারে পুর্নাঙ্গ ইসলামিক জীবন যাপন। আল্লাহপাকের হুকুম এবং নবী সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের তরিকা অনুযায়ী সম্পাদন করবে তখন তার সবটাই বন্দেগী হবে, আল্লাহ তাআলার নিকট গ্রহণযোগ্য হবে।

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ ও সকল যুগের সব মানুষের জন্য উপযুক্ত জীবন ব্যবস্থা। আল্লাহ তাআলা মানব জাতিকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে সৃষ্টি করে কোন পথে চললে মানুষের কল্যাণ হবে, আর কোন পথে চললে অকল্যাণ হবে তা অহীর মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন। সেই অহী তথা জীবন বিধানের নাম হচ্ছে ‘আল ইসলাম’ । মহান স্রষ্টা আল্লাহর বাণী ও হিদায়াত এবং সর্বশেষ রসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শিক্ষায় মানুষের জীবনে চলার কোনো বিষয়ই অনুপস্থিত নেই। মহাগ্রন্থ আল-কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান হওয়ার পক্ষে সমর্থন ঘোষণা করা হয়েছে।

পৃথিবীর সকল মানুষ চায় সুখ, শান্তি,সফলতা। মুসলমান, খৃস্টান,ইয়াহুদী সে যায় হোক ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই দুনিয়া ও আখিরাতে কামিয়াবীয় চায়। আল্লাহ সুবহানাহু তাআলাও সকল মানুষকে সুখ, শান্তি,সফলতা দিতে চান। কিন্তু কেন মানুষ সফলতা অর্জন করতে পারেনা ইহার একমাত্র কারণ আল্লাহ যে পথে কামিয়াবী দিতে চান, মানুষ সে পথে কামিয়াবী হাসিল করতে চায় না, মানুষ সে পথ অবলম্বন করতে চায় না। মানুষ চায় ভিন্ন পথে দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা অর্জণ করতে। তাই মানুষ শত চেষ্টা করেও দুনিয়া ও আখিরাতে কামিয়াবী হাসিল করতে পারে না। হ্যাঁ, সেসব মহান ব্যক্তিরা যারা আল্লাহ তাআলার দেখানো পথ অবলম্বন করে তাঁরা উভয় জাহানের কামিয়াবী হন।

আল্লাহ তাআলা ইসলামের যাবতীয় বিধি-বিধান অহী মারফত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর নাযিল করেছেন। ওহির বিধানই একমাত্র চূড়ান্ত জীবন বিধান এবং তার মধ্যেই নিহিত রয়েছে সকল সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান। আর এই ওহির মাধ্যমে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবদ্দশাতেই দীন-ইসলাম পূর্ণতা লাভ করেছে। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবদ্দশায় ১০ম হিজরীর ০৯ যিলহজ্জ আরাফাতের ময়দানে ছাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে যখন তিনি বিদায় হজ্জ পালন করেছিলেন তখন আল্লাহ তাআলা এই আয়াতটি অবতীর্ণ করেনঃ “আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার নেআ’মত সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীন হিসাবে মনোনীত করলাম”। – সুরা মায়েদা, আয়াতঃ ০৩।

আল্লাহ তাআলা বলেন “নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকটে একমাত্র মনোনীত দীন হ’ল ইসলাম”। -সুরা আল ইমরান, আয়াতঃ ১৯।

রসূলুলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবদ্দশাতেই ওহির বিধানের মাধ্যমে দীন-ইসলাম পূর্ণতা লাভ করেছে, যাতে মানুষের সার্বিক জীবনের সকল দিক ও বিভাগ পূর্ণাঙ্গরূপে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেনঃ “আমি এই কিতাবে (কোরআনে) কোন বিষয়ই লিপিবদ্ধ করতে ছাড়িনি”। –সুরা আন’আম, আয়াতঃ ৩৮।

ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, আমার উট বাঁধার একটি দড়িও যদি হারিয়ে যায়, তাহলে আমি তা আল্লাহর কিতাবের মধ্যে খুঁজে পাব।

