—–জিয়া হাবীব আহ্সান, এডভোকেট
১ম পর্ব
ইসলাম একটি বিজ্ঞানময়, শাশ্বত, পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। মানবজীবনের এমন কোন দিক নেই যা ইসলামে আলোচিত হয়নি। সংক্ষেপে এখানে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে পেশা হিসেবে, আইনপেশা স¤পর্কে কি বলা আছে ও সমাজে এর গুরুত্ব কি তা তুলে ধরবো। সকলের প্রতি ন্যায়বিচার প্রদানই হচ্ছে আদালতের প্রথম ও প্রধান উদ্দেশ্য। আর মামলা-মোকদ্দমায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আইনবিদগণ বিচারককে সাহায্য করে থাকেন। সত্য প্রতিষ্ঠায় আদালতকে সাহায্য করা, ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় বিরাট অবদান রাখার সমতুল্য। আদালতকে ভুল ব্যাখ্যা দেয়া, মক্কেলের স্বার্থে অসত্যের আশ্রয় গ্রহণ করা, মক্কেলকে অন্যায় করতে পরামর্শ দেয়া কখনও একজন ভালো এডভোকেটের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না।
জামেয়া আহমদীয়া সুন্নিয়া আলীয়া মাদ্রাসার তদানিন্তন প্রিন্সিপ্যাল মরহুম হযরত আল্লামা জালালুদ্দীন আল কাদেরী (রহঃ) বলেন, “ইমামে আজম হযরত আবু হানিফা (রহঃ) নিজেই একজন আইনবিদ ও ফিকাহ্ শাস্ত্রবীদ ছিলেন, তাঁর রচিত ফিকাহ্ শাস্ত্রসমূহ ইসলামী আইনের জগতে দেদীপ্যমান হয়ে আছে।” ইসলামী দুনিয়ার সর্বজন শ্রদ্ধেয় ফিকাহ্ শাস্ত্রবীদ ইমামে আজম হযরত আবু হানিফা (রঃ) এর মাযহাবের ফেকাহের কিতাব সমূহে ওকালতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে।
এ কিতাবসমূহের মধ্যে হেদায়া,শরহে বেকায়া,কনজুদ দকায়েক, কুদুরী, মালাবুদ্দামিনহুম, প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। ওকালতকে অস্বীকার করা মানে হলো হানাফী মাযহাবের কিতাব সমূহ থেকে ‘বাব-উল-ওকালত’কে রদ করে দেয়া।
বিশ্বজোড়া সর্বজনগ্রাহ্য ফতোয়ার কিতাব ‘ফতোয়ায়ে আলমগিরী’, “ফতহুল কাদির”, ‘ফতোয়ায়ে শামী’সহ বিখ্যাত ফতোয়ার কিতাবসমূহে ‘ওকালত’ ও এর বিষয়বস্তু স¤পর্কে বিস্তারিত বলা রয়েছে। তাছাড়া কুত্বে দাওয়ান, মূজাদ্দিদে যমান, হাকীমুল উম্মত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (রঃ)-এর ‘বেহেশতী জেওর’-এ উকিল ও ওকালতি সম্পর্কে মন্তব্য করা হয়েছে।
প্রিন্সিপ্যাল মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী (রঃ) এর অনুবাদকৃত উক্ত পুস্তকের পঞ্চম খন্ডের ১৩৩ পৃষ্ঠায় কাউকে উকিল বানানোর বিবরণ শিরোনামে প্রদত্ত মাসয়ালায় উল্লেখ করা হয়েছে : মানুষ যে কাজ নিজে করার অধিকারী সে কাজ অন্যের দ্বারা করানোরও সে অধিকারী। একেই শরীয়াতের ভাষায় ‘উকিল’ বানানো বলে। এখানে উকিলকে আমানতদার ও আমানতের খেয়ানত করাকে শক্ত হারাম বলা হয়েছে। উকিলকে মেহনতয়ানা যা কিছু দেয়া হবে, সেটার মালিক সে হবে। উকিলের কাজ করে মেহনতয়ানা চুকিয়ে নেয়া শরীয়াতে জায়েজ আছে। মরহুম মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (রঃ)-এর ওকালতি প্রসঙ্গে প্রদত্ত আলোচনায় অনুবাদক উক্ত পুস্তকের একই খন্ডের ১৩৫ পৃষ্ঠায় লিখেছেন “মনে করুন, আপনি একজনকে উকিল বানাইলেন আপনার এক মোকদ্দমা চালাইবার জন্যে। এক্ষেত্রে আপনিও এ কথা বলিতে পারিবেন না