আশরাফুর রহমান রাহাত, জামালপুর প্রতিনিধিঃ
জামালপুর পৌর শহরের রামনগর মৌজায় প্রায় তিন কোটি টাকা মূল্যের এক বৃদ্ধের জমি পনের লাখ টাকা ঘুষে অন্যের নামে রেকর্ড করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে।
জামালপুর জেলা সেটেল্টমেন্ট অফিসে কর্মরত প্রধান সহকারী কাম সার্ভেয়ার আমিনুর ইসলামের নামে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী বৃদ্ধ মজিবর রহমান।
এ খবর শুনে বৃদ্ধ মজিবর রহমানের বৃদ্ধ স্ত্রী স্ট্রোক করেন, তাকে বেসরকারি এমএ রশিদ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।
ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগে মজিবর রহমান বলেন,
শহরের রামনগর মৌজার বিআরএস ৬২ নং দাগে ১১৭ শতাংশ এবং ৬৩ নং দাগে ৯৭ শতাংশ জমির প্রথম দাগে ৫ শতাংশ এবং ২য় দাগে ৯৫ শতাংশ মোট ১০০ শতাংশ জমি ক্রয় সূত্রে মালিক এবং ভোগ দখলকারী।
যেহেতু ঐ জমি অর্পিত সম্পত্তি তাই জামালপুর জেলা জজ আদালতের ভূমি জরিপ ট্রাইবুনালের মামলায় রায় পেয়ে নাম জারি সহ সব কাজ সম্পন্ন করেন মজিবর।
এরপরে ডিজিটাল রেকর্ড করতে গেলে সার্ভেয়ার আমিনুর শহরের একটি রেস্টুরেন্টে বসে ১২ লাখ টাকা দাবি করেন।
এ কথায় তিনি তার উপর জুলুম না করার অনুরোধ জানান, তখন সার্ভেয়ার আমিনুর তাকে জানান, কাজটি করে দিলে প্রতিপক্ষ তাকে ১৫ লাখ টাকা দিবেন।
তিনদিন পর আবার বৃদ্ধ মজিবর সার্ভেয়ারের সাথে দেখা করলে তিনি পরবর্তীতে আপত্তি আবেদন দিয়ে রেকর্ড সংশোধনের পরামর্শ দেন।
বৃদ্ধ মজিবর তখন খুঁজ নিয়ে জানতে পারেন তার জমি স্হানীয় কমিশনার মিল্টনের নামে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে রেকর্ড করে দিয়েছেন সার্ভেয়ার আমিনুর।
বৃদ্ধ মজিবর তার অভিযোগে আরও বলেন,
অভিযুক্ত সার্ভেয়ার আমিনুর শহরের সিংহজানী মৌজায়
পাসপোর্ট অফিসের পিছনে ৭ তলা বাসা নির্মাণ করছে
তাই টাকার প্রয়োজনে সে এমন কাজ করছে।
ভূমি মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং দুদক বরাবর এই অভিযোগ জমা দিয়েছেন তিনি।
কান্নাজড়িত কন্ঠে মজিবর রহমান বলেন, এই জমি অন্যের নামে রেকর্ড হয়ে যাওয়ার খবর শুনে আমার স্ত্রী স্ট্রোক করে হাসপাতালে ভর্তি।
আমি এই মুহূর্তে অসহায় হয়ে বিভিন্ন অফিসের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। আমি আমার জমি ফেরত চাই, আমিনুরের শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আমিনুর কোন মন্তব্য করবে না বলে জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিশনার কামরুল হাসান মিল্টন জানান, আমার কাগজপত্র দেখেই আমাকে রেকর্ড দিয়েছেন সার্ভেয়ার। আমি কোন ঘুষ দেইনি।
ভারপ্রাপ্ত জোনাল সেটেল্টমেন্ট অফিসার এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম জানান, অভিযোগের কোন কপি হাতে পাইনি, অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।