সদর প্রতিনিধি মৌলভীবাজার:
মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে দায়িত্বরত নার্স ও চিকিৎসকের অবহেলায় জাকিয়া রেহানা জারা নামে ১৬ মাস বয়েসী এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে মৃতের স্বজনের মাঝে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে মডেল থানা পুলিশের সহযোগিতায় অবস্থা স্বাভাবিক হয়।
জানা যায়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের রঘুনন্দনপুর গ্রামের জুনেদ আহমদের শিশু কন্যা জারা’র গত রোববার থেকে জ্বর ও বমি শুরু হয়। এরপর ডা. জিল্লুল হকের পরামর্শেক্রমে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করেন গত সোমবার বিকেলে ৫টার দিকে। মৃতের বাবা জুনেদ আহমদ মৌখিক অভিযোগ জানান, অসুস্থ অবস্থায় জারাকে ভর্তি করার পর শিশুটি রোগ ভোগে মারাত্মক অস্বস্থি শুরু করলে কর্তব্যরত নার্স ও জরুরী বিভাগের চিকিৎসককে বিপদাপন্ন অবস্থা জানিয়ে কনসালটেন্সকে ডেকে শিশুকে প্রয়োজনীয় ট্রিটমেন্ট দেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা ডাক্তারকেও জানাননি কিংবা কর্তব্যরত চিকিৎসক বা নার্স কোন চিকিৎসা সেবা না দিয়ে আয়াকে শিশুটির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার নির্দেশ দেন। ওইদিন রাত ৮টার দিকে ভর্তি হওয়া শিশুর খিচুনি শুরু হলে রোগীর অভিভাবক ফের নার্স ও জরুরী বিভাগের চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হয়ে শিশুটির চিকিৎসায় কোন ব্যবস্থা নেননি। এ সময় দায়িত্বরত নার্স মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন বলে জানান রোগীর চাচা ব্যবসায়ী বদরুল ইসলাম। শিশু রোগীর কষ্ট দেখে স্বজনরা উত্তেজিত হলে নার্স চিকিৎসকের কোন পরামর্শ ব্যতিত রাত ৯টার দিকে একটি ইনজেকশন পুশ করেন। এর আগেই শিশুটি মারা যায় বলে তার বাবা জুনেদ আহমদ দাবি করেন। এ বিষয়টি তারা মৌখিক ভাবে আবাসিক মেডিকেল অফিসার জানিয়ে লাশ নিয়ে বাড়িতে চলে যান। মৃতের অভিভাবক লাশের ময়না তদন্ত করতে সম্মত না হওয়ায় আবাসিক মেডিকেল অফিসার লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন মারা যাওয়া শিশুর পিতাকে।
ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আহমদ ফয়সাল মাবাইল ফোনে জানান এ বিষয়টি মৌখিক অভিযোগে জেনেছি। তাদেরকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। এ পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তাদের অভিযোগ পেলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তাদের প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মৃত শিশুর পিতা জুনেদ আহমদ বলেন লাশের দাফন সম্পন্ন করতে আজ মঙ্গলবার বিকেল হয়ে গেছে। তাছাড়া মানসিক অবস্থা ভাল না থাকায় আগামীকাল বুধবার সকালে ডাক্তার ও নার্সের গাফিলতির বিষয়টি লিখিত আকারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কাছে দিব।
মডেল থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান গতকাল সোমবার রাতে হাসপাতালে সরেজমিন গিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সামাল দিয়ে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। শিশুর বাবা স্বাভাবিক হওয়ার পরে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কাছে লিখিত অভিযোগ দেবেন বলে শুনেছি। এরপর এ ব্যাপারে আইনী প্রক্রিয়া শুরু হবে।