যে, আমাকে মোকদ্দমায় জিতাইয়া দিতে হইবে এবং উকিলও একথা বলিতে পারিবেন না যে, আমি নিশ্চয়ই মোকদ্দমায় জিতাইয়া দিব। অবশ্য জিতাইবার জন্যে প্রত্যেকের চেষ্টা হবে এই কথা সুনিশ্চিত। হারবার জন্য তো আর কেহ মোকদ্দমা করে না। কিন্তু এইরূপ শর্ত করা বা শর্ত লাগানো অথবা মোকদ্দমা জিতাইবার বা জিতাইবার জন্য মিথ্যা সাক্ষী বানানো বা ঘুষের আশ্রয় গ্রহণ করা হারাম, গোনাহ্-এ-কবীরাহ্। অবশ্য বুদ্ধির তীক্ষèতার দ্বারা, মস্তিষ্কের প্রখরতার দ্বারা ও বিদ্যার গভীরতার দ্বারা সত্যের সীমা লঙ্ঘন না করিয়াও অনেক সময় এমন অনেক সূ² পয়েন্ট বাহির করা যায়, যাহা দ্বারা উকিলের কৃতিত্ব প্রমাণিত হয়, মিথ্যা সাক্ষীও লাগে না। ফল কথা এই যে, সত্যের সীমা, ন্যায়ের সীমা, ধর্মের সীমা লঙ্ঘন না করিলে, ওকালতি ব্যবসার দ্বারা পয়সা উপার্জন করা জায়েজ আছে। বিনা পয়সায় নিঃসহায়ের সহায়তা করিয়া দিলেও তাতে সওয়াব আছে।”
প্রকৃত পক্ষে প্রত্যেক পেশাকে হালালভাবে আর হারামভাবে পরিচালনা করা স্ব-স্ব পেশাজীবিদের উপর নির্ভর করে। ব্যাংকার, ডাক্তার, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, শিক্ষক, ব্যবসায়ী সকল পেশায় সততা ও ন্যায় নিষ্ঠা বজায় রাখলে তা হালাল অন্যথায় তা হারাম। প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন মাওলানা মহিউদ্দিন খান সম্পাদিত বহুল প্রচারিত মাসিক মদিনায় জামালপুর জজ আদালতের জৈনিক এডভোকেট আবদুর রশিদ প্রশ্ন করেছিলেন, “আইন ব্যবসা করা কুরআন ও হাদিসের দৃষ্টিতে হালাল ব্যবসা কিনা এবং এই ব্যবসার মাধ্যমে অর্জিত আয় হালাল কিনা? স¤পাদক মাওলানা মুহিউদ্দিন খান সংক্ষেপে উত্তর দিয়েছিলেন, “আইনব্যবসা নিঃসন্দেহে বৈধ পেশা এবং এর দ্বারা উপার্জিত আয় হালাল”(মাসিক মদীনা, এপ্রিল’ ৯৭ সংখ্যা)। মুসলিম আইনবেত্তাগণ মামলা-মোকদ্দমায় উকিল নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে বহু গবেষণা করেছেন। প্রায় সকল মুসলিম আইনবেত্তাগণই বিচার ব্যবসাকে সহজ করে ন্যায়বিচার প্রদানের পথকে সুগম করার লক্ষ্যে সংশ্লি¬ষ্ট ব্যক্তি/ পক্ষের উপস্থিত-অনুপস্থিত সকল অবস্থায় মামলা-মোকদ্দমায় উকিল নিয়োগ করার বিষয়টি বৈধ বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন। মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত সহীহ আল বুখারী-এর ২য় খন্ডের ৩৯০ পৃষ্ঠায় কিতাবুল ওকালত প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
প্রকৃত অর্থে আইন পেশা একটি মহৎ পেশা। হাদিসের আলোকে আলোচনায় সেখানে উল্লে¬খ আছে যে, উপস্থিত ও অনুপস্থিতদের জন্যে উকিল নিয়োগ করা জায়েয। কোন উকিলকে বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধিকে কিংবা কোন কওমের সুপারিশকারীকে কোন বস্তু হেবা (দান) করা জায়েয। কিতাবুল ওকালতের উক্ত অনুচ্ছেদে আরো বলা হয়েছে যে, যদি কেউ কোন উকিল (ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি) নিয়োগ করে আর ঐ উকিল কোন কিছু ছেড়ে দেয় অতঃপর মুয়াক্কিল (উকিল নিয়োগকারী) তা অনুমোদন করে, তবে তা জায়েয, ‘উকিল’ এবং মুয়াক্কিল আদালতের দুটি প্রচলিত পরিভাষা ও ইসলামী শব্দ বা পরিভাষা। আদালতে আইনবিদ আইনগত তথ্য উদঘাটনে, সাক্ষ্যের চুলচেরা বিশে¬ষণ ও ব্যাখ্যা প্রদান করে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। কারণ, বিচারের নীতি হলো-প্রয়োজনে প্রতি ১০ জন অপরাধীর ৯ জনই ছাড়া পেয়ে যাবে তবুও যেন ১ জন নিরপরাধ ব্যক্তির ভুলবশতঃ হলেও সাজা হয়ে না যায়। কেননা প্রকৃত অপরাধীকে শাস্তি দিতে গিয়ে যদি কোন নিরপরাধ ব্যক্তিকে শাস্তি কিংবা কারাভোগ করতে হয় তার চেয়ে বড় কোন অপরাধ হতে পারে না। এতে করে মানবাধিকার হয় ভ‚লুণ্ঠিত এবং সমাজে প্রতিশোধের জিঘাংসা ও অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি পায়। এক্ষেত্রে বিচারকের দৃষ্টিতে যে সব সূ² ও ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র তথ্য ও তত্ত¡ ধরা পড়ে না আইনজিবীগণ নিজ নিজ পক্ষে জোরালো যুক্তি উপস্থাপন করার মাধ্যমে বিচারকগণকে সত্য উদঘাটনে প্রচুরতম সহযোগিতা প্রদান করে মানবাধিকার সংরক্ষণে ভ‚মিকা রাখছেন। ফলে বিচারকগণ নিখুঁত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন। আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়, আইনবিদগণ নিরপরাধীকে যেমন সাহায্য করেন তেমনি অপরাধীকেও সাহায্য করেন, এ ধারণা সঠিক নয়। অপরাধীর পক্ষ সমর্থন করার মানে অপরাধীকে সমর্থন করা নয় বরং অপরাধীর বিরুদ্ধে অপরাধ করার প্রমাণ সন্দেহাতীতরূপে উপস্থিত করা হয়েছে কিনা তা নির্ধারণে আইনবিদগণ বিচারককে সাহায্য করেন। ফৌজদারী আইনে একটা ম্যাক্সিম আছে, “দ্যা প্রসিকিউসন মাস্ট প্রæভ ইটস কেইজ বেউন্ড অল রেস্পোন্সিবল ডাউট”।একটি হাদিসে এ ব্যাপারে প্রমাণ পাওয়া যায়। হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসুল (সাঃ) বলেছেন, মুসলমানের উপর শরিয়তী বিধান কার্যকরী করা হতে যতদূর সম্ভব দূরে থাক। অভিযুক্তের নিষ্কৃৃতি লাভের সামান্যমাত্র সুযোগ থাকলেও তার মুক্তির পথ উন্মুক্ত করে দাও। কেননা, রাষ্ট্রপ্রধানের পক্ষে ভুল করে কাউকে মুক্তিদান করা, ভুল করে কাউকে শাস্তি দান করা অপেক্ষা উত্তম ও কল্যাণকর (তিরমিযী)।
একজন ভালো আইনবিদের জেরাকে ওপেনহার্ট সার্জারীর সাথেও তুলনা করা যায়। কেননা এর ফলে আদালতের সামনে সত্য ও লুক্কায়িত তথ্য বেরিয়ে আসে। অর্থ আয়ের জন্যে সকল পথই বৈধ -এ কথা একজন পরকাল বিশ্বাসী আইনজীবিদের পক্ষে মেনে নেয়া সম্ভব নয়। মামলাবাজ, ধুরন্ধর শয়তান ব্যক্তির অসৎ উদ্দেশ্য সাধনের জন্যে ধর্মপ্রাণ আইনবিদ কখনো আল্ল¬াহ্ প্রদত্ত তাঁর মেধাশক্তিকে কাজে লাগান না তথা তাদের প্রশ্রয় দিতে পারেন না। যদি কেউ দিয়ে থাকেন সে ব্যাপারে তাকে আল্লাহ্র দরবারে জবাবদিহির জন্যে প্রস্তুত থাকতে হবে। এ জন্যে সমগ্র আইনবিদ ও আইন পেশাকে হারাম বলা যেতে পারে না। আইনবিদ বিতর্ক সৃষ্টি করেন না। আইনের মাধ্যমে তর্ক মিটাতে ভ‚মিকা রাখেন মাত্র। একজন আদর্শ আইনবিদ বিচারককে আইন বা ঘটনা স¤পর্কে কোন চাতুরী বা মিথ্যা উক্তি দ্বারা ভুল বুঝাতে পারেন না। জেনে-শুনে আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে আদালতকে ভ্রমে পতিত করে মক্কেলের উপকার করার চেষ্টা তিনি কখনো করতে পারেন না। একজন কৌশুলী ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় নিজের