পক্ষান্তরে যারা আল্লাহর বিধানকে অস্বীকার করবে নিশ্চয় আল্লাহ সে বান্দার দ্রুত হিসাব গ্রহণ করবেন। কেননা মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে কবরেই অবিশ্বাসী ব্যক্তির পরীক্ষা ও আজাব শুরু হয়ে যাবে। এমনটিই মহান প্রভুর ঘোষণা।

অতঃপর কেয়ামতের ময়দানে তার জীবনের বিস্তারিত হিসাব গ্রহণ করা হবে। তার কর্মের ফয়সালা নির্ধারণ করা হবে। ফলে তাকে ভোগ করতে হবে সীমাহীন কঠিন শাস্তি।

আল্লাহ তাআলা শুধু অবিশ্বাসী মুশরিকদের কথাই বলেননি বরং যারা আহলে কিতাবের অনুসারী যারা ইসলামের সত্যতা জেনেও বিরোধীতায় লিপ্ত এবং প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিভিন্ন প্রশ্ন করে নাজেহালের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছিল তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এ নির্দেশ দেন-

‘(হে রাসুল!) যদি তারা (সত্য জানার পরও) আপনার সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক কিংবা কলহ-দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে তবে আপনি বলে দিন, আমি ও আমার অনুসারীগণ আল্লাহ পাকের কাছে আত্ম-সমর্পন করেছি। আর যাদেরকে (আসমানি) কিতাব দেয়া হয়েছে এবং মুর্খদের (অক্ষরজ্ঞানহীন) বলে দিন (জিজ্ঞাসা করেন), তোমরাও কি (আল্লাহর কাছে) আত্ম-সমর্পণ করেছ? অতঃপর তারা যদি (আল্লাহর কাছে) আত্ম-সমর্পণ করে তবে তারা সুপথ পাবে। আর যদি (ইসলাম গ্রহণ না করে) ফিরে যায় তবে আপনার দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো- শুধু (আমার কথা বা দাওয়াত) তাদের কাছে পৌছে দেয়া। আর আল্লাহ পাক তার বান্দাদের প্রতি লক্ষ্য রাখেন।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ২০)

ইসলামী জীবনাদর্শের বুনিয়াদ হচ্ছে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ’। ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। ঘোষণাটি হচ্ছে ইসলামী আকীদার প্রথম স্তম্ভ। এ অংশে আল্লাহ ছাড়া বন্দেগীর যোগ্য কেহ নেই -একথার স্বীকৃতি রয়েছে। ‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ অর্থাৎ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর রসূল। ইহা ইসলামী আকীদা বা কালেমায়ে শাহাদাতের দ্বিতীয় অংশ। এ অংশে আল্লাহ তাআলার বন্দেগী করার জন্যে মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ প্রদর্শিত পন্থাই সঠিক বলে মেনে নেয়া।

এ কালেমার উল্লেখিত দু’টো অংশই প্রত্যেক মুমিনের অন্তরে বদ্ধমূল হতে হবে। কারণ, ঈমানের অপরাপর বিষয় ও ইসলামের পরবর্তী স্তম্ভগুলো এ ঘোষণারই পরিণতি। স্বাভাবিকভাবেই ফেরেশতা, আসমনী কিতাব, নবীগণ (আ), আখিরাত, তাকদীরের ভাল-মন্দ, মৃত্যুর পর পুনরুত্থান ইত্যাদি বিষয়ের প্রতি ঈমান আনয়ন এবং নামায, রোযা, যাকাত, হজ্জ, হালাল ও হারাম ইত্যাদি সকল কাজকর্মই আল্লাহ তাআলার বন্দেগী হবে যখন তা আল্লাহপাকের হুকুম এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে।

মানব জীবনের সকল অবস্থায় ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ইত্যাদি প্রতিটি ক্ষেত্রেই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শের অনুসরণ এবং অনুকরণ করতে হবে। যেমন আল কোরআনে বলা হয়েছেঃ রসূল তোমাদের জন্য যা নিয়ে এসেছেন তা তোমরা গ্রহণ কর এবং যা তিনি নিষেধ করেছেন তা থেকে তোমরা বিরত থাক। -সুরা হাশর, আয়াতঃ ০৭।

