সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বরইউড়ি দারুসুন্নাত বহুমুখী আলিম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ হোসেন কবিরের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানান অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার সকালে মাদ্রাসায় হল রুমে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষদের সমন্বয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।সভায় অভিযোগ তদন্তের জন্য কলাউড়া ফাজিল মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুস ছাত্তারকে প্রধান করে ৭সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্যান্যরা হলেন ডা:হারুনুর রশিদ,আজহারুল ইসলাম,মাওলানা অহিদুল ইসলাম,রেজাউল ইসলাম শিক্ষার্থী হারুন অর রশিদ, মানিক মিয়া প্রমুখ।
অভিযোগ সুত্রে যানাযায়,মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জানান,বিভিন্ন শ্রেণিতে অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায়,ফরম ফিলাপ,রেজিষ্ট্রেশন ফিস,পরীক্ষার ফিস, প্রবেশ পত্রসহ বিভিন্ন নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ,প্রিন্সিপাল নিজের পছন্দের ছাত্রদের ছাত্র সংসদের দায়িত্ব দিতেন।যারা বিরোধিতা করতেন তাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি,নির্যাতন ও বহিষ্কার করার হুমকি দিতেন।
মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষক মরহুম রমিজ উদ্দিনের ছেলে তাজুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবা রমিজ উদ্দিনকে জোরপূর্বক অবসর পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে আমার বাবার অবসরজনিত টাকা উত্তোলন করতে গেলে প্রিন্সিপাল সৈয়দ হোসেন টাকা উত্তোলনের বিভিন্ন খরচ দেখিয়ে ১লাখ ৫০ হাজার টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেছেন তবে উপকার করেন নি।
নরসিংপুর ইউনিয়নের বিছঙ্গের গাও গ্রামের আব্দুল গফুর অভিযোগ করে বলেন নবম শ্রেণির সনদ দেওয়ার কথা বলে ২০ হাজার টাকা উৎকোচ গ্রহণ করে জাল সনদ প্রদান করেছেন।
পালইছড়া গ্রামের আজহারুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমার স্ত্রীকে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে কয়েক দফায় ৫লাখ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করলেও চাকুরী দেননি।টাকা ফেরত পেতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।
ঝুমগাও গ্রামের সেলিম আহমেদ অভিযোগ করেন,প্রিন্সিপাল সৈয়দ হোসেন কবির শিক্ষকতার পাশাপাশি বিভিন্ন দেশে মানুষ পাচারের ব্যবসা করেন।তিনি আমাকে ইউরোপে পটানোর কথা বলে ভুয়া ভিসা ভুয়া টিকেট দিয়ে আমাকে এয়ারপোর্টে পাঠিয়ে উনি ওনার মোবাইল বন্ধ করে দেয় ,পরে থানার সহযোগিতায় আমি কিছু টাকা ওনার থেকে আদায় করতে পারি ,এখনো আমি উনার কাছে ৭৫ হাজার টাকা পাওনা আছি, লোকটা আপাদমস্ত একটা দুর্নীতিবাজ দেশে এত সংস্কার হচ্ছে মাদ্রাসা কেন সংস্কারের বাইরে আশা রাখি এলাকার সংস্কারপন্থী সকল বিবেকবান মানুষ প্রতিষ্ঠানের দিকে সুনজর দিবেন।
এলাকাবাসী জানান, মাদ্রাসার পুকুর প্রতি বছর ৭হাজার টাকা লিজ দিয়ে টাকা উত্তোলন করে নিজ পকেটে রেখেছেন সৈয়দ হোসেন। দীর্ঘ বছর পুকুর লীজের টাকা মাদ্রাসা তহবিলে জমা না দেওয়ার অভিযোগ। শিক্ষকদের বেসরকারি বেতন ভাতা না দিয়ে একাই ভোগ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে বড়ইউড়ি আলিম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ হোসেন কবির বলেন,আমি স্বরযন্ত্রের স্বীকার, তদন্ত কমিটির তদন্তে সত্যতা পাওয়া যাবে।
তদন্ত কমিটির প্রধান মাওলানা আব্দুস ছাত্তার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে খুব শ্রীগ্রই তদন্ত প্রতিবেদন এলাকাবাসীর সামনে উপস্থাপন করা হবে ইনশাআল্লাহ।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান,বিস্তারিত আমার জানা নেই তবে তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।