ঢাকাসোমবার , ২৪ নভেম্বর ২০২৫
  1. সর্বশেষ
  2. সারা বাংলা

ভাড়া কমিয়েও যাত্রী শুন্যতায় ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চ, কমেছে নৌযান।

প্রতিবেদক
নিউজ ভিশন
৪ জুলাই ২০২২, ১০:০০ অপরাহ্ণ

Link Copied!

বরিশাল জেলা প্রতিনিধি
স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সপ্তাহ না পেরোতেই বরিশাল-ঢাকা রুটের লঞ্চের ভাড়াই শুধু কমেনি, কমেছে নৌযানের সংখ্যাও। যাত্রী কমায় বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চের সংখ্যাও কমানো হয়েছে। লঞ্চ মালিকরা বলছেন, ব্যাবসায়িক কারণে ভাড়া একটু কমানো হয়েছে। তবে এটা কোনো সমস্যা না।

প্রথম দুই-এক মাস যাত্রী একটু কম হবে। পরে আবারও স্বাভাবিক হয় যাবে। কারণ হিসেবে মালিকরা বলছেন, লঞ্চে পরিবার-পরিজন ও মালপত্র নিয়ে শান্তিতে যাওয়া যায়। বাসে সেটা সম্ভব না। যাত্রীরা লঞ্চেই ফিরে আসবে।

পরিস্থিতি আগের জায়গায় ফিরে আনতে চেষ্টা করছেন মালিকরা। তারই অংশ হিসেবে গত এক সপ্তাহে ডেকের ভাড়া প্রায় অর্ধেক করা হয়েছে। একইভাবে প্রথম শ্রেণির কেবিনে কমেছে ৫০০ টাকা আর দ্বিতীয় শ্রেণির সোফার ভাড়া ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে কমানো হয়েছে গত কয়েক দিনে। ভাড়া কমিয়েও যাত্রী মিলছে না লঞ্চে। প্রতিদিন গড়ে কম করে হলেও ৫০ শতাংশ যাত্রী নৌপথ থেকে মুখ ফিরিয়েছে। তারা পদ্মা সেতু হয়ে বাসে যাতায়াত করছে।

প্রতিদিন বরিশাল থেকে সাতটি লঞ্চ ছেড়ে যায়। ঠিক একইভাবে ঢাকা থেকে বরিশালের পথে আসে সাতটি লঞ্চ। কিন্তু গত ৩০ জুন বরিশাল থেকে পাঁচটি লঞ্চ ছেড়ে গেলেও ঢাকা থেকে এসেছে চারটি। আর ১ জুলাই বরিশাল থেকে ছেড়েছে চারটি লঞ্চ।

লঞ্চের সংখ্যা কমার কারণ হিসেবে মালিকরা বলছেন, ঢাকা-বরিশাল যাওয়া-আসা করতে একটি লঞ্চের বিভিন্ন ফি ও তেল খরচসহ সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টাকা খরচ হয়। টাকা না উঠলে মালিকরা লঞ্চ চালাবেন কিভাবে? আগে একটি লঞ্চের ডেকে ৫০০ থেকে ৭০০ যাত্রী আসত। সেখানে শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে এসেছে ২০০ থেকে ২৫০ যাত্রী।

যদিও গত বছরের নভেম্বরে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর লঞ্চগুলোর ডেকের ভাড়া ২৫০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫০ টাকা করা হয়েছিল। সেখানে যাত্রীসংকটে কোনো ঘোষণা ছাড়াই লঞ্চগুলো এখন ডেকের ভাড়া ২০০ টাকা, আবার কেউ কেউ ১৫০ টাকাও নিচ্ছেন। ডেকের পাশাপাশি কেবিনের ভাড়াও বেড়েছিল ২০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। এখন তা কমিয়ে এক হাজার ২০০ টাকার কেবিন এক হাজার এবং ডাবল কেবিনে দুই হাজার ৪০০ টাকার স্থলে দুই হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। কোনো লঞ্চ ৮০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকাতেও কেবিন ভাড়া দিচ্ছে।

এমভি মানামী লঞ্চের কর্মচারী বাবুল মিয়া বলেন, তাদের লঞ্চে ডেকের ভাড়া ৩৫০-এর জায়গায় ২০০ টাকা করা হয়েছে। দেড় হাজার টাকার সিঙ্গেল কেবিন এক হাজার টাকা এবং ডাবল কেবিন আড়াই হাজার থেকে কমিয়ে দুই হাজার করা হয়েছে। কারণ যাত্রী আগের চেয়ে অর্ধেকে নেমে এসেছে। শনিবার ঢাকা থেকে মাত্র শ তিনেক যাত্রী নিয়ে বরিশালে এসেছি।