আল্লাহ তাআলা মহা-গ্রন্থ কোরআনুল করীমে ইরশাদ করেনঃ আদেশ দেয়ার অধিকার একমাত্র আল্লাহর। তিনিই আদেশ করেছেন যে, তিনি ব্যতীত অন্য কারো বন্দেগী করা চলবে না। আর এটাই হচ্ছে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত জীবন বিধান। -সুরা ইউসুফ, আয়াতঃ ৪০।

ইসলাম কেবলমাত্র একটি ধর্মের নাম। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করেছেনঃ আল্লাহর নিকট একমাত্র জীবন বিধান হচ্ছে আল ইসলাম। -সূরা আল ইময়ান, আয়াতঃ ১৯।

মানুষের ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক. রাজনৈতিক, আন্তর্জাতিক তথা মানব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ও বিভাগে আল ইসলামের সুষ্পষ্ট বিধান রয়েছে। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেই বিধানকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তিনি একদিকে যেমন মসজিদের ইমাম ছিলেন, অন্যদিকে তেমনি ছিলেন রাষ্ট্রপতি, সেনাপতি. বিচারপতি। আল কোরআন ও আল হাদীসে ইসলামী জীবন বিধান সংরক্ষিত রয়েছে। যারা ইসলামকে জীবন বিধান হিসেবে গ্রহণ করে সেই বিধান অনূযায়ী জীবনযাপন করে তাদেরকে বলা হয় ‘মুসলিম’। একজন মুসলমান কখনো ইসলাম ছাড়া অন্য কোন মত ও পথকে গ্রহণ করতে পারে না। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেছেনঃ তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের প্রতি যা কিছু নাযিল হয়েছে তা মেনে চলো, তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য কারো অনুসরণ করো না। -সূরা আল আরাফ, আয়াত: ০৩।

পবিত্র কোরআনুল করীমে আল্লাহ তাআলা আরো ইরশাদ করেনঃ যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোন বিধান তালাশ করবে, তার কাছ থেকে তা মোটেই গ্রহণ করা হবে না, আর আখিরাতে সে ক্ষতিগ্রস্হদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে। -সূরা আল ইমরান, আয়াত: ৮৫।

সুতরাং প্রত্যেক মুসলমানের জন্য সে যে আমল বা কাজ করবে সে সম্পর্কে শরীআত কি বলে তা জানা অপরিহার্য। কারণ ইলম ব্যতীত আমল আল্লাহ তাআলার নিকট গ্রহণযোগ্য নয়।

লেখক :
আবু নাসের ইরফান
শিক্ষার্থী(মাস্টার্স)
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ
চট্টগ্রাম কলেজ।

154 Views

আরও পড়ুন

সুনামগঞ্জে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংর্ঘষে শান্তিগঞ্জের এক মহিলা নিহত

শান্তিগঞ্জের জয়কলসে বিএনপির কর্মীসভা

শান্তিগঞ্জে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে সংকেতহীন স্পিড ব্রেকার,দূর্ঘটনার আশঙ্কা

বুটেক্স শিক্ষার্থীদের উপর ঢাকা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের হামলা, আহত অর্ধ শতাধিক

পাঠকের অনুভূতিতে ❝কলিজার আধখান❞

অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমে বিএনপি সন্দেহ করছে–ড. হুমায়ুন কবির

বিশ্বরূপ চন্দ্র বিশ্বাসের কবিতা:- হাসি

শান্তিগঞ্জে জমিয়তের গণসংবর্ধনা ও কাউন্সিল শুক্রবার

শান্তিগঞ্জে জমিয়তের গণ সমাবেশ সফল করার লক্ষে সংবাদ সম্মেলন

আইডিইবির ৫৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আধুনগর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের র‌্যালি ও আলোচনা সভা

দোয়ারাবাজারে এফআইভিডিবি’র স্বাস্থ্য সামগ্রী বিতরণ