মোস্তাকিম হোসেন,হিলি স্থলবন্দর সংবাদদাতা:
দেড় বছরের বেশি সময় ধরে কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর আবার সচল হচ্ছে দিনাজপুরের হাকিমপুরে উপজেলার হিলি রেলস্টেশন। স্থানীয়দের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার থেকে এ স্টেশনে আবার টিকিট বিক্রি ও মালামাল বুকিং শুরু হয়েছে। তবে এখনো এ স্টেশনের প্লাটফর্ম ঘেঁষা ১ নং লাইনের বদলে ২ নং লাইনে ট্রেনের যাত্রাবিরতি দেয়া হচ্ছে। এতে ওঠানামায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের।
হিলি রেলস্টেশন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, হিলি রেলস্টেশনে চিলাহাটি থেকে রাজশাহী রুটে চলাচলকারী বরেন্দ্র এক্সপ্রেস, তিতুমীর এক্সপ্রেস এবং খুলনা মেইল ট্রেনের যাত্রাবিরতি দেয়া হয়। এছাড়া এ স্টেশন দিয়ে রূপসা ও দ্রুতযান এক্সপ্রেসসহ বেশ কয়েকটি ট্রেন চলাচল করে। জনবল সংকটের কথা জানিয়ে গত বছরের ৮ জানুয়ারি মাস্টার ও পয়েন্টসম্যানকে অন্যত্র বদলি করে এ স্টেশনকে ‘ক্লোজিং ডাউন’ করে রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল কর্তৃপক্ষ।
সেই থেকে ‘ক্লোজিং ডাউন’ অবস্থায় চলছিল এ রেল স্টেশনের কার্যক্রম। বিরামপুর ও পাঁচবিবি রেলস্টেশন থেকে হিলি রেলস্টেশনের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এ কারণে চালকের ইচ্ছা অনুযায়ী হিলিতে যাত্রাবিরতি দেয়া হতো। আবার কোনো কোনো সময় না দাঁড়িয়েই চলে যেত। ‘ক্লোজিং ডাউন’-এর কারণে এ স্টেশনে টিকিট বিক্রি ও মালামাল বুকিংসহ সব কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এতে এ স্টেশন দিয়ে হিলি থেকে রাজশাহী ও খুলনাগামী শিক্ষার্থী, স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী এবং ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট হয়ে ভারতে যাতায়াতকারীদেরসহ ট্রেনযাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হতো।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয়রা পুনরায় হিলি রেলস্টেশন সচল করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। তাদের আন্দোলনের মুখে সম্প্রতি হিলি রেলস্টেশনে বুকিং সহকারী নিয়োগ দেয়া হয়। এতে গত শুক্রবার থেকে এ স্টেশনে আবার টিকিট বিক্রি শুরু হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা আমজাদ হোসেন ও রফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন হিলি রেলস্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় কোনো টিকিট বিক্রি হতো না। এ কারণে আমরা ট্রেনে সিট পেতাম না। চালকের ইচ্ছেমতো ট্রেন থামানো হতো। আবার ২ নং লাইনে দাঁড়ানোর কারণে ট্রেনে ওঠানামা করতে ভোগান্তি পোহাতে হতো। নতুন করে এ স্টেশন সচলের উদ্যোগ নেয়ায় আমাদের দুর্ভোগ কমবে।
হিলি হাকিমপুর পৌরসভার মেয়র জামিল হোসেন চলন্ত জানান, হিলি রেলস্টেশনটি সচলের দাবিতে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করে আসছিল। গত ৬ অক্টোবর প্রায় সাড়ে তিন হাজার এলাকাবাসীর স্বাক্ষরিত একটি আবেদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঠনো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে রেল কর্তৃপক্ষ হিলি রেলস্টেশনে নতুন করে লোকবল নিয়োগ দেয়া শুরু করেছে। শুক্রবার থেকে যথারীতি টিকিট বিক্রি ও মালামাল বুকিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
হাকিমপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ নিউজ ভিশন ৭১ বিডিকে জানান, হিলি রেলস্টেশনটি সচল করা এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি। টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ায় এ দাবি কিছুটা পুরণ হলো। স্টেশনটি যেন পুরোপুরি সচল হয়, আমরা সেই চেষ্টা করছি।