সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কুলজ্ঞ ইউনিয়নের বহুল আলোচিত তরুণ ব্যবসায়ী ও যুবলীগ নেতা জীবন দাস হত্যাকান্ডের দুই মূল পরিকল্পনাকারীকে গ্রেফতার করেছে সি আই ডি পুলিশের একটি দল।
বুধবার(৩০অক্টোবর) সকাল ১১টায় সুনামগঞ্জ সি আই ডি জোনের ইন্সস্পেক্টর মোঃ আশরাফের নেতৃত্বে সি আই ডি পুলিশের সদস্যরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বোয়ালিয়া বাজারে অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন আলোচিত জীবন দাস হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী বোয়ালিয়া গ্রামের মৃত সিদ্দেক মিয়ার ছেলে মোঃ ওয়াহিদ মিয়া(৫৫) ও পাশ্ববর্তী ধাইপুর গ্রামের মোঃ সুজন মিয়ার ছেলে লকোজ মিয়া(৪২)।
এই আলোচিত হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে চলতি বছরের ২৪ মে ।
ঘটনার দিন সন্ধ্যায় কুলজ্ঞ গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে মোঃ রাজন মিয়া জীবন দাসকে তার গ্রামের বাড়ি বোয়ালিয়া বাজার থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকেই জীবন দাস নিখোঁজ হন। তার আত্মীয় স্বজনরা কোন খবরাখবর না পেয়ে তারা উদ্বিগ্ন ছিলেন। কিন্ত ঘটনার ৯ দিন পর গত ২রা জুন পাশ্ববর্তী বিবিয়ানা নদীতে জীবন দাসের অর্ধগলিত ভাসমান লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন তার স্বজনদের খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ চিহিৃত করেন এবং তাৎক্ষণিক দিরাই থানা পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে দিরাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় নিহতের বড়ভাই লিটন দাস বাদি হয়ে গত ৪ জুন কুলজ্ঞ গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে রাজন মিয়াকে প্রধান করে আরো কয়েকজন অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তিকে আসামী করে দিরাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। যার মামলা নং ০৪।
মামলা দায়েরের পর পুলিশ গত আগষ্ট মাসে ধাইপুর গ্রামের আরেক সন্দেহভাজন মনির হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ রিমান্ডে নিলে সে জীবন হত্যাকান্ডের মূল দুই পরিকল্পনাকারী আজকের গ্রেফতারকৃত বোয়ালিয়া গ্রামের মোঃ ওয়াহিদ মিয়া ও পাশ্ববর্তী ধাইপুর গ্রামের লকোজ মিয়া(৪২)’র সংশ্লিষ্টতার কথা ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে স্বীকার উক্তি দেয়। তবে প্রধান আসামী রাজন মিয়া হত্যাকান্ডের পর থেকে এলাকা ছাড়া হয়ে আত্মগোপনে চলে যান। পরবর্তীতে বাদিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি সি আই ডিতে হস্তান্তর করা হয়। আর এরই অংশ হিসেবে সি আই ডির ইন্সস্পেক্টর মোঃ আশরাফের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডের মূল দুই পরিকল্পনকারীকে বোয়ালিয়া বাজারের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এ ব্যাপারে মামলার বাদি নিহত জীবন দাসের বড়ভাই লিটন দাস জানান, আমার ছোটভাই যুবলীগের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে এই অঞ্চলের অসহায় মানুষজনের সুখ দুঃখে সব সময় পাশে থাকতেন। কিন্ত এই চক্রটি আমার ভাইকে সহ্য করতে না পেরেই তাকে হত্যা করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই তাকে হত্যা করা হয়। তিনি এই হত্যাকান্ডের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে দ্রæত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি প্রদানের দাবী জানান।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সি আই ডি জোনের ইন্সস্পেক্টর মোঃ আশরাফ গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।