|| রাঙামাটি প্রতিনিধি ||
রাঙামাটিতে পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা রোববার (১ সেপ্টেম্বর) কাপ্তাই হ্রদের মৎস্য ব্যবসায়ীদের কাছে দেড় কোটি টাকার বেশী চাঁদার দাবীতে মাছ আহরণে প্রথম দিনই মাছ শিকার বন্ধ করে দিয়েছে। ৪মাস ৫ দিনের অপেক্ষার পর কাপ্তাই হ্রদ থেকে মাছ আহরণের শুরুতেই হোঁচট খেলো জেলে ও ব্যবসায়ীরা। মাছ আহরণ বন্ধ হওয়ায় বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় হুমকীতে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) ও ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) আলাদাভাবে রাঙামাটির মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতি ও
কাপ্তাই হ্রদ বৃহত্তর মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতি’র নিকট দেড় কোটি টাকার বেশী চাদার দাবীতে হ্রদে মাছ শিকার বন্ধ করে দিয়েছে। কার্প জাতীয় মাছের প্রজনন ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য রাঙামাটি বিএফডিসি কাপ্তাই হ্রদে ৪ মাস ৫ দিন মাছ শিকার বন্ধ রাখে। কাপ্তাই হ্রদে বর্তমান বিএফডিসি’র তালিকাভুক্ত ২৬ হাজার ৭৮৮জন জেলেসহ প্রায় ৩৫ হাজার জেলে মাছ শিকারের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে । ৪ মাস ৫ দিন কার্প জাতীয় মাছের প্রজনন, পোনা ও মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে মৎস্য আহরণ বন্ধ ছিলো। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর ৩১ আগষ্ট দিনগত রাত ১২ টার পর থেকে হ্রদে মাছ আহরণ যায় জেলেরা। মাছ আহরণের জন্য কাপ্তাই হ্রদে নেমে চাঁদাবাজদের বাঁধার মুখে ফিরে আসে। দীর্ঘদিনের প্রস্তুতির পর মাছ শিকারে নেমে বেকার হয়ে গেলো বিএফডিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের তালিকাভুক্ত ২৬ হাজার ৭৮৮ জন সহ প্রায় ৩৫ হাজার জেলে আর তালিকাভুক্ত ৭৭জনসহ প্রায় ১২৫ জন ব্যবসায়ী রয়েছে । বিএফডিসি গত বছর ১৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করে। চলতি বছর মাছ আহরণ মৌসুমে সাড়ে ১৬ কোটি টাকা রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
৭২৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তর কৃত্রিম জলাশয় কাপ্তাই হ্রদ নির্ভর অর্থনীতি ও জীবিকার সাথে জড়িত ব্যবসায়ী ও জেলেরা আরও জানায়, ইউপিডিএফ ও জেএসএস পৃথকভাবে কাপ্তাই হ্রদ বৃহত্তর মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতি, রাঙামাটি’র কাছে ৫০ লাখ টাকা হারে চাঁদা দাবী করে। একইভাবে রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির নিকট ২৫ লাখ টাকা হারে চাঁদা দাবী করে। সন্ত্রাসীদের চাহিদা মোতো চাঁদা পরিশোধ ছাড়া হ্রদ থেকে কোন জেলে মাছ ধরতে পারবে না। দাদনসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবসায়ীরা টাকা বিনিয়োগ করে শক্তভাবে ফেসে গেছে। হ্রদ নির্ভর খাগড়াছড়ির মহালছড়ি, জেলার মারিশ্যা ও কাপ্তাই জেটিঘাটস্থ ব্যবসায়ী ও জেলেদের নিকট কত টাকা চাঁদা দাবী করেছে তা জানা সম্ভব হয়নি।
রাঙামাটি শহরের আশপাশের জেলেরা বিএফডিসি পল্টনে প্রায় ৪১ মেট্রিক টনের মতো মাছের যোগান দিয়েছে। অথচ এ সময়ে পল্টনে ১০০ মেট্রিক টন মাছ আহরণের সম্ভাবনা ছিলো। মাছের যোগান কম হওয়ায় চট্টগ্রাম থেকে আনা ট্রাকে ট্রাকে বরফ গলে যাচ্ছে।
এদিকে বন বিভাগের নিকট ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবীর খবর চাউর হলেও কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা জনিত কারণে বিভাগটি তাদের দাপ্তরিক নাম ব্যবহার করতে নিষেধ করে।
রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতি সহ-সভাপতি জানান, পৃথক পৃথকভাবে সন্ত্রাসীরা ২৫ লাখ টাকা হারে চাঁদা দাবী করেছে। কাপ্তাই হ্রদ বৃহত্তর মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতি সভাপতি কবির আহমেদ বলেন, একই কায়দায় তাদের কাছেও সন্ত্রাসীরা ৫০ লাখ করে ১ কোটি টাকা চাঁদা দাবী করেছে।
রাঙামাটি বিএফডিসি ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো: আশরাফুল আলম ভুঁইয়া সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শুনেছি, তবে বিস্তারিত জানি না।না জেনে কোন মন্তব্য করতে পারছি না।#