মিজানুর রহমান রুমান, সুনামগঞ্জ :
শিক্ষক হলো মানুষ গড়ার কারিগর। শ্রদ্ধা ও সম্মানের দিকে যার স্থান পিতা মাতার পরেই। চারিত্রিক বৈশিষ্টের দিকে শিক্ষক হবেন মহিয়ান। কিন্তু শিক্ষক যখন কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সাথে নৈতিকতা বিবর্জিত আচার আচরণ করেন তখন তার স্থান কোথায় গিয়ে ঠেকে সেই প্রশ্ন জাতির বিবেকের কাছেই রইল। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলাধীন মাইজবাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন এর বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারী) দুপুরেরদিকে ম্ইাজবাড়ি সপ্রাবি’র প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন অত্র বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণী পড়–য়া চার ছাত্রীকে বিদ্যালয়ের ছাদের উপরে নিয়ে যায়। সেখানে পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ছাত্রীদের অনৈতিক কাজে লিপ্ত হওয়ার জন্য কু-প্রস্তাব দেয়। এমনকি ছাত্রীদের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেওয়ার চেষ্টা করেন বলেও জানান অভিযোগকারী ছাত্রীরা। ছাত্রীরা তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ছাদ থেকে নীচে নেমে আসার চেষ্টাকালে লম্পট শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন তাদের হাত টেনে ধরে হুমকি দেয় পরিবারের কাউকে এবিষয় জানালে পরীক্ষায় ফেল করাবেন। ছাত্রীরা আরও জানান, প্রতিদিনই লম্পট শিক্ষক বিভিন্ন অজুহাতে ছাত্রীদের ছাদের উপরে নিয়ে গিয়ে তার মোবাইলে থাকা পর্ণো ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে তাদের সাথে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হওয়ার জন্য প্ররোচিত করতে থাকে। ছাত্রীরা নিজের ও পরিবারের মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে এতদিন ছাত্রীরা পরিবারের কাউকে কিছু বলেনি। আজ মঙ্গলবার সকালে ওই চার ছাত্রী বিদ্যালয়ে না যাওয়ার জন্য অনীহা প্রকাশ করে। ছাত্রীদের অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য বার বার বলার পরও ছাত্রীরা কোন ভাবেই বিদ্যালয়ে যেতে না চাওয়ায়। অভিভাবকগণ বিদ্যালয়ে না যাওয়ার রহস্য জানতে ছাত্রীদের উপর চাপ প্রয়োগ করেন। একপর্যায়ে ছাত্রীরা নিজ নিজ অভিভাবকদের কাছে লম্পট শিক্ষক গিয়াস উদ্দিনের কু-কর্মের কথা প্রকাশ করেন। ছাত্রীদের সাথে শিক্ষকের এমনতর আচরণে তারা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। ছাত্রীদের অভিভাবকগণ এলাকার লোকজনকে বিষয়টি অবহিত করার পর এলাকাবাসী ক্ষুব্দ হয়ে প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ে আটক করে রাখেন। তাৎক্ষণিক ভাবে পুলিশে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিনকে পুলিশ হেফাজতে থানায় নিয়ে আসেন। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হোসেন জানান,ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে অবশ্যই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মাইজবাড়ি গ্রামের ইসলাম উদ্দিন বলেন, এইসব লম্পট চরিত্রের শিক্ষকরার কারনে আমরা অভিভাবকরা সব সময় ভয়ের মাঝে থাকি আমরার সন্তানরার লাগি। অভিযুক্ত শিক্ষক যদি হাছাই দোষী সাব্যস্থ অয় আমরা এলাকাবাসী এর দৃষ্টান্তমুলক বিচার দাবী করি। সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সহিদুর রহমান জানান, প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিনকে এলাকাবাসীর কবল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। যৌন নিপীড়নের অভিযোগের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন মামলা দায়ের করা হয়নি। মামলা দায়ের করা হলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।