রিপন মিয়া, সদর প্রতিনিধি মৌলভীবাজার।
লুডু খেলা বা সাপলুডু, আশাকরি খেলাটির সাথে কমবেশী সবাই পরিচিত। ঘরে বসে খেলার মতো সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা সম্ভবত লুডু। বিশেষ করে মেয়েদের কাছে ছিল অবসর সময়ের সঙ্গী। তবে মোবাইলে নয়! সেটি ছিল কাগজের লুডু এবং চার-ছক্কার খেলা। বর্ষা মৌসুমে ঘরে ভাই বোন আত্বীয় স্বজনের সাথে সাপ লুডুর খেলা ভোলার নয়। কিংবা অলস সময়ে বৃষ্টির,দিনে আনন্দের সাথে সময় পার করার জন্য অনেকেই খেলতো এই লুডু খেলাটি।কিন্তু এখন? এই খেলাটি এক শ্রেণীর মানুষের কাছে জুয়ায় পরিণতি হয়েছে। এই খেলার সফটওয়্যার’টি মোবাইলে আসার পর জুয়ারিদের কাছে সহজ সরঞ্জাম হিসাবে ব্যবহার করছে তারা। মোবাইল লুডু বা মোবাইলে জুয়া। মৌলভীবাজারে সর্বত্র মোবাইলে চলছে জমজমাট লুডু জুয়া। এতে করে বিপথগামী হচ্ছে ছাত্র ও যুবসমাজসহ নানা পেশার মানুষ। বিভিন্ন সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিভিন্ন বাসষ্ট্যান্ড, ছোট-বড় বিভিন্ন দোকানে, খেলার মাঠে, স্কুল মাঠে বা গোপন কোনো নির্জন ঘরে চলছে এসব লুডু জুয়া। বিশেষ করে চা-স্টল গুলোতে। সচেতন নাগরিকরা মনে করছে এর মাধ্যমে ছাত্র ও যুবসমাজ নষ্টের পথে যাচ্ছে। এসব জুয়াকে এখনই বন্ধ না করলে যুবসমাজ বিপথগামী হবে। এক শ্রেণীর লোকেরা প্রতি গেইমে ২০ থেকে ৩০ টাকা বাজি ধরছে। আরেক শ্রেণীর জুয়ারী’রা ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা প্রতি গেইমে খেলছে। কেউ হারছে, কেউ জিতছে। যিনি হারছেন-তিনি জিতার লোভে আবারও খেলেন! এক সময় হারা ব্যক্তির পকেটের টাকা চলে আসে শূন্যের কোটায়। কেউ শূন্য থেকে হিরু! আবার কেউ হিরু থেকে শূন্যতেই শেষ। অন্যদিকে সারাদিনের উপার্জিত অর্থ সন্ধ্যার সময় জুয়ার পেছনে ব্যয় করছে যুবকরা। যখন জুয়ারি ব্যক্তি বাড়ি ফিরে, তখন বাড়ির লোকজন জানতে চায়-সারাদিনের উপার্জিত অর্থ কোথায়? তখন জুয়ারি’কে বলতে হয় মিথ্যা কথা! আজ উপার্জন হয়নি। একদিন হারতে হারতে একসময় নিঃস্ব হয়ে যায় সেই জুয়ারী ব্যক্তি। সেটাই স্বাভাবিক। হার-জিতার নাম’ই হচ্ছে জুয়া। একমাত্র জুয়াই মানুষকে ধ্বংস করে তুলে। এবার সেটা ক্যাসিনো বলেন, বা আইপিএল অথবা লুডু! দেশে শতশত প্রমাণ আছে যে, জুয়ায় মানুষকে একদম পথের ফকির বানিয়ে দেয়। তখন সে কর্জ,ধার করতে করতে একটা সময় মানসিক অশান্তিতে থাকে এবং তার ঘরের বাবা-মা’সহ সংসারের সবাই তখন অশান্তিতে ভুগে। তাই এখন’ই সমাজ থেকে সব ধরনের জুয়া বন্ধ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিক সমাজ। ঢাকায় যেভাবে ক্যাসিনো’তে অভিযান চালানো হচ্ছে। ঠিক সে ভাবেই মৌলভীবাজারে সর্বত্র জায়গায় অভিযান চালানো দরকার। তাহলেই আস্তে আস্তে জুয়া খেলার শুরুটা, প্রথমেই ধ্বংস করা সম্ভব হবে মনে করি। তাই প্রত্যেক এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর দিতে। মোবাইলে জুয়া বন্ধে জনসচেতনা বাড়াতে হবে। সবাই যার যার জায়গা থেকে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সাংবাদিক কয়েছ আহমদ বলেন, মৌলভীবাজারে কিছু অলিগলিতে বসে মোবাইলে লুডু খেলার নামে চলছে জুয়া। এটা বন্ধে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০