|| রাঙামাটি প্রতিনিধি ||
রাঙামাটিতে পুলিশ প্রায় ৫ ঘন্টা অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য ভুয়া এনআইডি তৈরীর সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারী) ভোরে ১ জনকে আটক করেছে। তার নাম মো:নুরু জালাল মুন্না (৪০)।
পুলিশ জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে শহরের ভেদভেদী এলাকার "সাইফুল আইটি এন্ড কম্পিউটার টেনিং সেন্টার" কেন্দ্রীক ভুয়া এনআইডি তৈরী সিন্ডিকেট জাল জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ করছে, এমন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে প্রায় ৫ ঘন্টা ধরে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে অভিযান চালিয়ে পুলিশ বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারী) প্রতিষ্ঠানটির মালিক মো:নুরু জালাল মুন্নাকে প্রমানসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। আটক ব্যক্তি দালালের মাধ্যমে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গা গ্রাহক সংগ্রহ করে তাদেরকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে জাল এনআইডি তৈরী করে দিতো। তার এই কার্যক্রমের সাথে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের প্রভাবশালী রোহিঙ্গা দালাল জড়িত বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। পুলিশ আরও জানায়, রাঙামাটি পাসপোর্ট অফিস থেকে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় একটি পাসপোর্ট পুলিশি তদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়। সেটি তদন্তের সূত্রে পুলিশ জানতে পারে, তার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণার্থীদের এনআইডি নিয়ে সেগুলোতে রোহিঙ্গা নারী/পুরুষের ছবি বসিয়ে ভুয়া এনআইডি তৈরী করে।তার কাছ থেকে পুলিশ ভুয়া ৩টি এনআইডি, ৩ টি পাসপোর্ট ডেলিভারি স্লিপ, পুলিশ কনসটবলের ৩ টি ভুয়া আইডি কার্ড, জাল এনআইডি, ডাক্তার, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন স্তরের সরকারী কর্মকর্তার সীলমোহর, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৩ টি প্যাড, জমির জমাবন্দী ও নার্সিং আইডি কার্ড জব্দ করা হয়। এছাড়াও জালে জালিয়াতির কাজে ব্যবহৃত ১ টি কম্পিউটার, ১ টি মনিটর, ১টি স্ক্যানার, ২ টি প্রিন্টার ও ১ টি লেমেন্যাটিং মেশিনসহ বিপুল পরিমাণ যন্ত্রপাতি জব্দ করে। আটক ব্যক্তি শহরের শিমুলতলী এলাকার বাসিন্দা মো: শাহ জাহান'র পুত্র।
তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মামুন জানায়,দীর্ঘদিন ধরে শহরের ভেদভেদী এলাকায় কম্পিউটার টেনিং সেন্টারে আড়ালে রোহিঙ্গাসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িতদের জন্য আইডি কার্ড, এনআইডি, সীলমোহর, জমির দলিলপত্র তৈরী করে আসছিলো আটক ব্যক্তি। একটা পাসপোর্ট ভেরিফাই করতে গিয়ে পুলিশ বিষয়টি জানতে পারে। এরপর রাঙামাটি জেলা পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ'র তত্ত্বাবধানে একাধিক গোয়েন্দা টীম তাকে নজরদারীতে রাখে। বেশ কয়েকদিনের গোয়েন্দা নজরদারীর পর কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলী'র নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক আভিযানিক টীম
৫ ঘন্টা স্থায়ী অপারেশনে বুধবার ভোরে জাল এনআইডি ও জাল জালিয়াতিতে ব্যবহৃত ষড়ম্জামসহ তাকে আটক করে। বুধবার পুলিশ
তাকে আদালতে তুললে, বিজ্ঞ আদালত তাকে জেলে প্রেরণ করেন।
রাঙামাটি সদর সার্কেল'র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: জাহেদুল ইসলাম মিডিয়াকে বলেন, একটি পাসপোর্ট তদন্তের সূত্র ধরে পুলিশ তাকে হাতেনাতে আটকে সক্ষম হয়। পুলিশ সদস্যের আইডি কার্ড, এনআইডি, জমির বিভিন্ন দলিল, পদস্থ কর্মকর্তার ও জনপ্রতিনিধির সীলমোহর থেকে শুরু করে সে রাষ্ট্রের ক্ষতি হয় এমন অনেক কিছুই নকলের সাথে তার প্রতিষ্ঠান জড়িত। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০