স্টাফ রিপোর্টারঃ
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে আওয়ামীলীগ মনোনীত শিমুলবাঁক ইউপি’র বর্তমান চেয়ারম্যান শাহীনুর রহমান শাহীনের পিতা আজহার আলীর বিরোদ্ধে
একই গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী উপজেলা জাসাসের আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলমের মা জোসনা বেগমের বৈশাখী ধান লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে ।
অদ্য বুধবার (১৪/০৫/২৫) বিকাল ৪ ঘটিকায় শিমুলবাক গ্রামের পশ্চিমে ধানের খলায় ধান লুটপাটের এ ঘটনা ঘটে। সন্ত্রাসীরা দলবদ্ধভাবে খলায় শুকানোর জন্য রক্ষিত ধানগুলো জোরপূর্বক তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। এ ঘটনার মূল নায়ক ইউপি চেয়ারম্যান শাহীনুরের পিতা আজহার আলী, পিতামৃত হাজী জালু মিয়া সহ আজহার আলীর পুত্র মাসুদ মিয়া ও নাম অজ্ঞাত শিমুলবাক গ্রামের আরো কয়েকজন।
জানা যায়, জাহাঙ্গীর আলম লন্ডন প্রবাসী। তার মালিকানাধীন বোরো জমির কাটা মারই ধান শুকানো অবস্থায় ২০০ মন ধান জোর জবস্তি করার পায়তারা করলে জোসনা বেগমের কাজের লোক বাধা দেয় আজহার আলীকে। বাধা দেওয়ার একপর্যায়ে শোরগোল শুনে তার বোন সৈয়দা হেনা এসব দেখে ধানের খলায় যায়। যাওয়ার পর আজহার আলী হেনা বেগমকে হেনস্থা করে লাঠি দিয়ে মারধর করে গুরুতর জখম ও শ্লীলতাহানি করে। ওরা তার ৫ বছর বয়সী ছোট শিশু আনজুমা ও কাজের লোককেও মারধর করে গুরুতর জখম করে।
এলাকা ও গ্রামের লোকজন তার সন্ত্রাসীর ভয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি। তার মুখে সে একজন সন্ত্রাসী বলে নিজকে চিল্লাইয়া পরিচয় দেয়। সে চেয়ারম্যানের বাবা হওয়ায় এবং অবৈধ পথে সুদ খেয়ে টাকা রোজগার ও এলাকার প্রভাব শালী হওয়ায় এলাকার সাধারণ মানুষ মুখ খুলতে ভয় পায়। জাহাঙ্গীর আলম প্রবাসে থাকার সুবাদে তার পরিবার-পরিজন বাড়িতে কেউ না থাকায় তাহার একমাত্র মাকে বাড়িঘর জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিবে বলে হুমকি দিচ্ছে এবং কোনদিন তাদেরকে শান্তিতে থাকতে দিবে না। এমতাবস্হায় তার পরিবার-পরিজন আতঙ্কে আছে।
স্হানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, জাহাঙ্গীরের মা জোসনা বেগম (৭০) বাদী হয়ে গত ০২/০৪/২০২৫ ইং তারিখে (১) মাসুদ মিয়া (৪৫),পিতা-আজর আলী, (২) বদরুজ্জামান (৩৬), (৩) কামরুজ্জামান (৩২), উভয় পিতা-ফজর আলী ও (৪) বজলু মিয়া (৪০), পিতা- মৃত ফয়জুল মিয়া, সর্ব সাং-শিমুলবাক, থানা- শান্তিগঞ্জ, জেলা- সুনামগঞ্জকে বিবাদী করে শান্তিগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে অদ্য ১৪/০৫/২৫ ইং ধান লুটপাটের এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন,বিবাদীগণ একদলভুক্ত দাঙ্গাবাজ, লাঠিয়াল,পরধনলোভী ও উৎশৃঙ্খল প্রকৃতির লোক। আমার দুই ছেলে যথাক্রমে জাহাঙ্গীর আলম (৪০) (লন্ডন প্রবাসী) এবং সামছুল আলম (৩৫) (দুবাই প্রবাসী)। আমি ও আমার এক পুত্রবধূ বাড়িতে থাকি। আমার বড় ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের সাথে বিবাদীদের জমিজমা, জলমহাল ইত্যাদি নিয়ে বেশ কিছুদিন যাবৎ মনোমালিন্য চলিয়া আসিতেছে। আমার ছেলেরা প্রবাসে থাকার সুযোগে উল্লেখিত আসামাীগণ আমাদের ক্ষয়ক্ষতি করার পায়তারা করিতেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ০২/০৪/২৫ ইং তারিখে সকাল ১০ ঘটিকার সময় উল্লেখিত বিবাদীগণ আমাকে বাড়ির সামনে পাইয়া অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে শুরু করে এবং মারপিট করতে উদ্যত হয়। আমার ডাক- চিৎকারে আশপাশের লোকজন আগাইয়া আসিলে আমি বিবাদীদের কবল হইতে রক্ষা পাই। জমিজমা,জলমহাল ইত্যাদি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে বিবাদীদের দ্বারা যেকোন সময় আমার ও আমার পরিবারের লোকজনের জানমালের ক্ষতিসাধন হওয়ার সম্ভাবনা বিদ্যমান।
স্হানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানাযায়,আওয়ামী লীগের শাসনামলে নির্যাতিত জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে জোরপূর্বক সম্পত্তি দখল ও প্রাণে মারার জন্য হামলা করে সন্ত্রাসী মাসুদ ও তাহার ভাই বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান শাহীন। বিগত আওয়ামীলীগের আমলে ২০২২-২০২৩ সালে জাহাঙ্গীরকে হত্যা করার জন্য আওয়ামী সন্ত্রাসী চেয়ারম্যান ও তাহার ভাই গুন্ডা দিয়ে কয়েক বার আক্রমণ করে এবং তাহার শিশু বাচ্চাটিকে অপহরণ করার হুমকি দেয়। এই কুখ্যাত চেয়ারম্যান তাহার প্রভাব খাটিয়ে তাহার স্ত্রীকে সরকারি চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয় এবং পুলিশী মামলা দেয়। ভয়ে প্রাণ বাঁচানোর জন্য লন্ডনে চলে যান জাহাঙ্গীর। তারা দুই ভাই দেশে আসলে হত্যা করবে বলেও হুমকি দেয়।
অদ্য ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে শান্তিগঞ্জ থানায় মোবাইলযোগে বিষয়টি অবগত করলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় লিখিত কোন অভিযোগ দায়ের হয়নি।
ঘটনার সম্পর্কে ইউপি সদস্য মাহবুব ইসলাম বলেন,স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত হয়েছি।
ইউপি চেয়ারম্যান শাহীনুর রহমান শাহীন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। এ ধরনের কোন ঘটনা আমার জানা নেই। জাহাঙ্গীর আমার চাচাতো ভাই। তার সাথে আমার পারিবারিক কোন দ্বন্দ নেই।
এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আকরাম আলী এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করেন।