পদ্মা সেতুর কারণে যাত্রী ৩ ভাগের ১ ভাগে নেমে এসেছে বলে জানান সুরভী-৯ লঞ্চের কর্মচারী দিপু মিয়া। তিনি বলেন, সিঙ্গেল কেবিনের যাত্রী এখন বাসে চলে যাচ্ছে। তারা তিন ঘণ্টায় ঢাকা যেতে পারছে। তাহলে তারা কেন পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষা করবে? লঞ্চের সংখ্যাও কমেছে বলে জানান কর্মচারীরা। লঞ্চের সঙ্গে ভাড়াও কমেছে। কিন্তু খরচ তো কমেনি বলে মালিকদের দাবি।

বরিশাল-ঢাকা রুটে চলাচলকারী কয়েকটি লঞ্চের সুপারভাইজারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পদ্মা সেতু চালুর পর গত কয়েক দিনে ক্রমান্বয়ে কমছে লঞ্চের যাত্রী। সরেজমিনে লঞ্চঘাট এলাকায় ২৬ জুন গিয়ে দেখা যায়, ঢাকার উদ্দেশে ছয়টি লঞ্চ বরিশাল নদীবন্দর ত্যাগ করেছে। এর মধ্যে এমভি সুন্দরবন-১১ লঞ্চের ২৪০টির মধ্যে ২১৫টি কেবিনের সিট বিক্রি হয়েছে। অ্যাডভেঞ্চার-১ লঞ্চের ১৬৫টির মধ্যে ৭৫টি, এমভি কুয়াকাটা ২৫০টির মধ্যে ৭৮টি, পারাবাত-১২-তে ২৪০টির মধ্যে ১২০টি টিকিট বিক্রি হয়েছে। সুরভি-৭ এবং পারাবাত-৯-এর অবস্থাও একই। দুটি লঞ্চের প্রায় ৩০ শতাংশ কেবিন খালি ছিল।

২৭ জুন রাতে বরিশাল নদীবন্দর থেকে সুরভী-৯, সুন্দরবন-১০, পারাবাত-১৮ ও মানামী লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কোনোটিতে ৫০ শতাংশ, কোনোটিতে ৩০ শতাংশ যাত্রী কম ছিল। শুধু ডেকের যাত্রী কম তা নয়, ছেড়ে যাওয়া লঞ্চগুলোর প্রায় অর্ধেক কেবিন খালি গেছে। এভাবে যাত্রী কমলে মালিকদের লোকসান গুনতে হবে।

২৮ জুন বরিশাল নদীবন্দরে ছয়টি লঞ্চ নোঙর করা ছিল। রাত সাড়ে ৮টার পর সেগুলো ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কুয়াকাটা-২ লঞ্চের ২৫০টি কেবিনের মধ্যে ভাড়া হয়েছে ৭৮টি। অ্যাডভেঞ্চার-১ লঞ্চে ১৬৫টি কেবিনের মধ্যে ৭৫, পারাবাত-১২-এর ২৪০টির মধ্যে ১২০টি এবং সুন্দরবন-১১-এর ২৪০টির মধ্যে ১১৫টি ভাড়া হয়েছে।

এ ছাড়া সুরভী-৭ ও পারাবাত-৯ লঞ্চের কর্মকর্তারা বলেছেন, তাদেরও ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কেবিন খালি ছিল। যাত্রী কেমন হয়েছে জানতে চাইলে কয়েকটি লঞ্চের সুপারভাইজাররা জানান, যাত্রীসংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম। পরবর্তীতে প্রতিদিন যাত্রী বরিশাল থেকে অর্ধেক সংখ্যক কমে আসছে। কিন্তু ঢাকা থেকে সেই সংখ্যক যাত্রী ঈদেও ছুটি কাটাতে বরিশালে আসছে না।

সুন্দরবন-১০ লঞ্চের সুপারভাইজার মো. মুশফিকুর রহমান বলেন,বরিশাল থেকে শুক্রবার রাতে সুন্দরবন-১০ লঞ্চ ছেড়ে যায়। শনিবার সকালে ঢাকার সদরঘাটে পৌঁছে। এরপর বিক্রীত টিকিট হিসাব করে দেখা যায় যাত্রী ছিল ৩৪৭ জন। এ ছাড়া এক-তৃতীয়াংশ কেবিন খালি ছিল। সব মিলিয়ে বলা যায় স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অর্ধেক যাত্রী ছিল।

