বরিশাল ব্যুরো :
বরিশালের উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল ও একই থানার কনস্টেবল জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন নির্যাতিতা এক বিধবা নারী।বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাশিদা বেগম নামে এক নারী বাদী হয়ে বরিশাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ সুপারকে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ওই আদালতের বিচারক সানা মো. মাহরুফ হোসাইন।
বাদী রাশিদা বেগম তার দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, অভিযুক্তরা পুলিশ বিভাগে কর্মরত থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন সময় মানুষকে হয়রানি করে আসছেন। গত ১১ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় ওসি শিশির কুমার পালের নির্দেশে কনস্টেবল জাহিদুল ইসলাম তার ঘরের মালামাল জব্দ করেন।
পরে একই দিন মালামাল ফেরত নেওয়ার জন্য রাশিদাকে থানায় ডাকা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিনি থানা সংলগ্ন বাচ্চুর দোকানে চা পান করতে যান। এসময় কনস্টেবল জাহিদুল সেখানে এসে নাম জিজ্ঞাসা করলে জবাব দিতে বিলম্ব হওয়ায় তাকে গালাগাল করেন। এর প্রতিবাদ করায় জাহিদুল দোকানের দেয়ালের সঙ্গে চেপে ধরে তার দুই গালে ও ঠোঁটে সিগারেটের আগুনের ছ্যাঁকা দেন।
এ ঘটনায় ওসি শিশির কুমার পালের কাছে বিচার দিতে গেলে তিনি ডিআইজির কাছে যেতে বলেন। এ সময় রাশিদা বেগম তাকে বিচার করার জন্য বললে ওসি তার চুলের মুঠি ধরে মারধর করেন। একপর্যায় তাকে উঠিয়ে মাটিতে আছাড় দিলে রাশিদা বেগম সেখানেই মলত্যাগ করেন।
এ সময় রাশিদা বেগমের ছেলে বাবু এসে প্রতিবাদ করলে তাকে থাপ্পড় দেওয়াসহ সাদা কাগজে সই নেওয়া হয়। এছাড়া, রাশিদা বেগমের সঙ্গে থাকা ১৩ হাজার টাকা দামের একটি স্বর্ণের চেইনও নিয়ে যান তারা। এই ঘটনায় মামলা করলে তাদের অবস্থা আরও ভয়াবহ হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়।
এছাড়াও রাশিদা বেগম ওসি ও কনস্টেবলের নির্যাতনের ঘটনায় বরিশালের ডিআইজি ও পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দেন। এর প্রেক্ষিতে ঘটনার তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছিল। এতে অভিযুক্ত কনস্টেবল জাহিদুল ইসলামকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশলাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।
উজিরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল জানান, তার বিরুদ্ধে মামলার এজাহারভূক্ত আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং এ মামলার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও দাবি করেন।