বিশ্বখ্যাত আলেম শায়খ আল্লামা ইউসুফ আল কারজাভি ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন। সোমবার আলআরাবিয়া ও আলজাজিরা আরবি তার ইন্তেকালের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।
ইউসূফ আল-কারযাভী হলেন একজন মিশরীয় ইসলামি স্কলার। ইসলামিক বিভিন্ন বিষয়ে লেখা তার কয়েকশ গ্রন্থ রয়েছে। সবগুলোই পাঠক মহলে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছে। আল জাজিরা টেলিভিশনে শরীয়াহ এবং জীবন নামক তার অনুষ্ঠান তাকে পৃথিবীব্যাপি পরিচিত করে তোলে। তিনি মিশর ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুড এর পরামর্শক। তাকে ব্রাদারহুড়ের শীর্ষস্থানীয় নেতা মনে করা হয়। তিনি আলেমদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ইত্তেহাদুল আলামী লি উলামাইল মুসলিমীন এর সভাপতি ছিলেন।
৯ সেপ্টেম্বর ১৯২৬ সালে মিশরের গারবিয়্যা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষা জীবন শুরু করেন ছোবেলাতেই। দশ বছর বয়স হবার আগেই হিফজ সম্পন্ন করেন। অতপর আল-আজহারের শিক্ষাপদ্ধতিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা করেন। উচ্চ মাধ্যমিকে তিনি সারা মিশরে দ্বিতীয় হন। আল আজহারের উসুলুদ দ্বীন অনুষদ থেকে অনার্সو মাষ্টাস এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তার পিএইচডি বিষয় ছিল “যাকাত এবং সামাজিক সমস্যা সমাধানে তার প্রভাব।”
প্রাথমিক জীবন
দুই বছর বয়সে তার বাবা মারা যান। চাচা তার শিক্ষাদিক্ষার ভার বহন করেন। ইখওয়ানুল মুসলেমিনের সাথে সম্পৃক্ততার কারণে তাকে বেশ কয়েকবার কারাবরণ করতে হয়। প্রথমবার ১৯৪৯ সালে। এরপর প্রেসিডেন্ট জামাল আব্দুন নাসেরের আমলে তিনবার। ১৯৫৪ সালের জানুয়ারিতে প্রথমবার। একই সালের নভেম্বর মাসে দ্বিতীয়বার। এবার তিনি ২০ মাস কারাগারে কাটান। শেষবার ১৯৫৩ সালে। ১৯৬১ সালে তিনি কাতারে প্রথম পাড়ি জমান। ১৯৭৩ সালে কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী স্টাডিজ বিভাগের প্রতিষ্ঠা করেন এবং ডিপার্টমেন্ট প্রধান হিসেবে যোগ দেন।
পুরস্কার ও সম্মাননা
১৪১১ হিজরীতে ইসলামী অর্থণীতিতে অবদান রাখায় ব্যাংক ফয়সল পুরস্কার লাভ করেন। ১৪১৩ হিজেরীতে ইসলামী শিক্ষায় অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক বাদশাহ ফয়সাল পুরস্কারের জন্য তাকে সিলেক্ট করা হয়। মুসলিম বিশ্বের নোবেল খ্যাত এ পদকটির পাওয়ার সন্মানটা এ বছর তার ভাগ্যে জোটে। ১৯৯৭ সালে ব্রুনাই সরকার তাকে হাসান বাকলি পুরস্কারে সম্মান প্রদান করে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০