শ্রম ও মেধাকে কাজে লাগান মাত্র। প্রতিটি মানুষের কথা বলা ও মতামত বা যুক্তিতর্ক ব্যক্ত করার আলাদা পদ্ধতি রয়েছে। কারো যুক্তিতর্ক খুবই তীক্ষè ও কৌশলপূর্ণ, আবার কারো খুবই সহজ-সরল। প্রতিটি মানুষ তার অধিকার স¤পর্কে সচেতন। কেউ তীক্ষè, জোরালো কৌশলপূর্ণ যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে অধিকার স¤পর্কে সচেতন। অন্যদিকে কেউ এ গুণের অভাবে তার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকে। বিচারকের সামনে নিজের যুক্তিতর্ক ব্যক্ত করে নিজের অধিকার আদায় ও ন্যায়বিচার পাওয়া সাধারণ মানুষের পক্ষে কষ্টসাধ্য। কেননা একজন সাধারণ লোক সত্যটিকে সহজভাবে উপস্থাপন করার মতো জ্ঞানী নাও হতে পারে। বিচারক প্রতিটি পক্ষের যুক্তিতর্ক ও ঘটনার বর্ণনা শুনে প্রমাণ দেখে ন্যায়ানুগ বিচার বিশে¬ষণ করে রায় দিয়ে থাকেন। মামলা- মোকদ্দমায় ঘটনার উপর জোরালো যুক্তিতর্কের উপর নির্ভর করছে ন্যায়বিচার। আর এই ধারণাটি আজকের নয়, পুরাকাল থেকেই মানুষের মাঝে বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে আমাদের সকল পথের পথপ্রদর্শক আল¬াহর প্রিয় রাসূল (সাঃ) বলেন, আমি তো একজন মানুষ। আমার কাছে বিবাদকারীরা আসে। তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ অন্যের চেয়ে অধিক বাকপটু। তখন আমি মনে করি যে, সে সত্য বলেছে। তাই আমি তার পক্ষে রায় দেই। বিচারে যদি ভুলবশত অন্য কোন মুসলমানের অধিকার (হক) তাকে দিয়ে থাকি, তবে তা দোযখের আগুনের টুকরা। এখন সে তা গ্রহণ করুক বা ত্যাগ করুক (সহীহুল বুখারী)।
অন্যদিকে আইনের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, মুসলিম শাসন আমলেও আইনপেশার প্রচলন ছিল। বিশেষ করে মুঘল শাসন আমলে আইন পেশাজীবীদের প্রচলন পরিলক্ষিত হয়। তখনকার আইনপেশা বর্তমান পেশার মতো এত উন্নত না হলেও দেখা যায় মুফতীরা বিচারকার্যে বিচারকদেরকে সাহায্য করতেন। তাদেরকে আধুনিক যুগের এটর্নী জেনারেলের সাথে তুলনা করা যায়। এর আরেকটু পরে দেখা যায় মামলার পক্ষসমূহ পেশাদার আইনজ্ঞ দ্বারা মামলা পরিচালনা করতেন এবং তাদের উকিল বলা হতো। বলা যায়, মুসলিম শাসকদের সময়েই পেশাদার আইনবিদের বিকাশ ঘটে। তবে আজকের আইনবিদ সমিতির মত সেকালে তেমন কোন বার এসোসিয়েশন ছিল না। ফিকহে ফিরোজশাহী এবং ফতওয়ায়ে আলমগীরিতে উকিলের দায়িত্ব ও কর্তব্য সমপর্কে স্পষ্ট বিবরণ রয়েছে। সম্রাট শাহজাহানের আমলে সর্বপ্রথম সরকারী উকিল নিয়োগ করা হয় এবং আইন ব্যবসাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া হয়েছে বলে ধরে নেয়া যায়। সম্রাট আওরঙ্গজেবের সময় প্রতিটি জেলায় সরকারী উকিল নিয়োগ করা হয়। তাদেরকে বলা হতো উকিল-ই শরয়ী। তাদেরকে প্রধান কাজী নিয়োগ দিতেন এবং কখনো প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিতেন। সে সময় লিগ্যাল এইডেরও প্রচলন দেখা যায়। যেমন গরীব ও অসহায় মামলাকারীদের আইনগত সহায়তার জন্য আইনবিদ(উকিল) নিয়োগ করা হতো।
এতে বুঝা যায়, আইনপেশা ইসলামের অন্তরায় নয় বরং সত্যিকার আইনপেশা ইসলামের ইতিহাসের একটি স্বীকৃত পেশা।
(চলবে)
লেখক : আইনবিদ, গবেষক কলামিস্ট, সুশাসন ও মানবাধিকারকর্মী।