এম এ মোতালিব ভুঁইয়া :
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নে খাসিয়ামারা নদী পারাপারে বাঁশের সাঁকোই ভরসা। বছরের ৮ মাস থাকে প্রায় ৩০০ ফুট দীর্ঘ বাঁশের সেতু।
এই নদীর পশ্চিমপাড়ে মাঠগাঁও এবং পূর্বপাড়ে ভাংগাপাড়া গ্রাম। দুই গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে খাসিয়ামারা নদী। খাসিয়ামারা নদীর উভয় পাড়ের কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ এই বাঁশের সেতু দিয়েই প্রতিদিন সুনামগঞ্জ জেলা শহর সহ ছাতক-দোয়ারাবাজার উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় যাতায়াত করতে হয়।ওই নদীতে সেতু নির্মাণের দাবি এলাকাবসীর দীর্ঘ দিনের। কিন্ত যুগের পর যুগ পেরিয়ে গেলেও আজোবধি প্রত্যাশা পূরণ হয়নি এখানকার বাসিন্দাদের। ফলে খাসিয়ামারা নদীর উপর এলাকার বাসিন্দারা বাঁশের সেতুতেই যোগাযোগ রক্ষা করছেন।দূরত্ব কমাতে কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই বাঁশের সেতু ব্যবহার করে আসছেন। বর্ষায় ওই নদী থাকে যৌবন দীপ্ত। হাত নৌকায় তখন পারাপারের একমাত্র ভরসা।অধিকন্তু সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই পাহাড়ী ঢলে নদীতে থাকে প্রচন্ড শ্রেুাত। দুই পাড়ের মানুষ সহ তখন স্কুল-মাদরাসা গামী শিক্ষার্থীরা তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাত নৌকায় নদী পার হতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই নদীর উপর সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সাড়া দিচ্ছেন না।
স্থানীয় বাসিন্দা মকসুদুল আলম মানিক বলেন শুষ্ক মওসুমে ৮ মাস এলাকার রোগী, চাকুরীজীবী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে আসা-যাওয়া করতে সুবিধা হয় এই পথ দিয়ে। কিন্তু বর্ষায় নৌকায় পারাপার হতে হয় ।শুকনা মওসুম শুরু হলে নদীর স্রোত কমে আসে, তখন বাঁশের সেতু কাজে লাগে। এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ, শত শত মোটর সাইকেল এবং সিএনজি চলাচল করে থাকে।
লিয়াকতগঞ্জ স্কুল এন্ড কলেজের একাধিক শিক্ষার্থীরা জানান, খাসিয়ামারা নদী পারাপারে আমাদের ভোগান্তির অন্ত নেই। প্রতিদিন এই বাঁশের সেতু দিয়েই যাতায়াত করি। কিন্তু বর্ষায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হতে হয়।খাসিয়ামারা নদীর উপর একটি সেতু হলে এলাকার মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন হতো। আমাদেরও ভোগান্তিও কমে আসতো। ওই নদীর উপর সেতু এখন সময়ের দাবি।
বাঁশের সেতুর টোল আদায়কারী শাহ আলম জানান, খাসিয়ামারা নদীতে বছরে ৪ মাস নৌকা দিয়ে মানুষ পারাপার হয়।পানি কমে গেলে বাঁশের মাচান দিয়ে সেতু তৈরি করি। এই সেতু দিয়ে প্রায় ৮ মাস মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে। এতে আমাদের খরচ বাদে সামান্য লাভ হয়। আমরাও এই নদীর উপর সেতু চাই।
লক্ষীপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমীরুল হক বলেন, খাসিয়ামারা নদীর উপর সেতু নির্মাণ না হওয়ায় দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়ন, নরসিংপুর, বাংলাবাজার, বোগলা, সুরমা ইউনিয়ন ইউনিয়নের মানুষজন এই বাঁশের সেতু দিয়েই চলাচল করে থাকেন।মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে প্রতি বছর এই সেতু নির্মাণ করেন এলাকাবাসী। শুনেছি একবার নদীতে সেতু নির্মাণের জন্য সার্ভে করা হয়েছে। কিন্তু এরপর আর কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০