|| রাঙামাটি প্রতিনিধি ||
৬ষ্ট শ্রেণীর শিক্ষার্থী ধর্ষণের দায়ে মোজাম্মেল হক নামে এক ধর্ষককে আমৃত্যু কারাদন্ডাদেশ দিয়েছে, রাঙামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল’র বিচারক এ.ই.এম ইসমাইল হোসেন’র জনাকীর্ণ আদালত আসামীর উপস্থিতিতে এ দন্ডাদেশ প্রদান করেন।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, রাঙামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার (২৮ মে) ৬ষ্ট শ্রেণীর মাদ্রাসা পড়ুয়াকে ধর্ষণের দায়ে এক ধর্ষককে আমৃত্যু কারাদণ্ড ঘোষণা করেন। একই সাথে বিজ্ঞ আদালত আসামীকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করে।
রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট প্রকাশ করলেও, আসামী পক্ষ ন্যায় বিচার প্রাপ্তির জন্য উচ্চ আদালতে আপীল করবেন বলে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে।
উল্লেখ্য ২০১৮ সালের ২১ মার্চ রাঙামাটি শহরের পুরানবস্তী এলাকায় জনৈক আব্দুল হকের ভাড়াটিয়া আসামী মোজাম্মেল হক নিজে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর উক্ত কিশোরীকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এসময় স্থানীয়দের সহায়তায় ভিকটিমের মা উক্ত ঘটনায় হাতেনাতে মোজাম্মেলকে আটক করলে, কোতয়ালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে আসামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ এর ৯(১) ধারায়
মামলা নং-৭ তারিখ: ২১/০৩/২০১৮ইং দায়ের করা হয়। ৬ বছর ধরে মামলা চলার পর এ মামলায় রায়
ঘোষণা করেন বিজ্ঞ আদালত। রায় ঘোষণাকালে আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানান, ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়াকালীন সময়ে ভিকটিম ৪০ বছর বয়সী আসামী কর্তৃক পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এ ঘটনার পর ভিকটিম ও তার পরিবার এলাকাবাসীর কটাক্ষের শিকার হয়ে অন্যত্র গিয়ে ভিকটিমকে বিয়ে দেন। সে ঘরে একটি সন্তানও হয়েছে। কিন্তু সে স্বামী ভিকটিমের ধর্ষনের ঘটনা শুনে তাকে তালাক দিয়ে দেয়। এ ঘটনায় এটা স্পষ্ট হয় যে, ভিকটিম বাল্য বিবাহের শিকার হয়েছে এবং তার শিক্ষা জীবন ধ্বংস হয়ে তার জীবন ওলটপালট হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় ভিকটিমের মতো অন্যান্য শিশুদের ভবিষ্যতে আসামীর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য তাকে আমৃত্যু কারাগারে অন্তরীণ করে রাখা প্রয়োজন মনে করেছেন আদালত। তাই আসামী মোজাম্মেল হককে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ এর ৯(১) ধারার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে আমৃত্যু যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড এবং এর অতিরিক্ত এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত। জরিমানার টাকা আগামী ৯০ দিনের মধ্যে আদালতে জমা দেওয়ার পর সেই অর্থ ভিকটিম ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রাপ্ত হবেন বলেও আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে মামলার রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর বিজ্ঞ আইনজীবি এ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম অভি আদালতে রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করে বলেন, রায়ের মাধ্যমে সমাজে একটি ম্যাসেজ দেওয়া হয়েছে এবং এতে করে সমাজে এই ধরনের অপরাধগুলো কমে আসবে বলে মনে করছি।
আসামীপক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট রহমত উল্লাহ তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় মিডিয়াকে বলেন, এ রায়ে আমরা সংক্ষুব্ধ হয়েছি, ন্যায় বিচার পাইনি। রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপীল করবো। আশাকরছি সেখানে আমরা ন্যায় বিচার পাবো। #