বরিশাল-ঢাকা রুটে চলাচলকারী এমভি মানামী লঞ্চের ব্যবস্থাপক রিজওয়ান হোসেন বলেন, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় শতকরা ৩০ শতাংশ যাত্রী কম উঠেছে। সাধারণত ডেকের যাত্রীরা বিকেল থেকেই লঞ্চে আসতে শুরু করে। কিন্তু শনিবার বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেও বরিশালগামী ঈদেও ঘরমুখো যাত্রী হচ্ছিল না। এটি প্রতিদিনের মতো প্রায় একই অবস্থা ছিল। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় যাত্রী কম যাচ্ছে।

বরিশাল-ঢাকা রুটে চলাচলকারী কুয়াকাটা লঞ্চ কম্পানির মালিক আবুল কালাম খান বলেন, ভাড়া কমিয়ে রাখা হয় ২৫০ টাকা। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী যাত্রী ছিল না। লঞ্চটিতে কেবিনে সিট সংখ্যা ২০৭টি। এর মধ্যে ১৪৩ সিট ফাঁকা ছিল। ডেকে যাত্রীও ছিল ধারণক্ষমতার অর্ধেকেরও কম। একটি লঞ্চ ঢাকা থেকে বরিশাল আসতে জ্বালানি বাবদ খরচ হয় প্রায় আড়াই লাখ টাকা। এ ছাড়া স্টাফদের বেতনও রয়েছে।

আবুল কালাম খান আরো বলেন, পদ্মা সেতু চালুর কারণে নৌপথে যাত্রীর আগ্রহ কমছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আলোচনার জন্য ২ জুলাই কেন্দ্রীয় লঞ্চ মালিক সমিতির নেতাদের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে নৌপথে যাত্রী ফেরাতে করণীয় ঠিক করা হয়েছে। কিন্তু কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি সুন্দরবন লঞ্চের মালিক সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে যাত্রী একটু কমেছে। ব্যাবসায়িক কারণে ভাড়া একটু কমানো হয়েছে। তবে এটা কোনো সমস্যা না। আগামী দুই-এক মাস যাত্রী একটু কম হবে। পরে আবারও স্বাভাবিক হয় যাবে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, লঞ্চে পরিবার-পরিজন ও মালপত্র নিয়ে শান্তিতে যাওয়া যায়। বাসে সেটা সম্ভব না।

আরও পড়ুন

মারধরের অভিযোগে চবি ছাত্রদলের তিন নেতাকে শোকজ

আঞ্চলিক জোট গঠন ও সমতার ভিত্তিতে পররাষ্ট্রনীতি ঘোষণা করেন জিয়া

গলায় পা দিয়ে চেপে ধরে মেজর সিনহার মৃত্যু নিশ্চিত করে ওসি প্রদীপ

দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতেও জোর করে ফ্লোর পার্টি করছে ইডেনের আবাসিক কিছু শিক্ষার্থী

নাশকতার মামলায় আ’লীগ নেতাদের সাথে জামায়াত নেতার নাম, প্রতিবাদে থানাগেটে বিক্ষোভ

টেকনাফে গহীন পাহাড়ে যৌথ সাঁড়াশি অভিযান,সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আস্তানা ধ্বংস

সার ডিলার লাইসেন্স বহাল রাখার দাবিতে দোয়ারাবাজারে মানববন্ধন ও স্বারকলিপি প্রদান

দোয়ারাবাজারে মাদক, অনলাইন জুয়া ও কিশোর গ্যাং বিরোধী সচেতনতামূলক সভা

ভূমিকম্পে ইডেন কলেজের হাসনা বেগম হলে দেয়াল খসে পড়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক, গভীর রাতে হলের নিচে শিক্ষার্থীদের অবস্থান

টেকনাফে আদালত ভবন স্থাপনের ঘোষণা দিলেন বিএনপি’র প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরী

যথাসময়ে নির্বাচন হতে হবে,নয়তো দেশে সংকট তৈরি হবে-আমীরে জামায়াত

ডুলাহাজারা ডিগ্রি কলেজে পরিবহনের নাম ভাঙ্গিয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায়